শিক্ষা ও তার গুরুত্ব নিয়ে কুরআন কি বলে?

Author Topic: শিক্ষা ও তার গুরুত্ব নিয়ে কুরআন কি বলে?  (Read 1009 times)

Offline Osiur3387

  • Newbie
  • *
  • Posts: 2
  • Test
    • View Profile
ইসলামে শিক্ষা ও তার গুরুত্ব নিয়ে কুরআন কি বলে?
আল-কোরআন এসেছে বিশ্ব মানবতাকে হিদায়াতের সঠিক পথের সন্ধান দেয়ার জন্য। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘রমজান মাস, যাতে কোরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদের্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে।’ (সূরা আল-বাকারা-১৮৫) হিদায়াতের এই কিতাব আল-কোরআন শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমানের উপরে ফরজ করা হয়েছে।
মানুষকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন। এসকল নবী-রাসূলদেরকে গাইডবুক হিসেবে সহীফা ও কিতাব দিয়েছেন। এসব কিতাব সমূহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ কিতাব হচ্ছে আল-কোরআন।
কুরআনে কারীম আল্লাহর কালাম, আসমানী ওহী, নূরুম মুবীন এবং হেদায়েতের সুস্পষ্ট কিতাব।  কুরআনের প্রতি ঈমান, এর তিলাওয়াত এবং একে জীবনের কর্মনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হচ্ছে নাজাতের একমাত্র পথ এবং খালিক ও মালিকের সন্তুষ্টি অর্জনের একমাত্র উপায়।  কুরাআনের সাথে ঈমানী সম্পর্কই বান্দার সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য।
কোরআন অধ্যয়নকারীকে আল্লাহ স্বরণ করেন
এই পৃথিবীতে সর্বোত্তম কাজ হচ্ছে আল-কোরআন অধ্যয়ন করা এবং সে অনুযায়ী জীবনে আমল করা। যারা দুনিয়ায় আল-কোরআন অধ্যয়ন করবে, জেনে-বুঝে আমল করবে আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তাদেরকে স্বরণ করবেন এবং এই কোরআনের সংস্পর্শে থাকার কারণে তাদের মাধ্যমে পৃথিবীতে আলোকবর্তিকা ছড়িয়ে দিবেন।
আজ আমি শিক্ষা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যাপারে কুরআনের নির্দেশনা ও মূলনীতি নিয়ে বিস-ারিত আলোচনা করতে চাই না। আজ শুধু এ বিষয়ের কিছু আয়াত পেশ করার মাধ্যমে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। যদি তারা এ নিয়ে চিন্তা করেন তাহলে অনুধাবন করবেন যে, এতে যেমন ধর্মীয় জ্ঞানের বুনিয়াদী নীতিমালা রয়েছে তেমনি রয়েছে জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্পর্কেও মৌলিক নীতিমালা।

 ১. পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। যিনি মানুষকে জমাট রক্ত দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। পড়, আর তোমার প্রতিপালক মহামহিমান্বিত। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে, যা সে জানত না। নিশ্চয়ই মানুষ সীমালঙ্ঘন করে। এই কারণে যে, সে নিজেকে অমুখাপেক্ষী মনে করে।-সূরা আলাক : ১-৮

২. দয়াময় আল্লাহ, তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন। তিনিই সৃষ্টি করেছেন মানুষ, তিনিই তাকে ভাব প্রকাশ করতে শিখিয়েছেন।-সূরা রহমান : ১-৪

৩. ইহা একটি কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি নাযিল করেছি। যেন আপনি বের করে আনেন সকল মানুষকে তাদের রবের আদেশে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে। অর্থাৎ পরাক্রান-, প্রশংসাভাজন আল্লাহ তাআলার পথের দিকে।-সূরা ইবরাহীম : ১

৪. আপনি বলুন, যারা জ্ঞানী আর যারা অজ্ঞ তারা কি সমান হতে পারে? সেই লোকেরাই নসীহত গ্রহণ করে যারা বুদ্ধিমান।-সূরা যুমার : ৯

৫. তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে আল্লাহ তাদের মর্যাদা সমুন্নত করেছেন। তোমরা যা কর আল্লাহ সে ব্যাপারে পূর্ণ অবহিত আছেন।-সূরা মুজাদালাহ : ১১

৬. আর তোমাদেরকে সামান্যই জ্ঞান দেওয়া হয়েছে।-সূরা বনী ইসরাইল : ৮৫

৭. আমি লুকমানকে জ্ঞান দান করেছি এবং বলেছি আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর। যে কৃতজ্ঞ হল সে তো নিজের কল্যাণের জন্যই তা করল। আর যে অকৃতজ্ঞ হয় আল্লাহ (তার থেকে) মুখাপেক্ষীহীন, প্রশংসার্হ।-সূরা লুকমান : ১২

৮. আর আপনি বলুন, হে আমার রব! আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দিন।-সূরা ত্বা-হা : ১১৪

৯. তারা শুধু পার্থিব জীবনের বাহ্যিক দিকটুকুই জানে। আর আখেরাত সম্পর্কে তারা বে-খবর।-সূরা রূম : ৭
 
১০. আর যে বিষয়ে আপনার যথাযথ জ্ঞান নেই তার পিছে পড়বেন না। কান, চোখ, অন-র এগুলোর প্রত্যেকটি সম্পর্কে কৈফিয়ত চাওয়া হবে।-সূরা বনী ইসরাইল : ৩৬

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, যেই শিক্ষা মানুষের কল্যাণে উপকারে আসে না, তা শিক্ষা নয়। যেই শিক্ষা দুনিয়ার শান্তি ও পরকালে মুক্তির সহায়ক, তাই প্রকৃত শিক্ষা। সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন এবং আদর্শ গুণাবলিসম্পন্ন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তৈরি ইসলামি শিক্ষার উদ্দেশ্য।




« Last Edit: August 01, 2022, 02:46:18 PM by Osiur3387 »

Offline Osiur3387

  • Newbie
  • *
  • Posts: 2
  • Test
    • View Profile
ইসলামে শিক্ষা ও তার গুরুত্ব নিয়ে কুরআন কি বলে?
আল-কোরআন এসেছে বিশ্ব মানবতাকে হিদায়াতের সঠিক পথের সন্ধান দেয়ার জন্য। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘রমজান মাস, যাতে কোরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদের্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে।’ (সূরা আল-বাকারা-১৮৫) হিদায়াতের এই কিতাব আল-কোরআন শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমানের উপরে ফরজ করা হয়েছে।
মানুষকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন। এসকল নবী-রাসূলদেরকে গাইডবুক হিসেবে সহীফা ও কিতাব দিয়েছেন। এসব কিতাব সমূহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ কিতাব হচ্ছে আল-কোরআন।
কুরআনে কারীম আল্লাহর কালাম, আসমানী ওহী, নূরুম এবং হেদায়েতের সুস্পষ্ট কিতাব।  কুরআনের প্রতি ঈমান, এর তিলাওয়াত এবং একে জীবনের কর্মনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হচ্ছে নাজাতের একমাত্র পথ এবং খালিক ও মালিকের সন্তুষ্টি অর্জনের একমাত্র উপায়।  কুরাআনের সাথে ঈমানী সম্পর্কই বান্দার সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য।
কোরআন অধ্যয়নকারীকে আল্লাহ স্বরণ করেন
এই পৃথিবীতে সর্বোত্তম কাজ হচ্ছে আল-কোরআন অধ্যয়ন করা এবং সে অনুযায়ী জীবনে আমল করা। যারা দুনিয়ায় আল-কোরআন অধ্যয়ন করবে, জেনে-বুঝে আমল করবে আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তাদেরকে স্বরণ করবেন এবং এই কোরআনের সংস্পর্শে থাকার কারণে তাদের মাধ্যমে পৃথিবীতে আলোকবর্তিকা ছড়িয়ে দিবেন।
আজ আমি শিক্ষা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যাপারে কুরআনের নির্দেশনা ও মূলনীতি নিয়ে বিস-ারিত আলোচনা করতে চাই না। আজ শুধু এ বিষয়ের কিছু আয়াত পেশ করার মাধ্যমে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। যদি তারা এ নিয়ে চিন্তা করেন তাহলে অনুধাবন করবেন যে, এতে যেমন ধর্মীয় জ্ঞানের বুনিয়াদী নীতিমালা রয়েছে তেমনি রয়েছে জাগতিক জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্পর্কেও মৌলিক নীতিমালা।

 ১. পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। যিনি মানুষকে জমাট রক্ত দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। পড়, আর তোমার প্রতিপালক মহামহিমান্বিত। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে, যা সে জানত না। নিশ্চয়ই মানুষ সীমালঙ্ঘন করে। এই কারণে যে, সে নিজেকে অমুখাপেক্ষী মনে করে।-সূরা আলাক : ১-৮

২. দয়াময় আল্লাহ, তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন। তিনিই সৃষ্টি করেছেন মানুষ, তিনিই তাকে ভাব প্রকাশ করতে শিখিয়েছেন।-সূরা রহমান : ১-৪

৩. ইহা একটি কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি নাযিল করেছি। যেন আপনি বের করে আনেন সকল মানুষকে তাদের রবের আদেশে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে। অর্থাৎ পরাক্রান-, প্রশংসাভাজন আল্লাহ তাআলার পথের দিকে।-সূরা ইবরাহীম : ১

৪. আপনি বলুন, যারা জ্ঞানী আর যারা অজ্ঞ তারা কি সমান হতে পারে? সেই লোকেরাই নসীহত গ্রহণ করে যারা বুদ্ধিমান।-সূরা যুমার : ৯

৫. তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে আল্লাহ তাদের মর্যাদা সমুন্নত করেছেন। তোমরা যা কর আল্লাহ সে ব্যাপারে পূর্ণ অবহিত আছেন।-সূরা মুজাদালাহ : ১১

৬. আর তোমাদেরকে সামান্যই জ্ঞান দেওয়া হয়েছে।-সূরা বনী ইসরাইল : ৮৫

৭. আমি লুকমানকে জ্ঞান দান করেছি এবং বলেছি আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর। যে কৃতজ্ঞ হল সে তো নিজের কল্যাণের জন্যই তা করল। আর যে অকৃতজ্ঞ হয় আল্লাহ (তার থেকে) মুখাপেক্ষীহীন, প্রশংসার্হ।-সূরা লুকমান : ১২

৮. আর আপনি বলুন, হে আমার রব! আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দিন।-সূরা ত্বা-হা : ১১৪

৯. তারা শুধু পার্থিব জীবনের বাহ্যিক দিকটুকুই জানে। আর আখেরাত সম্পর্কে তারা বে-খবর।-সূরা রূম : ৭
 
১০. আর যে বিষয়ে আপনার যথাযথ জ্ঞান নেই তার পিছে পড়বেন না। কান, চোখ, অন-র এগুলোর প্রত্যেকটি সম্পর্কে কৈফিয়ত চাওয়া হবে।-সূরা বনী ইসরাইল : ৩৬

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, যেই শিক্ষা মানুষের কল্যাণে উপকারে আসে না, তা শিক্ষা নয়। যেই শিক্ষা দুনিয়ার শান্তি ও পরকালে মুক্তির সহায়ক, তাই প্রকৃত শিক্ষা। সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন এবং আদর্শ গুণাবলিসম্পন্ন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তৈরি ইসলামি শিক্ষার উদ্দেশ্য।