বড় জেঠির মুখে শুনেছি, আমার বয়স যখন দেড়বছর তখন সেজু চাচি আমাকে দত্তক নিয়ে ছিলেন। সেজু চাচির নাম রাহেলা বেগম। মেজাজি হলেও সামাজিক ভাবে সচেতন এবং স্বাধীনচেতা মহিলা ছিলেন তিনি। চাচা মো. শাহজাহান মাষ্টারের কোন সন্তান- সন্তুতি ছিল না। চাচা ও চাচির ঘর বাচাঁতে আমার মা, নানা (আদু বেপারী) ও দাদী (কাজুলী বেগমের) অনুরোধে আমাকে দত্তক দিতে রাজি হয়েছিলেন ।
সেই দেড়বছর অব্দি থেকে সম্ভবত পাচঁ বছর পর্যন্ত আমি আমার চাচিকেই মা বলে জানতাম। পাচঁ বছর বয়সে আমি আমার মায়ের কাছে ফিরে আসি। তখন আমার বুঝ-জ্ঞান কিছুটা হয়ে ছিল। প্রায় সাড়ে তিন বছর তিনি আমাকে লালন-পালন করেছেন একান্ত স্নেহভরে মাতৃত্বের স্নেহ দিয়ে।
জীবনের এই নাদান সময়ে উনার মাতৃত্বে পরশ এখনও আমার গায়ে লেগে আছে। অভাবের সংসারে আমার বেড়ে উঠা। কিশোর বয়সের অনেক অভাব-আবদারই মা-বাবা পুরণ করতে পারে নাই, যা চাচি পুরন করেছেন। মেলা কিম্বা হাট-বাজারে বেহাতি খেতে অনেক সময় দুই/পাচঁ টাকার জন্য কান্না করেছি। চাচি নির্ধিদায় হাতে গুজে দিয়ে আবদার মিটিয়েছেন।
বড় হবার পর অহেতুক বিড়ম্বনায় আমি জেল-হাজতে গেলে- তিনি আমাকে তাগদ নিয়ে বেচেঁ থাকার উৎসাহ যোগিয়েছেন। অকারণের আকারে সময় অসময়ে টাকা দিয়ে সাহায্য করেছেন। জীবন চলার পথে আকাঁ-বাকাঁ পথ চিনতে সাহায্য করেছেন।
আজ ২৯শে ডিসেম্বর তিনি না ফেরার দেশে পারি জমিয়েছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার অসীম অজানা পথের- এই অনন্ত চলায় আল্লাহই একমাত্র ভরসা। প্রভু দয়াময় মহান আল্লাহ তা’লা যেন তার আত্মাকে কবুল করেন এই কামনা করি।।
মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, বাংলাটপনিউজ২৪.কম।