ই-মেইলের বিষয়ে সচেতন থাকুন
বাংলাদেশের অনেকের দেশে-বিদেশে চাকরি বা ভর্তির আবেদন বাতিল হওয়ার অন্যতম কারণ তাঁদের ই-মেইল ঠিকানা। ই-মেইল লেখার অনেক পেশাদারি আদবকায়দা মেনে চলার সঙ্গে একটি পেশাদার ই-মেইল ঠিকানা থাকাও জরুরি। আমি একজনকে চিনি, যাঁর ই-মেইল ঠিকানা boybutinnocent@sdjmn.com আর কুল বয় টাইপের ঠিকানা তো আছেই।
তবে এ রকম না হলে ও অনেকে অবচেতনভাবেই একটি মারাত্মক ভুল করে থাকেন, ই-মেইলে ব্যক্তিগত তথ্য, অনেক সময় জেলার নাম, দেশের নাম, বিসিএস ব্যাচ, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ইত্যাদি যোগ করে দিয়ে। যেমন karim1989@gmail.com. এই ই-মেইল ঠিকানা আপাতত ঠিক থাকলেও ভালো কোনো কোম্পানি আপনাকে চাকরির জন্য ডাকবে না। কারণ, আপনি ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তার প্রতি সংবেদনশীল নন। যেমন আপনার জন্মসাল ১৯৮৯ সহজেই বোঝা যাচ্ছে। তাহলে আপনি কোম্পানির তথ্যের বিষয়েও একই রকম উদাসীন থাকবেন, যা competitor দের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে।
আবার ধরুন, কারও ই-মেইল ঠিকানা karimbcsadmin@outlook.com এই ঠিকানাও চূড়ান্ত অপেশাদার। কারণ, আপনি বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি করেন, এই সূত্র ধরে আপনার সব বের করে ফেলা সম্ভব। সরকারি চাকরিজীবীরা, বিশেষ করে ক্যাডার সার্ভিসের, ই-মেইলে আবার তাঁদের সার্ভিস আইডি যোগ করে দেন। সেটাও অপেশাদার।
আবার ধরুন, আপনার ই-মেইল আইডি karimpabna@gmail.com. এই ই-মেইল ঠিকানা দিয়ে অনেকেই আপনাকে না দেখে অনুমান হওয়ার সুযোগ পাবে। আবার যদি এমন হয় যে প্রাপকের পাবনা জেলা নিয়ে কোনো reservation আছে, তাহলে আপনি সঠিকভাবে মূল্যায়িত না হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। আবার উল্টো ঘটনাও হতে পারে ক্ষেত্রবিশেষে। আবার অনেকে নিজের ডাকনাম বা বাচ্চার দেওয়া নাম ই-মেইলে ব্যবহার করেন। এই ধরনের ঠিকানা থেকেও কেউ নামের কূলকিনারা বের করতে পারেন না।
ভালো কোম্পানি যোগ্য লোক বাছাইয়ের জন্য Applicant Tracking System (ATS) নামে একটি সিস্টেম ব্যবহার করে। সিস্টেমটি এ ধরনের অনেক সূক্ষ্ম বিষয় ধরার জন্য ওস্তাদ। অন্যথায় হাজার হাজার আবেদনকারী থেকে শর্টলিস্ট করা দুরূহ কাজ হতো। এরূপ সিস্টেম চেক পার হয়ে হায়ারিং ম্যানেজার পর্যন্ত আপনার সিভি পৌঁছাতে হলে এ ধরনের অনেক আপাত-ছোটখাটো বিষয়ে নজর দিতে হবে। তা না হলে ATS-ই অটোমেটেড ই-মেইল পাঠিয়ে দেবে donotreply@omuk.com থেকে। খুব সুন্দরভাবে তেল মেরে বলবে, you have some great qualification...bla bla...However we are unable to offer a position right now.
লেখক: বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, সিডনিতে পিএইচডি অধ্যয়নরত।
Source: স্বত্ব © ২০২০ প্রথম আলো