ক্ষমা মুমিনের গুণ

Author Topic: ক্ষমা মুমিনের গুণ  (Read 482 times)

Offline Khan Ehsanul Hoque

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 549
  • Test
    • View Profile
ক্ষমা মুমিনের গুণ
« on: December 31, 2022, 10:01:11 PM »
ক্ষমা মুমিনের গুণ

আল্লাহর সৌন্দর্যময় সিফাতগুলোর মধ্যে একটি হলো ক্ষমা। সুন্দর-শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণ ও মানব কল্যাণে এর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আল্লাহ চান, মানুষ যেন তার গুণে গুণান্বিত হয়ে পরস্পরের মধ্যে শান্তি ও সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখে। যে মানুষের মধ্যে ক্ষমা ও সবর (ধৈর্য ধারণ) করার মহৎ গুণ থাকবে, সে অবশ্যই মানুষের পছন্দের ব্যক্তিতে পরিণত হবে। অন্যদিকে আল্লাহর বিশেষ রহমত তার ওপর বর্ষিত হবে। মানুষের অন্যায়কে ক্ষমা করে তার অসহনশীল আচরণ মেনে নেওয়া সবার পক্ষে সম্ভব নয়। আর এমন ব্যক্তির প্রতি সহনশীল আচরণ দেখাতে সবাই পারে না। এটা তাদের পক্ষেই সম্ভব, যারা আল্লাহর প্রিয় বান্দা। এ কারণেই যুগে যুগে এ মহৎ গুণটি আম্বিয়ায়ে কেরাম, সহাবায়ে আজমাইন ও আল্লাহর পছন্দের বান্দাদের জীবনাদর্শে পরিলক্ষিত হয়েছে। এ গুণটি আল্লাহর কাছে এতই পছন্দনীয় যে, তিনি পবিত্র আল-কুরআনে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই যে সবর (ধৈর্য ধারণ) করে ও ক্ষমা করে এটা অবশ্যই সাহসিকতার কাজ’ (সূরা আস শূরা, আয়াত : ৪৩)।

আল্লাহ পাক পরম ক্ষমাশীল। মানুষ যদি পাহাড়সম অন্যায় করে, অনুতপ্ত হয় আর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, তিনি সেই বান্দাকে ক্ষমা না করে পারেন না। মানুষের প্রতি তিনি এতটাই দয়াবান। তিনি ক্ষমা করতে পছন্দ করেন। মানুষও অন্যান্য সৃষ্টিকুলের প্রতি ক্ষমা ও উদারতা প্রদর্শন করুক এটাও তার পছন্দ।

এ জন্য তিনি তার প্রিয় হাবিব হজরত মুহাম্মদ (সা.)কে এ বিশেষ গুণটি অর্জন করার জোর তাগিদ দিয়েছেন, তিনি পবিত্র আল-কুরআনে বলেছেন, ‘আর আপনি ক্ষমা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সৎ কাজের নির্দেশ দিন। আর মূর্খ ও জাহেলদের থেকে দূরে থাকুন’ (সূরা আরাফ, আয়াত : ১৯৯)।

মহানবি হজরত মুহাম্মাদ (সা.) ছিলেন ক্ষমার এক অনুপম দৃষ্টান্ত। যে মক্কাবাসী তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলতে চাইল, সেই তিনিই যখন বিজয়ী বেশে মক্কায় প্রবেশ করলেন শত্রুদের হাতের মুঠোয় পেয়ে প্রতিশোধ নিলেন না, বরং ক্ষমা করে দিলেন। সেই ক্ষমা ও সহনশীলতার বাস্তব উদাহরণ দিতে গিয়ে রাসূলের বিখ্যাত সাহাবি হজরত আনাস (রা.) বলেন, ‘আমি নবিজির সঙ্গে হাঁটছিলাম। তখন তাঁর পরনে ছিল একটি ইয়েমেনি চাদর। যা মোটা কাপড় বিশিষ্ট।

এক বেদুঈন তাঁর কাছে এলো। আর সেই চাদর ধরে জোরে টান মারল। আমি দেখলাম, সেই মোটা কাপড়ের ঘষায় নবিজির কাঁধে দাগ বসে গেল। আর লোকটি তাঁকে কর্কশ স্বরে বলল, আল্লাহর যে মাল তোমার কাছে আছে তা থেকে আমাকে কিছু দিতে বলো। নবিজি লোকটির দিকে ফিরে তাকালেন আর মুচকি হাসলেন। এরপর লোকটিকে কিছু দেওয়ার জন্য আদেশ দিলেন’ (বোখারি, হাদিস : ৩১৪৯)।

মুমিন ও মুসলমান মাত্রই কিছু সামাজিক দায়িত্ব রয়েছে। তারা কেবল নিজেরাই জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচবে না, বরং তাদের আহলে-আওলাদকে ও পরিবার-পরিজনকেও জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাবে। এটাই একজন মুমিন-মুসলমানের ইমানি দায়িত্ব। পৃথিবীর সব মানুষ সমান নয়। মেজাজ-মর্জিতে যেমন পার্থক্য রয়েছে, তেমনি পার্থক্য রয়েছে চিন্তা-চেতনায়। কিছু মানুষের আদর্শের বিপরীতে যখন কথা বলা হয়, তখন যারা তাদের কাছে দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে যায়, তাদের ওপর চড়াও হয়। অবশ্য এক সময় এসব মানুষগুলোই নিজের ভুল বুঝতে পারে।

তাই দ্বীনের দায়ীরা যদি দাওয়াতের কাজ করতে গিয়ে তাদের আচণের জবাবে কঠোর ও কর্কশ হয়, তাহলে মানুষ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তাদের ধারে কাছেও মানুষ ভিড়বে না। তাই চরম ধৈর্য ও ক্ষমার মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে। তাহলেই এ পথহারা মানুষগুলো সঠিক পথে আসবে। তারা নিজেরাও বুঝতে পারবে, দ্বীনের দাওয়াত কোনো দুনিয়াবি স্বার্থে নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভই এর একমাত্র লক্ষ্য।

Source: https://www.jugantor.com/todays-paper/features/islam-and-life/629812/%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%AE%E0%A6%BE-%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%A3
Khan Ehsanul Hoque

Daffodil International University
01847334702
fd@daffodilvarsity.edu.bd
www.daffodilvarsity.edu.bd