হজ্ব ও আপনার স্বাস্থ্য : যা জানা দরকার

Author Topic: হজ্ব ও আপনার স্বাস্থ্য : যা জানা দরকার  (Read 5361 times)

Offline Farhana Israt Jahan

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 413
    • View Profile
হজ্ব ও আপনার স্বাস্থ্য : যা জানা দরকার

বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছরের মতো এবারও অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসলমান পবিত্র হজব্রত পালন করতে সৌদি আরবে যাবেন। এ সময়ে হাজীদের সুস্বাস্থ্যের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা দীর্ঘ ভ্রমণজনিত ক্লান্তি, আবহাওয়ার তারতম্য, পরিবেশগত ভিন্নতা, অসংখ্য মানুষের ভিড়, খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, অধিক শারীরিক পরিশ্রম ইত্যাদি নানা কারণে হাজীরা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। হাজীদের তেমনি কিছু স্বাস্থ্য সমস্যার কথা আলোচনা করা হলো।
দীর্ঘ ভ্রমণজনিত ক্লান্তি : দীর্ঘ ভ্রমণের কারণে হাজীরা ক্লান্ত হযে পড়েন। শরীর অবসন্ন হয়ে নেতিয়ে পড়ে। তাই ভ্রমণের পরপরই পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেবেন। প্রচুর পানি খাবেন। প্রয়োজনে স্যালাইনের পানি খাওয়া যেতে পারে। মাথাব্যথা কিংবা শরীর ব্যথা থাকলে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খেতে হবে।
বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া : ভ্রমণজনিত কারণে বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে। হজের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা পালনের জন্য এ সময় বেশি বেশি ভ্রমণ করতে হয়। এছাড়া যাদের ভ্রমণজনিত বমি ভাব বা ‘মোশন সিকনেস’-এর সমস্যা রয়েছে তাদের বমি হতেই পারে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ভ্রমণ শুরুর আধা ঘণ্টা আগে বমি কমার ওষুধ ট্যাবলেট মেক্লিজিন (এক্লিজ/ভারটিনা) ১টি ট্যাবলেট খালি পেটে খেতে হবে। প্রয়োজনে এই ট্যাবলেটটি ৮ ঘণ্টা পরপর, দিনে ৩ বার খাওয়া যেতে পারে।
হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া : আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণেই সাধারণত হাঁচি-কাশি ও নাক দিয়ে পানি পড়ে থাকে। একই সঙ্গে মাথাব্যথাও থাকে। এজন্য প্যারাসিটামল ট্যাবলেটের সঙ্গে এন্টি হিস্টাসিন (ফেনাডিন) ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে।
বুক জ্বলা : গ্যাস্ট্রিক আলসারের কারণে বুক জ্বলার সমস্যায় অনেকেই ভুগে থাকেন। হজের ধারাবাহিক আনুষ্ঠানিকতার কারণে অনিয়মিত খাদ্য গ্রহণ, অত্যধিক দুশ্চিন্তা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নেয়া, অনিদ্রা ইত্যাদি নানা কারণে এই বুক জ্বলার প্রকোপ আরও বেড়ে যেতে পারে। এজন্য সময়মত খাবার গ্রহণ করুন, তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন, প্রচুর পানি পান করুন এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। প্রয়োজনে ওমিপ্রাজল ক্যাপসুল (লোসেকটিল ২০ মি. গ্রা./সেকলো ২০ মি. গ্রা.) দিনে ২ বার খালি পেটে খেতে পারেন। এছাড়া রেনিটিডিন, পেল্টোপ্রাজল, ইসোমিপ্রাজল ইত্যাদি গ্রুপের ওষুধও খাওয়া যেতে পারে।
জ্বর : জ্বর বিভিন্ন কারণে হতে পারে। ভাইরাসজনিত জ্বরে কোনো এন্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয় না। শুধু প্যারাসিটামল ট্যাবলেট ৬ ঘণ্টা পরপর ভরা পেটে খেতে হবে। সঙ্গে বেশি বেশি তরল খাবার খেতে হবে। তবে জ্বরের সঙ্গে গলা ব্যথা, সর্দি-কাশি ইত্যাদি থাকলে এন্টিবায়োটিক শুরু করতে হবে। এজন্য এজিথ্রোমাইসিন ট্যাবলেট (জিথ্রিন ৫০০ মিগ্রা/জি-ম্যাক্স ৩০০ মিগ্রা) প্রতিদিন ১টি করে ৩ থেকে ৫ দিন খেতে হবে।
ডায়রিয়া ও পেটের পীড়া : এ সময়ে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের কারণে ঘন ঘন পাতলা পায়খানা, বমি, পেটের ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। সঙ্গে জ্বর, শরীর ব্যথা ইত্যাদিও থাকতে পারে। এজন্য বেশি বেশি তরল খাবার ও খাবার স্যালাইন খেতে হবে। প্রয়োজনে সিপ্রোফ্লোক্সাসিন ট্যাবলেট (সিপ্রোসিন/ফ্লনটিন ৫০০ মি. গ্রাম) ১টি করে দিনে ২ বার ৫ থেকে ৭ দিন খেতে হবে।
গরমজনিত শারীরিক অসাড়তা এবং হিটস্ট্রোক : এ সময়ে মক্কার গড় তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। এই গরমে হজের নানা আনুষ্ঠানিকতা পালনের জন্য প্রখর রোদে ব্যস্ত থাকতে হয়, প্রচুর ছোটাছুটি করতে হয়। এতে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। ফলে শরীর পানিশূন্য হয়ে নেতিয়ে পড়ে। এ অবস্থা দীর্ঘ সময় চলতে থাকলে এক সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারেন অথবা হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন। এর জন্য ছাতা ব্যবহার করুন, প্রচুর পানি পান করুন, খাবার স্যালাইন ও অন্যান্য তরল খাবার বেশি বেশি গ্রহণ করুন।
শারীরিক দুর্বলতা ও অবসাদ : হজ পালনের সময় সুষম খাবারের ঘাটতি, অতিরিক্ত কায়িক পরিশ্রম এবং পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবে শারীরিক দুর্বলতা ও অবসাদ ভাব দেখা দিতে পারে। এর জন্য ঘন ঘন খাদ্য গ্রহণ, প্রচুর পানি পান এবং পর্যাপ্ত বিশ্রামের পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। প্রয়োজনে মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট (এরিস্টোভিটএম/মাল্টিভিট-প্লাস) ১টি ট্যাব দিনে ২ বার খেতে পারেন।
অনিদ্রা : পরিবেশগত, আবহাওয়া ও ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন এবং অত্যধিক দুশ্চিন্তা হাজীদের অনিদ্রার কারণ হয়ে থাকে। কিন্তু পর্যাপ্ত ঘুম না হলে হজের আনুষ্ঠানিকতা পালনে সক্রিয় ও মনোযোগী হওয়া যায় না। তাই আনুষ্ঠানিকতার ফাঁকে যখনই সুযোগ হবে ঘুমিয়ে নেবেন। কোনো কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে এবং অত্যধিক দুশ্চিন্তা হলে ব্রোমাজিপাম ট্যাবলেট (বোপাম) টেনিল-৩ মি. গ্রা.) ১টি ট্যাবলেট দিনে ১ বার, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে খেতে পারেন।
পরিশেষে : যারা উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন এবং হজে যাচ্ছেন তারা অবশ্যই সচেতন থাকবেন। কারণ এ সময়ে নানা কারণে রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে। প্রয়োজনীয় সব ওষুধ সঙ্গে রাখুন। শত ব্যস্ততায়ও ওষুধ সেবনের কথা ভুলবেন না।
প্রয়োজনীয় যেসব ওষুধ সঙ্গে রাখবেন- -
—সেভলন ক্রিম/ডেটলের ছোট বোতল
—খাবার স্যালাইন
—প্যারাসিটামল ৫০০ মি. গ্রা. ট্যাবলেট
—ওমিপ্রাজল ক্যাপসুল (লোমেকটিল ২০ মি. গ্রা.)
—ব্রোমাজিপাম ট্যাবলেট ৩ মি. গ্রা.
(বোপাম-৩ মি. গ্রা)
—মেক্লিজিন ট্যাবলেট (এক্লিজ/ভারটিনা ৫০ মি. গ্রা.)
—ট্যাবলেট ফেক্সোফেনাডিন ১২০ মি. গ্রা. (ফেনাডিন ১২০ মি. গ্রা.)
—ট্যাবলেট সিপ্রোফ্লক্সাসিন ৫০০ মি. গ্রা. (সিপ্রোসিন ৫০০ মি. গ্রা)
—ট্যাবলেট এজিথ্রোমাইসিন ৫০০ মি. গ্রা. (জিথ্রিন ৫০০ মি. গ্রা.)
—নাইট্রোগ্লিসারিন স্প্রে
—ভেনটোলিন ইনহেলার
—মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট (এরিস্টোভিট-এম/মাল্টিভিট প্লাস)
—উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ এবং
—ইনসুলিন/ডায়াবেটিসের ওষুধ।
Farhana Israt Jahan
Assistant Professor
Dept. of Pharmacy

Offline russellmitu

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1576
  • Test
    • View Profile
Zajakallahu Khairan.
KH Zaman
Lecturer, Pharmacy

Offline Kanij Nahar Deepa

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 291
  • Faculty
    • View Profile
thanks madam for such a helpful post....
Kanij Nahar Deepa
Lecturer
Dept. of Pharmacy
Daffodil International University