অনেকে অনুরোধ করে থাকেন যে, তাদের এমন কোন তদবীর করে দিতে যেন, তারা তাদের কাংখিত মনের মানুষটিকে পায়।
এ প্রসঙ্গে প্রথম কথা হচ্ছে, ইসলাম বিবাহপূর্ব প্রেম-ভালবাসা কোনক্রমেই সাপোর্ট করে না। সুতরাং আপনি কাউকে পছন্দ করে থাকলে তাকে সর্বপ্রথম বিয়ে করতে হবে। অতঃপর বিয়ের পর আসবে প্রেম-ভালবাসার বিষয়।
আর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে, আল্লাহ তা’আলার কাছে একমাত্র জান্নাত ব্যতীত নিজের পক্ষ হতে নির্দিস্ট কিছু উ
ল্লেখ করে চাইতে হয় না। কারন হয়তো আপনার পছন্দের ছেলে/মেয়েটিকেই আপনি পেলেন। কিন্তু আপনি জানেন না আপনার প্রিয় এই মানুষটির সাথেই আপনার ভবিষ্যত দাম্পত্য জীবন সুখের হবে কিনা। হয়তো দেখা যাবে আপনি যাকে এখন জীবনের অপেক্ষা অধিক ভালবাসেন তার সাথেই আপনার বিবাহ পরবর্তী জীবন হয়ে উঠেছে চরম অশান্তির এবং যার ফলশ্রুতিতে বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত হয়ে গিয়েছে।
এজন্যই আল্লাহ তা’আলার নিকট নির্দিস্ট কাউকে না চেয়ে এভাবে দু’আ করতে হয় যে, হে আল্লাহ! আমার জন্য যাকে কল্যাণকর মনে কর তাকেই আমার জীবনসঙ্গী বানিয়ে দেও। নয়তো আপনি যাকে নিজ হতে চেয়ে নিবেন হতে পারে তার সাথেই আপনার দাম্পত্য জীবনে চরম অশান্তি হবে।
আবার অনেকে নিজের চেহারা নিয়ে হীনমন্যতায় পতিত হয়। ভাবে আমার চেহারা সুন্দর নয় সুতরাং সুন্দর কোন ছেলে/মেয়ে আমাকে পছন্দ করবে না। তারা হয়তো কুরআনের এই আয়াত পড়েন নি যেখানে স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা আপনাকে সর্বপেক্ষা সুন্দর বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
“আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম অবয়বে।†{সূরা ত্বীন, আয়াত ৪}
তাহলে নিজেকে কূৎসিত ভাবা এটা কি আল্লাহর পবিত্র কুরআনের এই আয়াতের বিরোধীতা করা নয়?
আর এবার রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর এই হাদীসটির প্রতি লক্ষ করুনঃ-
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “তোমরা রূপ-লাবণ্যের মোহে পড়ে নারীদেরকে বিয়ে করো না। হয়তো বা তাদের রূপ-লাবণ্য তাদের জন্যে ধ্বংসকারী হতে পারে এবং ঐশ্বর্যশালিনী হবার কারণেও তাদের বিয়ে করো না। কারণ এমনও হতে পারে যে, তাদের সম্পদ তাদেরকে পাপ ও অবাধ্যতায় নিমগ্ন করবে। বরং তাদের তাকওয়া ও পরহেযগারীর ভিত্তিতেই বিয়ে করবে। কেননা কালো রঙ্গের কুৎসিত দাসীও যদি দ্বীনদার হয়, তবে সে উচ্চবংশীয় সুন্দরী রমণীর চেয়ে উত্তম।â€
{মুনতাকী}
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “চারটি জিনিসের ভিত্তিতে মেয়েদের বিয়ে হয়ে থাকে। তার সম্পদের জন্যে। বংশ মর্যাদার জন্যে। রূপের জন্যে ও দ্বীনদারীর জন্যে। অতএব তোমরা দ্বীনদার নারী বিয়ে করো। তাহলে তোমাদের কল্যাণ হবে।
{বুখারী, মুসলিম}
ব্যাখ্যা: হাদীসের মর্মার্থ হলো, বিয়ে করার সময় সাধারণত কোন মেয়ের এ চারটি জিনিসই বিবেচনা করা হয়ে থাকে। কেউ সম্পদের আশায় বিয়ে করে। আবার কেউ স্ত্রীর বংশ মর্যাদার প্রতি লক্ষ্য করে বিয়ে করে। কেউ আবার বিয়ে করার সময় মেয়েদের দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মুসলমানগণকে স্ত্রী নির্বাচনের বেলায় তার দ্বীনদারী ও তাকওয়াকেই অগ্রাধিকার দানের জন্যে উপদেশ দিয়েছেন। যদি দ্বীনদারীর সঙ্গে অন্য বৈশিষ্ট্যগুলোও বিদ্যমান থাকে তবে তো খুবই ভাল। পাত্রীর দ্বীনী বৈশিষ্ট্যের প্রতি লক্ষ্য না করে শুধুমাত্র রূপ-লাবণ্য ও ধন-সম্পদের কারণে বিয়ে মুসলমানের জন্য সঙ্গত নয়।
তাহলে কি প্রয়োজন পড়েছে আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রাসূল (সাঃ) কে অসন্তুস্ট করে এই অবৈধ বিবাহ পূর্ববর্তী প্রেম-ভালবাসায় লিপ্ত হওয়ার? ক্ষণিকের মোহ দুদিন পড়েই কেটে যাবে কিন্তু যে পাপ-পূণ্য অর্জন করলেন তা নিয়েই কবরে যেতে হবে। সেদিন আপনার আমার প্রেমাস্পদ-প্রেয়সী কেউ আমাদের সঙ্গে যাবে না।
একজন কেঁদে কেঁদে বলছিল ..............................
যাকে ভালবেসেছিলাম অনেক, সে হয়ে গেছে অন্যের আর আমি পড়ে আছি একা একা। তাতে কোন কষ্ট নেই, কিন্তু এই অবৈধ ভালবাসার কারনে আমার অন্তরের মাঝে এত আঘাত হয়েছে শত চেষ্টা করেও এ অন্তরের মাঝে আল্লাহর ভালবাসা আসতেছে না, তাহলে ভালবেসে আমি কি পেলাম? শুধু কি জাহান্নাম?
হে আল্লাহ্ আপনি আমাদের অন্তরে আপনার ভালবাসা বেশি করে দিন। কারণ এমন দিন আসবে আপনি ছাড়া কেও আমাকে সাহায্য করতে পারবে না। আমিন