ক্যান্সার বা কর্কট এক মারণব্যাধি। সারা বিশ্বের বড় বড় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও বৈজ্ঞানিকরা এখনো পর্যন্ত এ রোগের কার্যকর কোন প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেন নি। এ রোগটির চিকিৎসায় আজও তারা হিমশিম খাচ্ছেন। সেই মারাত্মক ক্যান্সার রোগ থেকে বাঁচতে সাহায্য করতে পারে হেঁসেলের কয়েকটি মশলা। অতি পরিচিত এসব মশলা ক্যান্সার প্রতিরোধে ধন্বনতরির মতোই কাজ করে বলে খাদ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে : হলুদ, মৌরি, জাফরান, জিরা, দারচিনি, অরিগ্যানো, নাগা মরিচ ও আদা।
হলুদ : হলুদ দেহের ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এতে রয়েছে শক্তিশালী কারকিউমিন পলিফেনল। দীর্ঘদিনের গবেষণার পর প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, কারকিউমিন ক্যান্সার সেলের বিকাশকে নিয়ন্ত্রণ করে। কারকিউমিন শরীরে অ্যাপপটোসিস তৈরি করে যা শরীরে ক্যান্সারের জন্ম দেওয়া ক্ষতিকারক সেল মেরে ফেলতে সাহায্য করে। হলুদ মেলানোমা, ব্রেস্ট ক্যান্সার, ব্রেন টিউমার, প্যানক্রিয়াটিক ক্যানসার এবং লিউকেমিয়ার মতো ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে।
মৌরি : কোন কোন এলাকায় একে গোমৌরি বলে। খাওয়ার পরে মুখসুদ্ধি হিসেবে প্রত্যেক গৃহস্থ বাড়িতেই মজুত থাকে মৌরি। কিন্তু ক্যান্সার প্রতিরোধে এই মৌরিই যে এক শক্তিশালী যোদ্ধ তা অনেকেই জানেন না। মৌরিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইটো-নিউট্রিয়েন্টস এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যানসার প্রতিরোধে খুবই উপকারী। মৌরিতে রয়েছে অ্যানেটহোল যা ক্যান্সার সেলের আক্রমণমূলক কার্যকলাপ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
জাফরান : জাফরানে রয়েছে ক্রোসেটিন (প্রাকৃতিক ক্যারোটিনয়েড ডাইকার্বোক্সিলিক অ্যাসিড) নামক ক্যান্সার প্রতিরোধক এক কার্যকরি উপাদান। ক্রোসেটিন যে শুধুমাত্র ক্যান্সারের বিস্তার রোধ করে তা নয়, ক্যান্সারজনিত টিউমারের আকার কমাতেও এটি সাহায্য করে।
জিরা : এই মশলাটিও ক্যান্সারের মতো ক্ষতিকারক রোগের সঙ্গে লড়াইতে কোনও অংশে পিছিয়ে নেই। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ জিরেতে রয়েছে থাইমোকুইনান নামক এক যৌগ, যা শরীরে প্রস্টেট ক্যান্সারের জন্যে দায়ী সেলের বিস্তার ঠেকিয়ে দেয়।
দারচিনি : দিনে মাত্র এক চা-চামচ দারচিনিগুঁড়ো খেলে ক্যান্সারের মত প্রাণঘাতি ব্যাধির থাবা নিজেকে দূরে রাখা সম্ভব। সকালের চায়েই হোক অথবা স্যালাডে সিজনিং হিসেবে, আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে রাখুন আয়রন ও ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ দারচিনি।
অরিগ্যানো : এটি বহুল ব্যবহৃত না হলেও এখন অনেক ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে পাওয়া যায়। অরিগ্যানোয় রয়েছে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল কম্পাউন্ড। এতে মজুত ফাইটো কেমিক্যাল, কারসেটিন শরীরে ম্যালিগনেন্ট ক্যান্সার সেল তৈরি হওয়া রোধ করে।
নাগা মরিচ : এটি শরীরে ক্যান্সার সেলের ছড়িয়ে পড়া রোধ করার পাশাপাশি লিউকেমিয়ার টিউমার সেলের আকার হ্রাস করতেও সাহায্য করে। তবে রান্নায় খুব বেশি পরিমাণে নাগা মরিচ না খাওয়াই ভাল। অতিরিক্ত ঝাল হওয়ার ফলে শরীর গরম হয়ে যেতে পারে।
আদা : প্রতিদিনের রান্নায় কোনও না কোনও খাবারে আদা থাকবেই। তবে আদা শুধু খাবারে স্বাদ বাড়ায় না, ক্যান্সার থেকে বাঁচার জন্যেও আদা সমান উপকারী। এটি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি মেটাবলিজিম বাড়ায় এবং ক্যান্সার সেল ধ্বংস করতেও সমান উপযোগী। সূত্র: ওয়েবসাইট।