ডায়াবেটিক ফুট ইনফেশন যে লক্ষণগুলো দেখে বুঝবেন

Author Topic: ডায়াবেটিক ফুট ইনফেশন যে লক্ষণগুলো দেখে বুঝবেন  (Read 1130 times)

Offline Md. Nurul Islam

  • Newbie
  • *
  • Posts: 35
  • Test
    • View Profile
ডায়াবেটিক ফুট ইনফেশন যে লক্ষণগুলো দেখে বুঝবেন
ডায়াবেটিসজনিত পায়ের সংক্রমণ (ডায়াবেটিক ফুট ইনফেকশন) একটি জটিল সমস্যা। ডায়াবেটিসের অনেক রোগীই এ সমস্যায় ভোগেন। এমনকি এই সমস্যা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ডায়াবেটিসের রোগীদের পায়ে সংবেদনশীলতা ও রক্ত চলাচলের সমস্যা থাকে। যে কারণে সৃষ্ট ক্ষত দ্রুত চিকিৎসা না করলে জটিল হয়ে পড়তে পারে। তাই এ সমন্ধে ডায়াবেটিসের রোগীর জানা থাকা জরুরি।
কখন সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি

বেশ কয়েকটি অবস্থায় ডায়াবেটিসের রোগীর পায়ে সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হয়। এর মধ্যে আছে—

রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে।

যথাযথভাবে পায়ের যত্ন না নিলে।

মাপমতো জুতা না পরলে।

পায়ের চামড়া বেশি শুষ্ক থাকলে।
কীভাবে হয় সংক্রমণ

ডায়েবেটিসের রোগীদের পায়ের বোধ কম থাকায় সহজে তা আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এ ছাড়া আঘাতের পরে ব্যথা অনুভব না করায় ক্ষত জটিল আকার ধারণ করে। রক্তের উচ্চ শর্করা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমিয়ে দেয়। একই সঙ্গে তা বিভিন্ন জীবাণুর বংশবিস্তারে সাহায্য করে।

সাধারণত স্ট্যাফ অরিয়াস নামক জীবাণু দিয়ে বেশির ভাগ সংক্রমণ হয়ে থাকে। তবে অনেক সময় একসঙ্গে কয়েকটি জীবাণু দিয়ে সংক্রমণ হতে পারে।

যেভাবে বুঝবেন

সংক্রমণ হলে সাধারণত পা ও পায়ের পাতা ফুলে যায়। পায়ের চামড়ার রং বদলে যায়। পা ও পায়ের পাতায় জ্বালাপোড়া ও শিরশিরে অনুভূতি হলে সতর্ক থাকুন। পায়ের বোধ কমে যাওয়া, পায়ের আঙুলে যন্ত্রণা ও আঙুলের ফাঁকে ফাটল, পায়ের নখের কোনা ভেতরের দিকে দেবে যাওয়া, পায়ের যেকোনো ক্ষত সারতে দেরি হওয়ার মতো ঘটনা ডায়াবেটিক রোগীর সঙ্গে ঘটলে বুঝতে হবে তিনি ডায়াবেটিক ফুট ইনফেশনে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই উপসর্গ ও লক্ষণগুলো খারাপ। এমনটা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডায়াবেটিক ফুট ইনফেকশনের কিছু পর্যায় বা গ্রেডিং আছে। সেটাও জেনে রাখুন

গ্রেড ০: পায়ে ব্যথা ও চামড়ার রং পরিবর্তন।

গ্রেড ১: পায়ের চামড়ায় ক্ষত তৈরি হওয়া।

গ্রেড ২: পায়ের মাংস, টেন্ডন ও লিগামেন্টে ক্ষত সৃষ্টি।

গ্রেড ৩: পায়ের হাড়ে ক্ষত তৈরি হওয়া।

গ্রেড ৪: পায়ের সামনের অংশে পচন ধরে যাওয়া।

গ্রেড ৫: পুরো পায়ের পাতায় পচন ধরে যাওয়া।

চিকিৎসা কী

ডায়াবেটিক ফুট ইনফেকশন বারবার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যাঁদের বারবার ইনফেকশন হয়, তাঁদের ১০-৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে আঙুল, পায়ের কিছু অংশ অথবা পুরো পা কেটে ফেলতে হয়। তাই পায়ের যেকোনো সমস্যায় দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত। সংক্রমণ সেরে উঠতে দুই সপ্তাহ থেকে তিন মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তাই ধৈর্য ধরে চিকিৎসা নিতে হবে। অনেক সময় পায়ের রক্তনালি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে এনজিওপ্লাস্টির মাধ্যমে রক্তনালির চিকিৎসা করা লাগতে পারে।

প্রতিরোধের উপায় হিসেবে কয়েকটি বিষয় মেনে চলুন।

১. রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

২. প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটাচলা করুন।

৩. পায়ের যত্ন নিন। এর মধ্যে আছে—পা পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখা, নিয়মিত নখ কাটা, বাইরে বেরুলে মোজা পরা, সঠিক মাপের জুতা পরা, পায়ে তেল বা ভ্যাসলিন দিয়ে ম্যাসাজ করা ও কুসুম গরম পানিতে পায়ে সেঁক নেওয়া।