Professor Jamal Nazrul Islam

Author Topic: Professor Jamal Nazrul Islam  (Read 1644 times)

Offline Shamim Ansary

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 3735
  • Change Yourself, the whole will be changed
    • View Profile
Professor Jamal Nazrul Islam
« on: March 18, 2013, 09:00:16 AM »
অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম স্যার আর নেই।

মৃত্যুর আগে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। তিনি খ্যাতিমান এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদার্থবিদ ও গণিতবিদ। তিনি রিসার্চ সেন্টার ফর ম্যাথমেটিকস এন্ড ফিজিকাল সায়েন্স(চবি) এর ডাইরেক্টর, শাবিপ্রবি উপদেষ্টা কমিটির সদস্য এবং চুয়েটের সিন্ডিকেট মেম্বার ছিলেন।

২৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৯সালে ঝিনাইদহে জন্ম। স্কুল ছিলো আমাদের চট্টগ্রাম কলেজিয়েট। এরপর লরেন্স কলেজ পশ্চিম পাকিস্তানের। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ডিগ্রি নিয়ে তিনি যান ক্যামব্রিজের ত্রিনিতি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে পুনরায় বিএ এবং এমএ ডিগ্রি লাভ। এপ্লাইড ম্যাথমেটিকস আর থিওরিটিকাল ফিজিক্সে পিএইচডি ক্যামব্রিজেই ১৯৬৮সালে।

তিনি গণিতের হিসেব কষে জানান যে আমাদের সৌরজগতের অধিকাংশ গ্রহ প্রাকৃতিক নিয়মে একই সরলরেখা বরাবর এলেও এর প্রভাবে এই গ্রহে অস্বাভাবিক কিছু ঘটার আশংকা নেই। তখন সবার উদ্বেগ ছিলো পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যেতে পারে এমন খবরে, ২০০১ সালে। তিনি স্টিফেন হকিং, আবদুস সালামের মত বিজ্ঞানীদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুই নয় নিজেও ছিলেন বিজ্ঞানী। প্রিন্সটন, ক্যামব্রিজে তাঁর একাধিক গ্রন্থ পাঠ্য হিসেবে রয়েছে। ১৯৮৪সালে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা ছেড়ে পাড়ি জমান এদেশে। যোগ দেন চবিতে। যেখানে বেতন পেতেন সাড়ে ৩হাজার অথচ ক্যামব্রিজে সোয়া এক লাখ। ডঃ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যারকেও দেশে ফেরার জন্যে উত্সাহিত করেছিলেন এই বিজ্ঞানী, প্রচারবিমুখ দেশপ্রেমিক। পশ্চিম পাকিস্তানে পড়ার সময় কোন ম্যাট্রিক, ইন্টার ছিলো না। হায়ার সিনিয়র ক্যামব্রিজ এখনকার এ লেভেলের সমান। ঐটা তিনি একাই পাশ করেন। ১৯৮৩ সালে তাঁর প্রকাশিত বই দ্যা আলটিমেট ফেট অব দি ইউনিভার্স প্রকাশের পর তা বহুভাষায় অনূদিত হয়। স্টিফেন হকিং তাঁর বন্ধু হলেও মাঝে মাঝে তাঁর লেকচার শুনতেন।

১৯৬০সালে সুরাইয়া ইসলামকে বিয়ে করেন। তার দুই মেয়ে। ১৯৭১সালে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে পাকিস্তানের হত্যাযজ্ঞ বন্ধের উদ্যোগ নিতে বলেছিলেন, কাজ করেছিলেন আর বাকিসব প্রবাসীদের সাথে।

মজার ব্যাপারঃ তিনি কখনো ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে চাইতেন না। ক্যালকুলেটর মস্তিষ্ককে অলস করে বলে। দূরে থাকতেন কমপিউটার, ইন্টারনেট থেকেও। একটা বিজ্ঞানী গান শুনতে আর ছবি আঁকতেও পছন্দ করতেন। তার রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চাও ছিলো অবাক করার মত।

লন্ডনের কিংস কলেজ, আমেরিকার প্রিন্সটন ইন্সটিটিউট ফর এডভান্সড স্টাডি (যেখানে আইন্সটাইন কাজ করতেন) অনেক খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করতেন। ইন্সটিটিউট অব থিউরিটিকাল এস্ট্রনোমির স্টাফ মেম্বার হিসেবেও ছিলেন।

১৯৮৪ সালে কেমব্রিজে একজন পূর্ণ প্রফেসরের বেতন ছিল বাংলাদেশী টাকায় মাত্র সোয়া লক্ষ টাকা! আর একই সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন প্রফেসরের বেতন ছিল অনেক, তিন হাজার টাকা! গবেষণার সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রেও এরকম আকাশ পাতাল ব্যবধান। এই রকম গবেষণার সুযোগ, নিশ্চিন্ত জীবন আর বিশ্বব্যাপী খ্যাতির সম্ভাবনাকে পেছনে ফেলে নিজের দেশে চলে আসতে পারেন এমন মানুষের সংখ্যা ১৯৮৪ সালে মাত্র একজন ছিল।

সেই একজন আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।


"Many thanks to Allah who gave us life after having given us death and (our) final return (on the Day of Qiyaamah (Judgement)) is to Him"