জৈষ্ঠ্য মাসকে আমাদের দেশে মধুমাস বলা হয়। কারণ এ সময় বাজার নানা রকম দেশীয় ফলে পরিপূর্ণ থাকে, আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু আরো কতো কি। এতো ফলের ভিড়ে কেন যেন একটু আড়ালেই থেকে যায় আমাদের অতি চেনা কালো জাম। যদিও বাজারে জামের স্থায়ীকাল অন্যান্য মৌসুমি ফলের তুলনায় কম তারপরও পুষ্টিগুণে এর তুলনা অতুলনীয়।
কালো জামের পুষ্টিগুণ:
• ভিটামিন ‘সি’ গরমে ঠান্ডাজনিত জ্বর, কাশি ও টনসিল ফুলে যাওয়া প্রতিরোধ করে। দূর করে জ্বর জ্বর ভাব। আর দাঁত, চুল ও ত্বক সুন্দর করতেও এর অবদান অপরিসীম। জামের ভিটামিন ‘এ’ দৃষ্টিশক্তিকে করে শক্তিশালী।
• ক্যানসারের জীবাণু ধ্বংস করার জন্য জামে রয়েছে চমকপ্রদ শক্তি। জাম মুখের ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। জামে যে উপাদান রয়েছে ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে -এমনটাই জানালেন আমেরিকার একদল গবেষক।
• বৃদ্ধ বয়সে চোখের অঙ্গ ও স্নায়ুগুলোকে কর্মময় করতে সাহায্য করে। গর্ভবতী মা, বাড়ন্ত শিশুদের জন্যও এই ফল ভীষণ উপকারী।
• জামে গ্লুকোজ, ডেক্সট্রোজ ও ফ্রুকটোজ রয়েছে, যা মানুষকে জোগায় কাজ করার শক্তি।
• বয়স যত বাড়তে থাকে, মানুষ ততই হারাতে থাকে স্মৃতিশক্তি। জাম স্মৃতিশক্তি প্রখর রাখতে সাহায্য করে।
• উচ্চ রক্তচাপ বা হাইব্লাড প্রেসার ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জাম ভীষণ উপকারী। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ও রক্তে চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে জাম।
• দীর্ঘ দিন কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে মলদ্বারে টিউমার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। জামের বাইরের আবরণে থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ। আঁশজাতীয় খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। জাম মলদ্বার বা কোলনের ক্যানসার প্রতিরোধ করে।
• জামে মধ্যে পাওয়া গেছে ইলাজিক এসিড নামের এক ধরনের এসিডের উপস্থিতি, যা ত্বককে করে শক্তিশালী। তিকর আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মির প্রভাব থেকে ত্বক ও চুলকে রা করে। এই ইলাজিক এসিড তিকর ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। জাম লড়াই করে হৃৎপিন্ডের অসুখ, জরায়ু, ডিম্বাশয়, মলদ্বার ও মুখের ক্যানসারের বিরুদ্ধে।
• জামের কচিপাতা পেটের পীড়া নিরাময়ে সাহায্য করে। জামের বীজ থেকে প্রাপ্ত পাউডার বহুমুত্র রোগের ওষুধ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। পাকা জাম বিট লবন মাখিয়ে ৩-৪ ঘন্টা রেখে হাত দিয়ে মেখে নরম কাপড়ে ছেঁকে যে রস বের হয় তা পাতলা পায়খানা, অরুচি ও বমিভাব দূর করে।
এছাড়াও আমরা জাম থেকে রস, স্কোয়াশ ও অন্যান্য সংরক্ষিত খাদ্য তৈরি করে সংরক্ষণ করতে পারি।