নফল রোজার অনেক বড় ফজিলত ও ছাওয়াব রয়েছে

Author Topic: নফল রোজার অনেক বড় ফজিলত ও ছাওয়াব রয়েছে  (Read 515 times)

Offline Khan Ehsanul Hoque

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 549
  • Test
    • View Profile
নফল রোজার অনেক বড় ফজিলত ও ছাওয়াব রয়েছে

নফল রোজা

আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য, ফরজ-ওয়াজিব নয়, এমন রোজা পালনকেই নফল রোজা বলে। নফল রোজার অনেক বড় ফজিলত ও ছাওয়াব রয়েছে। আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে কুদসীতে এসেছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,,‘আদম সন্তানের প্রতিটি আমলের ছাওয়াবই দ্বিগুণ করে দেয়া হয়। পুণ্যকর্মের ছাওয়াব দশগুণ থেকে সাতশ’গুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,‘তবে রোজা ব্যতীত; কারণ রোজা আমার আর আমিই এর প্রতিদান দিই।’(বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)

যেসব দিনের রোজা রাখা সুন্নত

১- শাওয়াল মাসের ছয় রোজা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় সাল্লাম বলেছেন,‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল, অতঃপর এর পেছনে শাওয়াল মাসে ছয়দিন রোজা রাখল সে যেন সারা বছর রোজা রাখল।’(বর্ণনায় মুসলিম )শাওয়ালের ছয় রোজা একসাথেও রাখা যায় আবার ভিন্ন ভিন্ন ভাবেও রাখা যায়।
২ - যিলহজ্বের শুরুতে নয়দিন রোজা রাখা
হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘এই দশদিনের তুলনায় আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় আমলের অন্যকোনো দিবস নেই। অর্থাৎ যিলহজ্বের দশদিন। সাহাবায়ে কেরাম প্রশ্ন করে বললেন, ‘এমনকি আল্লাহর পথে জিহাদও না? হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন,‘এমনকি আল্লাহর পথে জিহাদও না, কিন্তু যদি কোনো ব্যক্তি তার জান-মাল নিয়ে বের হয়ে যায় আর কোনো কিছু নিয়ে ফিরে না আসে, তবে তার কথা ভিন্ন।’(বর্ণনায় বুখারী) তবে এ দশদিনের মধ্যে, যে ব্যক্তি হজ্বরত অবস্থায় নয়, তার ক্ষেত্রে আরাফা দিবসের রোজা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আরাফা দিবস সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘আরাফা দিবসের রোজা তার একবছর পূর্বের ও পরের গুনাহের কাফফারা বলে আল্লাহর কাছে আশা করি।’
(বর্ণনায় মুসলিম)
৩- আশুরা দিবসের রোজা, এর আগের দিনের রোজাসহ
আশুরা

মহররম মাসের দশ তারিখকেই আশুরা বলা হয়

হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘আশুরা দিবসের রোজা এর পূর্বের এক বছরের গুনাহের কাফফারা হবে বলে আল্লাহর কাছে আশা করি।’(বর্ণনায় মুসলিম)

আশুরার রোজা কেন রাখা হবে এ ব্যাপারে

প্রতি চান্দ্র মাসের তেরো, চৌদ্দ ও পনের তারিখকে আইয়ামুল বিয বলে। এ তিনদিনের রাতগুলো চাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত থাকে বলে এ দিনগুলোকে আইয়ামুল বিয বা শুভ্রদিন বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনায় এলেন। তিনি দেখতে পেলেন, ইহুদিরা আশুরা দিবসে রোজা রাখছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন,‘এটা কী?’ তারা বলল, এটি একটি ভালো দিন। এ দিন আল্লাহ তাআলা বনী ইসরাইলকে তাদের শত্রুদের থেকে মুক্তি দিয়েছেন, অতঃপর মূসা আলাইহিস সালাম এ দিন রোজা রেখেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,‘মূসা আ. এর ব্যাপারে তোমাদের থেকে আমার অধিকার বেশি, অতঃপর তিনি এ দিবসের রোজা রাখলেন এবং অন্যদেরকেও এ দিবসের রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন।’(বর্ণনায় মুসলিম)

৪- প্রতিমাসের আইয়ামুল বিয
আইয়ামুল বিয

প্রতি চান্দ্র মাসের তেরো, চৌদ্দ ও পনের তারিখকে আইয়ামুল বিয বলে। এ তিনদিনের রাতগুলো চাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত থাকে বলে এ দিনগুলোকে আইয়ামুল বিয বা শুভ্রদিন বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

আবদুল মালিক ইবনে মিনহাল তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে আইয়ামুল বিয এর রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন এবং বলতেন,‘এটাই হলো বছরব্যাপী রোজা রাখা।’
(বর্ণনায় বুখারী)

৫- প্রতি সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা
আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,সোমবার ও বৃহস্পতিবার আমল উপস্থাপন করা হয়, অতএব আমি পছন্দ করি যে, আমার আমল এ অবস্থায় উপস্থাপন করা হোক যে আমি রোজাদার।’(বর্ণনায় মুসলিম)

৬- একদিন পর পর রোজা রাখা
সর্বোত্তম নফল রোজা হলো দাউদ আলাইহিস সালামের রোজা। তিনি একদিন রোজা রাখতেন ও অপর দিন ভঙ্গ করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘নিশ্চয় আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় রোজা হলো দাউদ - এর রোজা। তিনি একদিন রোজা রাখতেন ও একদিন ভঙ্গ করতেন।’

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘নিশ্চয় আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় রোজা হলো দাউদ - এর রোজা। তিনি একদিন রোজা রাখাতেন ও একদিন ভঙ্গ করতেন।’(বর্ণনায় ইবনে হিব্বান)

৭ - মহররম মাসে রোজা
আবু হুরায়রা রাযি. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘রমজানের পর সর্বোত্তম রোজা হলো মহররম মাসের রোজা।’(বর্ণনায় তিরমিযী)

৮- শাবান মাসে রোজা
উসামা ইবনে যায়েদ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম,‘হে আল্লাহর রাসূল, আমি আপনাকে শাবানের মতো অন্যকোনো মাসে রোজা রাখতে দেখি না? তিনি বললেন, রজব ও রমজানের মাঝের এ মাসটি সম্পর্কে মানুষ গাফেল থাকে। আর এ মাসে রাব্বুল আলামীনের দরবারে আমল ওঠানো হয়। রোজা পালন অবস্থায় আমার আমল ওঠানো হোক এটা আমার পছন্দ।’(বর্ণনায় নাসায়ী)

নফল রোজার নিয়ত

রাতের বেলা থেকে নফল রোজার নিয়ত করা জরুরি নয়। বরং যদি দিনের বেলায় কোনোকিছু খাওয়ার আগে নফল রোজা রাখার ইচ্ছা হয়, তখন থেকেই ওইদিনের রোজা রাখা চলবে। আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন আমাকে বললেন, ‘হে আয়েশা, তোমাদের কাছে কি কোনো (খাবার) আছে? আয়েশা রাযি. বলেন, ‘আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, আমাদের কাছে কোনোকিছু নেই। তিনি বললেন,‘তাহলে আমি রোজা রাখলাম।’(বর্ণনায় মুসলিম)

চিকিৎসাবিজ্ঞানের আলোকে রোজা

চর্মরোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে রোজা উপকারী। এর কারণ রোজা রক্তের মাঝে পানির অংশ কমিয়ে দেয়, অতঃপর ত্বকের মধ্যেও এর পরিমাণ কমে যায় এবং ফলে সংক্রামক জার্ম ও রোগব্যাধি থেকে ত্বকের প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।

Source: https://www.al-feqh.com/bn/%E0%A6%A8%E0%A6%AB%E0%A6%B2-%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%9C%E0%A6%BE
Khan Ehsanul Hoque

Daffodil International University
01847334702
fd@daffodilvarsity.edu.bd
www.daffodilvarsity.edu.bd