Health Tips > Women
গর্ভকালীন সমস্যা
Sultan Mahmud Sujon:
গর্ভবতী মায়ের খাবার
গর্ভবতী মায়ের খাবার
গর্ভাবস্থায় শিশুর বৃদ্ধি অনেকাংশে নির্ভর করে মায়ে ওপর৷ অর্থাত্ সুস্থ মা মানেই সুস্থ শিশু৷ শিশুর পরিপূর্ণ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকার খাদ্যের যোগান দিতে হয় মাকে৷ মা যে খাবার খাবেন শিশুও সেই খাবার খেয়ে পুষ্টি লাভ করে৷ এ কারণে স্বাভাবিক মহিলাদের তুলনায় একজন গর্ভবতী মায়ের খাবারের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি৷ সঠিক পরিমাণে খাবার গ্রহণ না করলে সন্তান ঠিকমত বৃদ্ধি পাবে না৷ ফলে সন্তান অপুষ্টি নিয়ে জণ্মাবে৷ এ ধরনের শিশুর মৃতু্যর ঝুঁকি অনেক বেশি৷ গর্ভবতী অবস্থায় কী খাবেন এবং কোন খাবার গর্ভের সন্তান এবং মায়ের জন্য প্রয়োজন তা নিচে আলোচনা করা হলো-
প্রোটিন বা আমিষ
প্রোটিন শরীরের গঠন ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে৷ গর্ভাবস্থায় মায়ের প্রোটিনে চাহিদা স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে বেশি হয়৷ প্রোটিন মাছ, মাংস, ডিম, দুগ্ধজাত দ্রব্য, মটরশুটি, ডাল, বাদাম, ইত্যাদি বেশি পরিমানে খাবেন৷
ক্যালসিয়াম
গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি৷ গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে শিশুর হাড় ও দঁাতের গঠনের জন্য অনেক ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়৷ দুধ, দুগ্ধজাত দ্রব্য, মাছ, বাদাম, কমলালেবু, শুকনো ফল, সবুজ পাতাসহ শাক-সবজি, ফুলকপি ও তৈলবীজ খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম আছে৷
আয়রন
আমাদের দেশের বেশির ভাগ গর্ভবতী মহিলাই রক্তশূন্যতায় ভুগে থাকেন৷ গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে রক্তের পরিমাণ দ্বিগুণ বেড়ে যায়৷ এই সময় যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন গ্রহণ করা না যায় তাহলে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে৷ তাই রক্ত স্বল্পতা প্রতিরোধ করার জন্য মাকে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে৷ গরু কিংবা খাসির কলিজা, বাচ্চা মুরগি, ডিম, মাছ, কলা, কচুশাক, পালং শাক এ সবের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে৷
ফলিক এ্যাসিড
কোষ বিভাজনে ফলিক এ্যাসিডের বড় ধরণের ভূমিকা থাকার কারণে গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে ফলিক এ্যাসিড দরকার৷ ফলিক এ্যাসিড শিশুর মেরুদন্ড গঠনে সহায়তা করে৷ কোন কারণে ফলিক এ্যাসিডের অভাব হলে শিশুর মেরুদণ্ডে জণ্মগত ত্রুটি থাকতে পারে৷ সবুজ সবজিতে পাওয়া যায় ফলিক এসিড৷
ভিটামিন-এ
ভিটামিন এ-এর অভাবে বাচ্চাদের রাত কানা রোগ হয়৷ এ ছাড়া হাড় ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গসমূহের গঠনের জন্য ভিটামিন এ প্রয়োজন৷ এ কারনে গর্ভবতী মায়েদের ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত, যেমন - মাংস, ডিম, তৈলাক্ত মাছ, দুগ্ধজাত দ্রব্য, তেল ও বাদাম৷
ভিটামিন-বি
এ সময় অনেক গর্ভবর্তী মহিলাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা যায়৷ এই ভিটামিন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং শwক্ত বাড়ায়৷ যেমন - কলিজা, মাংস, মুরগির মাংস, যকৃত, মাছ, দুধ, দই, ডিম, ডাল, আটা, গম, ভুট্টা, কলা, পাকা বেল, পেয়ারা, পাকা েঁপপে, জাম, কঁাঠাল, লিচু, বাদাম, সবুজশাক সবজি, ঢেঁকি ছাটা চাল, সয়াবিন, সবুজ ফুলকপি, সিম, বঁাধাকপি ইত্যদি৷
ভিটামিন-সি
ভিটামিন সি শিশুর হাড় তৈরিতে সাহায্য করে৷ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন - আমলকী, পেয়ারা, কমলা লেবু, বাতাবি লেবু, সবুজ শাক-সবজি, টমেটো এবং আলু খেতে হবে৷ মনে রাখবেন বেশিক্ষণ রান্না করলে ভিটামিন নষ্ট হয়ে যায়৷
ভিটামিন-ই
ভিটামিন ই রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে৷ আপেল, বাদাম, গাজর, বঁাধাকপি, ডিম, অলিভ তেল ও ও সূর্যমুখি বীজে ভিটামিন ই পাওয়া যায়৷
জিন্ক
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস জিংক এবং ফলিক এ্যাসিডের ভূমিকা অপরিসীম৷ জিংক গর্ভপাত প্রতিরোধ করে এবং শিশুর ওজন বাড়ায়৷ এই জিন্ক পাওয়া যাবে প্রানিজ প্রোটিনে৷ তাছাড়াও চিনে বাদাম, মিষ্টি কুমড়ার বীজ, গম এসবে প্রচুর পরিমাণ জিন্ক থাকে যা আপনার গর্ভাবস্থায় চাহিদা পূরণে সক্ষম৷
ভিটামিন ট্যাবলেট
গর্ভাবস্থায় শরীরে অতিরিক্ত ভিটামিনের প্রয়োজন হয়৷ এই অতিরিক্ত ভিটামিনের চাহিদা খাবারের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব না হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ট্যাবলেট গ্রহণ করতে হবে৷
গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় খাদ্যের পরিমাণ
খাদ্যের নাম খাদ্যের পরিমাণ
চাল/আটা ৪২৫ গ্রাম
ডাল ৬০ গ্রাম
মাছ/মাংস/ডিম ৬০ গ্রাম
আলু/মিষ্টি আলু ৬০ গ্রাম
শাক ১৮০ গ্রাম
সবজি ঌ০ গ্রাম
ফল ১ টা
তেল/ঘি ৬০ মিলিলিটার
ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷
তথ্যসূত্র - নারী কিশোর থেকে বৃদ্ধা, ডা. সুমন চৌধুরী
১০ ই জানুয়ারি ২০০৫, দৈনিক জনকণ্ঠ
পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্
Sultan Mahmud Sujon:
গর্ভকালীন সময় কতদিন পর পর ডাক্তারের কাছে যাবেন
গর্ভকালীন সময় কতদিন পর পর ডাক্তারের কাছে যাবেন
গর্ভধারণের প্রথম ৭ মাসে প্রত্যেক মাসে ১ বার, পরবর্তী ২ মাসে ১৫ দিন পর পর এবং শেষের মাসে সপ্তাহে ১ বার করে প্রসবের পূর্ব পর্যন্ত একজন গর্ভবতী মহিলার ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত৷ কিন্তু আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এতবার ডাক্তারের কাছে যাওয়া সম্ভব নয়৷ একারণে অন্তত পক্ষে ৪ বার একজন গর্ভবতী মহিলাকে সেবা কেন্দ্রে অথবা ডাক্তারের কাছে আসাতে হবে৷
নিম্নলিখিত ৪ বার স্ব্যাস্থ্য কেন্দ্রে আসতে হবে (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুযায়ী )
১ম ভিজিট - প্রথম ১৬ সপ্তাহ (৪ মাসের) মধ্যে
২য় ভিজিট - ২৪-২৮ সপ্তাহ (৬-৭ মাসের) মধ্যে
৩য় ভিজিট- ১ম মাস পর (৮ মাসের)মধ্যে
৪র্থ ভিজিট- ৩৬ সপ্তাহ (ঌ মাসের) দিকে
গর্ভাবস্থায় ইনজেকশন নেওয়া
গর্ভধারণের পর ৫ থেকে ৮ মাসের মধ্যে এক মাসের ব্যবধানে দুটি টি. টি ইনজেকশন নিতে হয়৷
ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷
তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,
৬. গর্ভকালীন বিপদজনক লক্ষণ
গর্ভকালীন বিপদজনক লক্ষণ
* চোখের পাতা, জিভ, দাঁতের মাড়ি, হাতের তালু ফ্যাকাশে হয়ে গেলে৷ সব সময় ক্লান্তি অনুভব করলে এবং ঘনঘন শ্বাস নিলে বা শ্বাসকষ্ট হলে
* সন্তান প্রসবের আগে ব্যথাহীন বা ব্যথাসহ যে কোনও অতিরিক্ত রক্তস্রাব শুরু হলে
* উচ্চ রক্তচাপ (১৪০/ঌ০ মিলিমিটার পারদ চাপের চেয়ে বেশি হলে)
* অতিরিক্ত মাথাব্যথা হলে, ঝাপসা দেখলে এবং চোখে অস্পষ্ট দেখলে
* গোড়ালি, হাত, মুখ ফুলে গেলে
* শরীরে খিঁচুনি হলে অথবা অজ্ঞান হয়ে গেলে৷
* জন্ডিসে চোখ হলদেটে হয়ে গেলে এবং প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ বা লালচে হয়ে গেলে
* মাত্রাতিরক্তি বমি করলে
* প্রচন্ড জ্বর (স্থায়ী জ্বর, ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে)-৩ দিনের বেশি থাকলে
* তলপেটে প্রচন্ড ব্যথা করলে
* যোনিপথ দিয়ে কোন তরল পদার্থ বের হলে
* নির্দিষ্ট তারিখের ৩ সপ্তাহ বা তারও আগে পানি ভেঙে গেলে (গর্ভকালের ৩৭ সপ্তাহের আগে)
* প্রলম্বিত প্রসব (প্রসবকাল ১২ ঘন্টার বেশী),
* বাধাপ্রাপ্ত প্রসব হলে
* বাচ্চার অস্বাভাবিক অবস্থান থাকলে
* প্রসবের সময় গর্ভস্থ বাচ্চার নাড়ী কিংবা হাত-পা বেরিয়ে যাওয়া
* যৌনিপথের ঘন সবুজ স্রাব৷
* প্রসবের অনেকক্ষণ পরও গর্ভফুল না পড়া
* প্রসবোত্তর অত্যাধিক রক্তস্রাব
প্রসবকালে
* যৌনিপথ বা জরায়ুর মুখ ব্যাপকভাবে ছিঁড়ে যাওয়া
* জরায়ু ছিঁড়ে যাওয়া (ক্রমাগত প্রচণ্ড ব্যথা এবং অতিরিক্ত রক্তস্রাব)
পরামর্শ
যদি কোনও মহিলার গর্ভকালীন অবস্থায় উপযু©ক্ত লক্ষণসমূহ দেখা দেয় তবে তাকে দ্রুত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে৷ একারণে সকল গর্ভবতী মায়ের জানা উচিত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বা হাসপাতাল কোথায় এবং কীভাবে যেতে হবে৷
ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷
তথ্যসূত্র -
নারী, ডা. সুমন চৌধুরী,
ড্রাগ ডিরেক্টরি
Sultan Mahmud Sujon:
গর্ভাবস্থায় মায়ের সাধারণ সমস্যা কিভাবে নিরাময় করা যায়
গর্ভাবস্থায় মায়ের সাধারণ সমস্যা কিভাবে নিরাময় করা যায়
গর্ভাবস্থায় মায়ের ছোটখাটো অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ অনেক সময় গর্ভবতী মা সেগুলো কাউকে বলেন না, আবার কখনও কখনও পরিবারের অন্য সদস্যরা তাতে গুরুত্ব দেন না৷ অথচ এসব সমস্যার সময়মতো উপশম না হলে গর্ভবতীর নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ তাই গর্ভবর্তী মায়ের যেকোন স্বাস্থ্য সমস্যায় তাকে চিকিত্সকের কাছে অথবা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত৷
গর্ভবর্তী মায়ের কিছু সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যার প্রতিকার ও পরামর্শঃ
বমি, বমির ভাব বা খাওয়ার অরুচি
বমি সাধারণত সকালের দিকেই বেশি হয় বেল সকালে কম খেয়ে দুপুর বা বিকালে একটু বেশি খেতে পারেন৷ তিন মাসের পর থেকে আস্তে আস্তে বমি কমে যায়৷ এ উপসর্গ সাধারণত মায়ের শরীরের খুব বেশি ক্ষতি করেনা৷ তবে খাওয়া দাওয়া কমে যাওয়ার জন্য দুর্বলতা দেখা দিতে পারে৷
বমি বা বমি ভাব প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন
১৷ গর্ভবর্তী মাকে আশ্বস্ত করতে হবে
২৷ ঘুম থেকে উঠে শুকনা খাবার খেতে হবে যেমন- মুড়ি, বিস্কুট
৩৷ খাবারের অন্তত ঃ ১/২ ঘণ্টা পর পানি খেতে হবে
৪৷ বারেবারে অল্প করে খেতে হবে৷
৫৷ তাড়াতাড়ি ঢকঢক করে দুধ বা পানি পান করবেন না
৬৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
রক্তস্বল্পতা
অনেক সময় গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়৷
১৷ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রথম মাস থেকে ফলিক এসিড এবং ৩ মাসের পর থেকে পরিমাণমতো আয়রন ও ক্যালসিয়াম খেতে হবে৷
২৷ আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- কচুর শাক, কলার মোচা, তেঁতুল, তরমুজ, কলিজা, ডিম ইত্যদি খেতে হবে৷ ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন- আমলকি, লেবু, কাঁচামরিচ, পেয়ারা, আঁনারস এবং কঁাচা ফলমূল খেতে হবে৷
৩৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
* গলা ও বুক জ্বালা
গলা ও বুক জ্বালা গর্ভাবস্থায় মায়েদের একটা সাধারণ সমস্যা৷ অল্প ভোজন, দুশ্চিন্তা, অধিক পরিশ্রম এবং যথেষ্ট পরিমাণে পানি না করার জন্য এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে৷
* প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন
সহজপাচ্য খাবার বারে বারে অল্প অল্প খেতে হবে
১৷ খাওয়ার পর পরেই শোয়া চলবে না, শোয়ার প্রয়োজন বেশি হলে মাথার নিচে দুটি বালিশ দিয়ে অর্ধ শয়ন অবস্থায় শুতে হবে
২৷ মসলাযুক্ত ভাজা খাবার খাওয়া যাবে না
৩৷ প্রচুর পরিমাণে ঠাণ্ডা পানি পান করতে হবে
৪৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
কোষ্ঠকাঠিন্য
গর্ভাবস্থায় অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন৷ অনুপযুক্ত খাবর গ্রহণ, প্রয়োজনমতো পানি পান না করা ও অনিয়মিত পরিশ্রমের ফলে এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন
১৷ প্রচুর পwরমাণে পানি পান করা৷
২৷ প্রচুর পরিমাণ শাক-সবজি ও টাটকা ফল খেতে হবে৷ যেমন - কলা, আম, গাছপাকা পেয়ারা, খেজুর, পেঁপে, আপেল ইত্যাদি৷ এছাড়াও দুধ-ভাত, কলা কিংবা আটার রুটি ও দুধ খাওয়া যেতে পারে৷
৩৷ নিয়মিত ঘরের কাজ ও হঁাটাচলা করতে হবে
৪৷ প্রয়োজনে চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন৷
অনিদ্রা
গর্ভাবস্থার শেষের দুই-তিন মাস অনিদ্রার ভাব হয়৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন
১৷ বিকেলে হঁাটা, শোবার আগে গরম দুধ খাওয়া বা বই পড়া ইত্যাদিতে উপকার হতে পারে৷
২৷ ঘুমের অসুবিধা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন৷
হাত-পায়ে টান ধরা
বিশেষ করে রাতে অনেক সময় পায়ে টান ধরে৷ হালকা ম্যাসেজ বা গরম সেক দিলে উপকার পাওয়া যায়৷ এ অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ নিন৷
পিঠে ব্যথা
গর্ভের প্রথমাবস্থা থেকে এ কষ্ট অনেক সময় দেখা দেয় যা শেষের দিকে খুব বেড়ে যেতে পারে৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন
১৷ শক্ত বিছানা ঘুমালে উপকার পেতে পারেন
২৷ শিরদঁাড়ায় ম্যাসেজ করতে পারেন
৩৷ হঁাটাচলার সময় কোমরে বেল্ট ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়৷
৪৷ সামনে ঝুঁকে কোনও কাজ করা যাবে না৷
৫৷ ভারী জিনিস উঠানো যাবে না৷
৬৷ ব্যথার ওষুধ বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া খাওয়া উচিত নয়৷
৭৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
পায়ের শিরা ফুলে যাওয়া
অনেক সময় গভবর্তী মায়ের পায়ের শিরা ফুলে যেতে পারে৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন
১৷ দীর্ঘ সময় দঁাড়ানো যাবে না
২৷ পা তুলে বসতে হবে
৩৷ প্রয়োজনে ক্রেপ ব্যান্ডেজ বাঁধতে হবে৷
৪৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
পা ফোলা
গর্ভাবস্থায় পা ফুলতে পারে, বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস সময়ে পা ফুলে গেছে কিনা দেখার জন্য উভয় গোড়ালির চারপাশে বুড়ো আঙুল দিয়ে চাপ দিন৷ যে পয়েন্টে চাপ দেওয়া হয় সেখানে যদি একটি ছোট গর্ত হয়ে যায় এবং শীঘ্র তা মিলিয়ে যায় তবে বুঝতে হবে পায়ে পানি নেমেছে৷ শরীরে লবণ বৃদ্ধির ফলে পায়ের গোড়ালি ফুলে যায় ও পানি জমে৷ শরীরে পানি জমলে বা শরীর ফুলে গেলে, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীর রক্তচাপ, প্রস্রাব পরীক্ষা করা ও ওজন দেখা উচিত৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন
পা উঁচুতে রেখে বিশ্রাম নেওয়া
খাবারের সাথে বাড়তি লবন না খাওয়া
প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
বুক ধড়ফড় ও নিঃশ্বাসের কষ্ট
গর্ভাবস্থায় হার্টের কাজ বেড়ে যায়৷ কারণ মা ও শিশু দুইয়ের শরীরের রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হয়৷ অনেক সময় মায়ের রক্তশুন্যতা দেখা দেয়৷ এসব কারণে বুক ধড়ফড় করে৷ জরায়ুর বৃদ্ধির ফলে ফুসফুসের ওপর চাপ পড়ে এবং তার স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়৷ তাই নিঃশ্বাসের নিতে কষ্ট হয়৷
মূত্র নালীর সংক্রমণ
গর্ভবস্থায় প্রসাবে জ্বালা পোড়া হতে পারে৷ তাই
১৷ প্রচুর তরল পানীয় খেতে হবে
২৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
জ্বর
গর্ভাবস্থায় খুব জ্বর হলে মা ও বাচ্চার উভয়ের জন্যে খুব বিপজ্জনক হতে পারে৷ এরূপ হলে হাসপাতালে বা ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত৷
অর্শ
কোষ্ঠকাঠিন্য ও অর্শ যদি একই সঙ্গে থাকে তবে তা গর্ভাবস্থায় বেড়ে যায়৷ সুতরাং পায়খানা পরিষ্কার হওয়া দরকার৷ এ অবস্থায় দেরী না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
মাথাব্যথা
অতিরিক্ত পরিশ্রম, ক্ষুদা এবং গরম লাগলে মাথা ব্যথা হতে পারে৷ একারণে এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত৷
ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷
তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,
নারী , ডা. সুমন চৌধুরী :
৮. প্রসবপূর্ব রক্তপাত
প্রসবপূর্ব রক্তপাত
যে কোন ধরনের জননেন্দ্রিয়ের রক্তপাত যাহা গভধারনের ২৮ সপ্তাহ পর থেকে শুরু হয় কিন্তু বাচ্চা প্রসবের পূর্বে হয়ে থাকে৷
কারণসমূহ
* সময়ের আগে গর্ভফুল বিচ্ছিন্ন হওয়া
* গর্ভফুর যথাস্থানে না থাকা একলামসিয়া
* জরায়ু ছিড়ে যাওয়া
* রক্ত জমাট বঁাধার সমস্যা
* অধিক বাচ্চা ধারণ অধিক বয়সে বাâ€â€া ধারণ
* মায়ের অপুষ্টিজনিত কারণ
* আঘাত জনিত কারণ৷
লক্ষণসমূহ
* হঠাত্ করে জননেন্দ্রিয় থেকে রক্তপাত শুরু হওয়া
* ব্যাথা থাকে না (প্রসব বেদনা থাকতে পারে৷
* রক্তক্ষরণের কারণে রোগীকে সাদা/ ফ্যাকাসে দেখাতে পারে৷
* রোগী শক্ এ চলে যেতে পারে৷
করণীয়
যতদ্রুত সম্ভব নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে৷
দাই দ্বারা জননেন্দ্রিয় হাত দিয়ে পরীক্ষা করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে৷
প্রতিরোধ
* ২ বা ৩ এর অধিক বাচ্চা না নেওয়া
* অধিক বয়সে বাচ্চা না নেওয়া
* গর্ভকালীন নিয়মিত চেক আপে থাকা
* পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা
* অতিরিক্ত ভারী কাজ না করা৷
ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷
তথ্যসূত্র :
Aids to Principles of Obstetrics and GynaecologyDr. C M Enayet (Pintu)
৯. গর্ভবতী মায়ের আলট্রাসনোগ্রাফি
গর্ভবতী মায়ের আলট্রাসনোগ্রাফি
গর্ভকালীন আলট্রাসনোগ্রাফির ব্যবহার অনেক বছর ধরে চলে আসছে৷ গর্ভবতীর জন্য আলট্রাসনোগ্রাফি একটি অতিপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা এবং গর্ভকালীন যে কোন সময়ে এ পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে৷ গবেষণায় দেখা গেছে, আলট্রাসনোগ্রাফি গর্ভকালীন সময়ে নিরাপদ৷
স্বাভাবিক গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাফির প্রয়োজনীয়তা :
গর্ভাবস্থায় কখন আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে হবে, এ ব্যাপারে রোগীর ডাক্তার বা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের মতামতই গুরুত্বপূর্ণ৷
প্রধানত তিনটি পর্যায়ে গর্ভবতীর আলট্রাসনোগ্রাফি করা উচিত-
প্রথম পর্যায় : মাসিক বন্ধ হওয়ার আট সপ্তাহের মধ্যে৷ যদিও মাসিক বন্ধ হওয়ার পঁাচ-ছয় সপ্তাহের মধ্যে আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে গর্ভধারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়৷ এ পর্যায়ে আলট্রাসনোগ্রাফি করার কারণগুলো হচ্ছে-
* গর্ভধারণ হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া
* গর্ভধারণের নিশ্চিত সময় বের করা
* গর্ভধারণ স্বাভাবিক অর্থাত্ জরায়ুর মধ্যে না অস্বাভাবিক অর্থাত্ জরায়ুর বাইতে তা জানা
* গর্ভস্থ সন্তান একটি, যমজ বা ততধিক কি না তা জানা
* জরায়ুর ভ্রূণের এক ধরনের টিউমার অর্থাত্ মোলার প্রেগনেন্সি কি না তা নির্ধারণ
* গর্ভধারণকালে উপসর্গগুলোর মতো তলপেটের কিছু টিউমার এবং হরমোন নিঃসৃতকারী কিছু ডিম্বাশয়ের টিউমার নিরূপণের জন্য৷
* জরায়ুর এক ধরনের টিউমার যা স্বাভাবিক গর্ভধারণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে৷ যেমন - মায়োমা বা ফাইব্রয়েড আছে কি না তা নির্ণয় করা৷
দ্বিতীয় পর্যায় :
গর্ভধারণের ১৮-২২ সপ্তাহের মধ্যে -
*
গর্ভধারণের সঠিক সময় নির্ধারণ
*
গর্ভস্থ সন্তান একটি, যমজ বা ততধিক কিনা তা নির্ধারণ৷
*
গর্ভস্থ সন্তানের কোনও জণ্মগত অস্বাভাবিকতা আছে কিনা তা নির্ণয় করা৷
*
গর্ভফুলের সঠিক অবস্থান জানা৷ গর্ভফুল স্বাভাবিক অবস্থানের চেয়ে নিচে অবস্থান করলে যেসব গর্ভবতীকে উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন গর্ভবতী বলা হয়৷ তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বনের জন্য আলট্রাসনোগ্রাফি জরুরি৷
*
মায়োমা বা ফাইব্রয়েড আছে কিনা তা নির্ণয় করা৷
তৃতীয় পর্যায় :
গর্ভধারণের ৩২-৩৬ সপ্তাহের মধ্যে-
*
গর্ভস্থ সন্তানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কিনা তা নির্ণয়
গর্ভস্থ সন্তানের কোনও জণ্মগত ত্রুটি বা অস্বাভাবিকতা নির্ণয় যা আগের আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষায় ধরা পড়েনি৷
*
গর্ভস্থ সন্তানের মাথা ও পা স্বাভাবিক অবস্থানে আছে কিনা তা দেখা৷
*
গর্ভফুলের অবস্থান সঠিকভাবে নির্ণয়৷
*
গর্ভফুলের মধ্যস্থিত তরল পদার্থের পরিমাণ জানা৷
সম্ভাব্য জটিলতা যেমন- মায়োমা বা ফাইব্রয়ের এবং ডিম্বাশয়ের টিউমার ইত্যাদি নিরূপণ৷ এ যুগে সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে তা গুরুত্বপূর্ণ নয়৷ বরং নিরাপদ মাতৃত্ব তথা সুস্থ সন্তান প্রসবই বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷ তাই সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে শুধু তা জানার জন্য আলট্রাসনোগ্রাফি করা ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়৷
আলট্রাসনোগ্রাফির জন্য আগাম প্রস্তুতি
মায়ের প্রস্রাবের চাপ থাকতে হবে৷ এ জন্য পরীক্ষার এক ঘণ্টা আগে রোগীকে চার-পঁাচ গ্লাস পানি বা অন্য কোনও পানীয় পান করাতে হবে৷ আল্ট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষার আগে রোগী যেন প্রস্রাব না করেন সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে৷
শেষ কথা
একটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, গর্ভকালে মাসে কিংবা প্রস্রবের আগে প্রতি ডাক্তারের সঙ্গে প্রতি সাক্ষাতেই আলট্রাসনোগ্রাফি করা জরুরি নয়৷ যদি না না গর্ভবতীর কোনো জটিলতার আশন্কা থাকে৷ এ বিষয়ে সংশিÂষ্ট চিকিত্সকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে৷
ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷
তথ্য সূত্র:
Sultan Mahmud Sujon:
ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভ
একজন সুস্থ মা একটি সুস্থ শিশুর জণ্ম দিতে পারে৷ গর্ভকালীন সময় ঝুঁকির কারণ এবং লক্ষণগুলো জেনে নিন৷
ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভের কারণ
* প্রথম গর্ভধারণের সময় নারীর বয়স ২০ বছরের কম বা ৩৫ বছরের বেশি বয়সে বাচ্চা হলে
* মায়ের উচ্চতা ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি (১৪৫ সেন্টিমিটার) এর কম হলে
* গর্ভে বাচ্চা অস্বাভাবিকভাবে অবস্থান (বাচ্চা গর্ভে আড়াআড়িভাবে অবস্থান এবং বাচ্চার মাথা ওপর দিকে অবস্থান) করলে৷
* প্রি-একলাম্পসিয়া এবং একলাম্পসিয়া হলে
* রক্তস্বল্পতা (হিমোগ্লোবিন ৫০% এর নিচে)
* গর্ভস্থ যমজ বাচ্চা
* গর্ভে পানির পরিমাণ বেশি
* পূর্বে মৃত বাচ্চা প্রসবের ইতিহাস, গর্ভে বাচ্চা মরে থাকা এবং স্বাভাবিকভাবে ফুল বের না হলে হাত দিয়ে বের করার ইতিহাস থাকলে৷
* অধিক সন্তান জণ্ম দেওয়া বয়স্ক মা
* বিলম্বিত গর্ভ (সম্ভাব্য প্রসবের তারিখের ১৪ দিন পরেও বাচ্চা প্রসব না হওয়া)
* গর্ভের সঙ্গে অন্যান্য সাধারণ অসুখ যেমন - হার্টের অসুখ, কিডনির অসুখ, ডায়াবেটিস, যক্ষ্না, জন্ডিস এবং উচ্চ রক্তচাপ অসুখ ইত্যাদি৷
* পূর্বে সিজারিয়ান অথবা যন্ত্রপাতির সাহায্যে প্রসব হয়ে থাকলে গর্ভকালীন অবস্থায় মহিলাদের যে সমস্ত ঝুঁকিপূর্ণ লক্ষণ দেখা যেতে পারে-
* রক্ত স্রাব (প্রসবপূর্ব, প্রসব পরবর্তী)৷
* প্রি-একলামশিয়া বা একলামশিয়া (গর্ভবতী মহিলার ৬ মাসের পরে উচ্চ রক্তচাপ, হাত পা ফুলে যাওয়া এবং প্রসাবে এ প্রোটিন গেলে প্রি-একলামশিয়া বলে৷ আর প্রি-একলামশিয়ার সঙ্গে যদি খিঁচুনি হয় তখন তাকে একলামশিয়া বলে) হতে পারে৷
* গর্ভস্থ শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি কম হতে পারে
* নির্ধারিত সময়ের আগে অপরিণত প্রসব হওয়া
* নির্ধারিত সময়ের আগে পানি ভাঙ্গা (গর্ভকালের ৩৭ সপ্তাহের আগে)৷
* প্রসববেদনা ১২ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হওয়া
* বাধাগ্রস্ত প্রসব৷
* মৃত সন্তান প্রসব৷
* গর্ভফুল আটকে যেতে পারে
* ৪৮ ঘণ্টা (২ দিন) মধ্যে শিশুর মৃতু্য হলে
* ফিস্টুলা (যৌনি ও মূত্রথলির ফিস্টুলা অথবা যোনি ও মলদ্বারের ফিস্টুলা)
পরামর্শ
আপনি গর্ভধারনের জন্য ঝঁুকির মধ্যে আছেন কিনা তা জানার জন্য গর্ভধারণের পূর্বে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন৷ গর্ভ অবস্থায় ডাক্তার অথবা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে নিয়মিত চেকআপ করাতে পারেন৷ গর্ভ সময় উপর্যু্ক্ত সমস্যা দেখা দিলে বিলম্ব না করে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন৷ সম্ভাব্য ঝঁুকি এড়াতে হলে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন৷ আশেপাশে ডাক্তার না থাকলে সেই মূহূর্তে স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করুন৷ গর্ভ অবস্থায় কাছাকাছি কোনও ডাক্তার বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঠিকানা জেনে রাখবেন এবং জরুরি যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকুন৷
ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷
তথ্য সূত্র - নারী
ডা. সুমন চৌধুরি
ড্রাগ ডিরেক্টরি,
Sultan Mahmud Sujon:
নিরাপদ প্রসব স্থান
নিরাপদ প্রসব স্থান
বাচ্চা প্রসবের স্থান স্বাস্থ্যসম্মত হওয়া উচিত৷ কারণ বাচ্চা প্রসবের সময় মা ও শিশুর অনেক রোগ সংক্রমণ হতে পারে৷ হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মাতৃসদন প্রসবের জন্য নিরাপদ স্থান বলা যায়৷ তবে এ রকম কোনও সুযোগ না থাকলে বাড়িতে বাচ্চা প্রসবের স্থান ঠিক করা উচিত৷
প্রসবের ঘরটা কেমন হওয়া উচিত -
এমন একটি জায়গা প্রসবের জন্য নির্ধারণ করতে হবে যেখানে পর্যাপ্ত আলো বাতাস পায় এবং জায়গাটা শুকনো হয়৷ ঘর এবং ঘরের আসবাবপত্র এবং বিছানার চাদর বালিশের কাভার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে৷ একজনের উপযুক্ত একটি চৌকি বা খাট থাকতে হবে৷ চৌকির উপর নরম বিছানার ব্যবস্থা করতে হবে৷ প্রসবের সরঞ্জাম রাখার জন্য একটি টেবিল রাখতে হবে৷ বাচ্চার জিনিস পত্র রাখার জন্য আরেকটি টেবিল রাখলে ভাল হয়৷ বৈদু্যতিক আলো চলে গেলে ঘরে আলোর ব্যবস্থা করতে হবে৷
প্রসবের আগে যে সব জিনিসপত্র তৈরি রাখতে হবে
* অনেকগুলো খুব পরিষ্কার কাপড় বা কঁাথা৷
* পরিষ্কার তুলা এক প্যাকেট৷
* গজ এক প্যাকেট৷
* নাড়ি কাটার জন্য একটা নতুন কঁাচি (নড়ি কাটার আগে সেটা ফুটিয়ে নিন)৷
* নাড়ি চাপা দেওয়ার জন্য জীবাণুমুক্ত গজ বা পরিষ্কার কাপড় কয়েক টুকরা৷
* নাড়ি বঁাধার জন্য দুটি পরিষ্কার ফিতা বা সূতা৷
* শিশুর জামা-কাপড় (ধোয়া, পরিষ্কার ও মোলায়েম)৷
* ছোট তোয়ালে -২টা৷
* রবার ক্লাথ৷
* বিছানার চাদর৷
* স্যানিটারি প্যাড বা পরিষ্কার কাপড় প্যাকেট৷
বাড়িতে প্রসবের জন্য হাতের কাছে যে সমস্ত জিনিসপত্র রাখা উচিত
* রবার বা অয়েল ক্লথ (১.৫(১.৫ গজ) -২টা
* এনামেলের গামলা বড় ২টা, ছোট-২টা
* এনামেলের হাঁড়ি (পানি ফুটাবার জন্য) -১টা
* ডুস সেট (ক্যান, রবারের নল ইত্যাদি) -১টা
* গরম পানির ব্যাগ -১টা
* পানি খাওয়ানোর কাপ -১টা
* কঁাচি -১টা
* সেফটি পিন (বড় ও ছোট) -১ ডজন
* সঁুই সূতা - প্রয়োজন অনুযায়ী
* পরিশুদ্ধ তুলা - দুই প্যাকেট
* শিশুর নাভি বঁাধবার জন্য পরিষ্কার সূতা- প্রয়োজনমতো
* স্পিরিট/ডেটল
* সাবান -১টি৷
পরামর্শ
প্রসবব্যথা শুরু হলে চুলায় পানি ফুটাতে আরম্ভ করা প্রয়োজন, যাতে প্রয়োজন হলেই গরম পানি পাওয়া যায়৷ ঘরের সব জিনিসপত্র এমনভাবে গুছিয়ে রাখতে হবে যাতে প্রসবের সময় তাড়াতাড়ি সব জিনিস হাতের কাছেই পাওয়া যায়৷
ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷
তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,
নারী ,ডা. সুমন চৌধুরী :
Navigation
[0] Message Index
[*] Previous page
Go to full version