স্বাধীনতা ও বিজয়ে রমজান

Author Topic: স্বাধীনতা ও বিজয়ে রমজান  (Read 433 times)

Offline Khan Ehsanul Hoque

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 549
  • Test
    • View Profile
স্বাধীনতা ও বিজয়ে রমজান

সাম্য, শান্তি ও মানবতার ধর্ম ইসলাম। রমজান মাসে মানবতার মুক্তির দূত সর্বশেষ নবী ও রাসুল হজরত মুহাম্মাদ (সা.)–এর প্রতি মহাগ্রন্থ আল–কোরআন নাজিল হয়েছে রমজান মাসে। নাজিল হয় মহাগ্রন্থ পবিত্র কোরআন। এ মাসেই হজরত মুহাম্মদ (সা.) মানবতার মুক্তি ও স্বাধীনতা ঘোষণা করলেন। সে স্বাধীনতা আত্মার মুক্তির স্বাধীনতা। মানুষের গোলামি বা দাসত্ব থেকে মুক্তির স্বাধীনতা। জালিম শাহি ও জুলুমের জিঞ্জির থেকে মুক্তির স্বাধীনতা। তাগুতি শাসন ও শোষণ থেকে মুক্তির স্বাধীনতা। সকল শয়তানি শক্তির বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে এক আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্য করার স্বাধীনতা। ইসলাম সব মানুষকে ব্যক্তিস্বাধীনতা, পারিবারিক বন্ধন ও সামাজিক শৃঙ্খলা এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা লাভের অধিকার দিয়েছে। ইসলাম সব মানুষকে ব্যক্তিস্বাধীনতা, পারিবারিক বন্ধন ও সামাজিক শৃঙ্খলা এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তালাভের অধিকার দিয়েছে। রাসুল (সা.) বিদায় হজের ভাষণে বলেছেন, ‘হজের বা আরাফাতের দিবস যেমন সম্মানিত, মক্কা নগরী যেমন পবিত্র, কাবাঘর যেমন মর্যাদাপূর্ণ; সব মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্মান তেমনি সম্মানিত ও সুরক্ষিত।’ (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)

ইসলাম ব্যক্তির স্বাধীনতার পাশাপাশি মানবাধিকার সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেয়। ব্যক্তির স্বাধীনতার সীমানা অন্যের অধিকারের প্রাচীর দ্বারা সীমাবদ্ধ হয়। রমজান মাস যেমন স্বাধীনতার মাস, তেমনি বিজয়েরও মাস। রমজানেই ইসলামের সর্বশ্রেষ্ঠ জয় মক্কা বিজয় হয়েছিল অষ্টম হিজরিতে। ইসলামের প্রথম জয় হিসেবে বদর বিজয় হয়েছিল দ্বিতীয় হিজরির রমজান মাসের ১৭ তারিখে। শুধু জাগতিক স্বাধীনতা ও বিজয় নয়, বরং আত্মিক মুক্তি ও বিজয় সম্ভব এই মাসেই। যার জন্য প্রয়োজন যথাযথ উপায়ে সিয়াম সাধনা। তাকওয়া, সংযম ও আত্মনিয়ন্ত্রণ স্বাধীনতা ও বিজয়ের পূর্বশর্ত। কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য—এই ষড়রিপুর প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারলেই প্রকৃত মুক্তি বা আত্মার স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়।

কোরআন নাজিলের মাস রমজান। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘রমজান মাস, এ মাসে মানুষের দিশারি, সৎ পথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্য নিরূপণকারী হিসেবে কোরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে, তারা যেন এই মাস রোজা পালন করে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)। সংযম আত্মনিয়ন্ত্রণ তথা তাকওয়ার মাস রমজান। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যে রূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের প্রতিও; যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩)

মনোজগতে মুক্তি ও আত্মনিয়ন্ত্রণ, ধৈর্য, সংযম এবং নেতৃত্বের প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্য ও আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসাই মানুষকে সব ক্ষেত্রে সফলতা এনে দেয়। পবিত্র কোরআনে এ বিষয়টি বোঝাতে স্বৈরাচারী জালুতের বিপুল সৈন্যদের সঙ্গে হজরত তালুতের ছোট বাহিনীর সফলতা ও বিজয়ের কাহিনি উল্লেখ করা হয়েছে।

‘অতঃপর তালুত যখন সৈন্যবাহিনীসহ অভিযানে বের হলো, সে তখন বলল, “আল্লাহ একটি নদী দ্বারা তোমাদের পরীক্ষা করবেন। যে কেউ এটা হতে পান করবে, সে আমার দলভুক্ত নয়, আর যে এর স্বাদ গ্রহণ করবে না, সে আমার দলভুক্ত; অবশ্য যে তার হাত দিয়ে এক আঁজলা পানি পান করবে সে-ও (আমার দলভুক্ত)।” অতঃপর অল্পসংখ্যক ব্যতীত তারা এটা থেকে পান করল। সে (তালুত) এবং তার সঙ্গী ইমানদারেরা যখন এটা অতিক্রম করল, তখন তারা বলল, “জালুত ও তার সৈন্যবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার মতো শক্তি আজ আমাদের নেই।

কিন্তু যাদের দৃঢ়প্রত্যয় ছিল, আল্লাহর সঙ্গে তাদের সাক্ষাৎ ঘটবে,” তারা বলল, “আল্লাহর হুকুমে কত ক্ষুদ্র দল কত বৃহৎ দলকে পরাভূত করেছে। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।” তারা যখন যুদ্ধার্থে জালুত ও তার সৈন্যবাহিনীর সম্মুখীন হলো, তখন তারা বলল, “হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের ধৈর্য দান করুন, আমাদের দৃঢ়পদ ও অবিচল রাখুন এবং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য করুন।”

সুতরাং তারা আল্লাহর হুকুমে তাদের পরাভূত করল, দাউদ (আ.) জালুতকে সংহার করলেন, আল্লাহ তাঁকে রাজত্ব ও হিকমত দান করলেন এবং যা তিনি ইচ্ছা করলেন, তা তাঁকে শিক্ষা দিলেন। আল্লাহ যদি মানবজাতির এক দলকে অন্য দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তবে পৃথিবী বিপর্যস্ত হয়ে যেত। কিন্তু আল্লাহ জগৎসমূহের প্রতি অনুগ্রহশীল। এসবই আল্লাহর আয়াত, আমি তোমার নিকট এটা যথাযথভাবে উপস্থাপন করছি; আর নিশ্চয়ই তুমি রাসুলদের অন্তর্ভুক্ত।” (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৪৯-২৫৩)

Source: https://www.prothomalo.com/opinion/column/i4pf8r04di
Khan Ehsanul Hoque

Daffodil International University
01847334702
fd@daffodilvarsity.edu.bd
www.daffodilvarsity.edu.bd