Technology World 'Villain'

Author Topic: Technology World 'Villain'  (Read 1185 times)

Offline Mohammed Abu Faysal

  • Administrator
  • Full Member
  • *****
  • Posts: 230
    • View Profile
Technology World 'Villain'
« on: July 02, 2013, 11:20:13 AM »
প্রযুক্তি-বিশ্ব কিছু অসাধারণ বুদ্ধিমান মানুষ পেয়েছে যাঁরা তাঁদের প্রযুক্তি দক্ষতা ও কম্পিউটারের জ্ঞানকে ভালো-মন্দ সব ধরনের কাজেই লাগিয়েছিলেন। অনেক সময় তাঁরা কোনরকম লাভ লোকসানের কথা না ভেবেই মজার মজার সব পণ্য বা সেবা উদ্ভাবন করেছেন। একসময় নিজেদের উদ্ভাবন নিয়ে বিরক্ত হয়ে আবার নতুন কিছু তৈরি শুরু করেছেন। তাঁদের তৈরি উদ্ভাবন কখনও কারও কাছে তাদের বীর বানিয়েছে কারও ডেকে এনেছে ঘোরতর বিপদ। কারও কাছে বীর আবার কারও চোখে ‘ভিলেন’ এমন কয়েকজনকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিজনেস ইনসাইডার।

দস্যু যখন পাইরেট বের প্রতিষ্ঠাতারা
বিটটরেন্ট সাইট হিসেবে পাইরেট বে যেমন খ্যাত, তেমনি কুখ্যাতও বটে। প্রযুক্তি-বিশ্লেষকেরা বলেন, পাইরেট বে যেমন পাইরেটেড কনটেন্টের জন্য সর্বাধিক ভিজিট করা সাইট, তেমনি অনলাইনে সর্বাধিক সেন্সর করা সাইটগুলোর মধ্যেও একটি। অনেক ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) তাদের সার্ভিস-গ্রহীতাদের এ সাইটটিতে ঢোকার পথ বন্ধ করে রাখে। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠার পর দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে পাইরেট বে। এ সাইটটি থেকে বৈধ, অবৈধ, কপিরাইট থাকা সব ফাইল পাওয়ার সুবিধা করে দিয়েছিলেন পাইরেট বে-র প্রতিষ্ঠাতা পার গোটিফ্রেড ভার্থল্ম ভার্গ, ফ্রেডরিক নেইজ ও পিটার সনডেন। তবে তাঁদের এই কাজ সবার সুনজর কাড়তে পারেনি। কপিরাইট আইন ভঙ্গ করার অপরাধে সুইডেনের আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন তাঁরা।

গুপ্তচর উইকিলিকসের জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ
প্রযুক্তি-বিশ্বে সবচেয়ে সাড়া ফেলেছিলেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। অবাধ ও মুক্ত তথ্যের ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম আন্দোলনকারী ভাবা হয় তাঁকে। বিশ্বজুড়ে গোপন তথ্য ফাঁস করার সাড়া জাগানো ওয়েবসাইট উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। উইকিলিকস প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে তিনি লাখ লাখ গোপন তথ্য ও সরকারি বার্তা প্রকাশ করে তিনি অনেক দেশের চোখে ‘ভিলেন’ বনে গেছেন। যুক্তরারে চোখে ‘তথ্য সন্ত্রাসী’ বা ‘গুপ্তচর’ আবার কারও কারও কাছে জাতীয় বীর জুলিয়ার অ্যাসাঞ্জ। বিশ্বজুড়ে গোপন তথ্য ফাঁসের ওয়েবসাইট উইকিলিকস-এ তথ্য-বোমা ফাটিয়ে টলিয়ে দিয়েছেন অনেক দেশের শাসনব্যবস্থাও। বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ইকুয়েডর দূতাবাসে একরকম বন্দী জীবন যাপন করছেন তিনি। দূতাবাসের বাইরে এলেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইকুয়েডর সরকার তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে।

মুক্ত তথ্যের হ্যাকার অ্যারন সোয়ার্জ
ইন্টারনেটে অবাধ ও মুক্ত তথ্যের পক্ষে কাজ করেছেন অ্যারন সোয়ার্জ। তথ্য স্বাধীনতার কর্মী আখ্যা পাওয়া অ্যারন সোয়ার্জ আজ বেঁচে নেই। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে নিজের ঘরে ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। প্রযুক্তি-বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়ে গেছে ২৬ বছর বয়সী ‘ইন্টারনেট অ্যাকটিভিস্ট’ অ্যারন সোয়ার্জের এই ‘আত্মহত্যা’। মৃত্যুর সময় এমআইটির ডিজিটাল আর্কাইভ হ্যাক করে বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিবেদন ডাউনলোডের অভিযোগে বিচারাধীন ছিলেন সোয়ার্জ। তবে এই অভিযোগ কখনোই স্বীকার করেননি সোয়ার্জ। মাত্র ১২ বছর বয়স থেকেই কম্পিউটারে দক্ষ হয়ে উঠেছিলেন অ্যারন। একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠার জন্য ‘আর্সডিজিটা প্রাইজ’ পেয়েছিলেন। ইন্টারনেটে ব্লগপোস্ট সঞ্চালনের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা আরএসএস তৈরির কাজে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন ১৪ বছর বয়সে। একই বয়সে যোগ দিয়েছিলেন অধ্যাপক লরেন্স লেসিগের সঙ্গে, তাঁর ‘ক্রিয়েটিভ কমন্স’ নামের ইন্টারনেট সংস্থাটি গড়ে তোলার কাজে। ভীষণ জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগভিত্তিক সংবাদ-সাইট ‘রেডিট’ প্রতিষ্ঠায় হাত লাগিয়েছিলেন তিনি। খুব অল্প বয়সে অনেক টাকা-পয়সা আসে তার হাতে, কিন্তু টাকার জন্য জীবনে তিনি কিছুই করেননি। তাঁর দাবি ছিল, ইন্টারনেটে তথ্য হতে হবে অবাধ। কিন্তু তাঁর উচ্চকণ্ঠ দমাতে তাঁকে মামলায় জড়িয়ে ‘ভিলেন’ বানানো হয়েছিল।

ঘরের শত্রু ব্র্যাডলি ম্যানিং
যুক্তরাষ্ট্রের চোখে তিনি ‘ভিলেন’ আবার অনেকের চোখে বীর ব্র্যাডলি ম্যানিং। উইকিলিকসের কাছে সরকারি নথি পাচার করার অভিযোগে গ্রেপ্তার মার্কিন সেনাসদস্য ব্র্যাডলি ম্যানিংয়ের বিচার চলছে যুক্তরাষ্ট্রে। ২৪ বছর বয়সী ম্যানিং বর্তমানে সামরিক হেফাজতে রয়েছেন। গোপন নথি উইকিলিকসকে সরবরাহের অভিযোগে তাঁকে ইরাক থেকে দুই বছরেরও বেশি সময় আগে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ১০ টিরও বেশি অভিযোগ আনা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।

‘যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বিদ্রোহী’ স্নোডেন
ব্যক্তির মৌলিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করে গোপনে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করছে যুক্তরাষ্ট্র—এ খবর ফাঁস করেন দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ)২৯ বছর বয়সী এক সাবেক কর্মী যার নাম এডওয়ার্ড স্নোডেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের ঠিকাদার বুজ অ্যালেন হ্যামিলটনের অধীনে কাজ করতেন তিনি। এডওয়ার্ড স্নোডেন দাবি করেছেন, ‘বিশ্বের সব মানুষের মৌলিক স্বাধীনতার’ স্বার্থে তিনি প্রিজম কর্মসূচির তথ্য ফাঁস করেছেন। এডওয়ার্ড স্নোডেন তথ্য ফাঁসের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন, ‘আমি এমন কোনো দুনিয়াতে বাঁচতে চাই না, যেখানে আমি যা যা করছি বা যা বলছি সব রেকর্ড করা হচ্ছে। এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা আমি সমর্থন করি না এবং এর অধীনে আমি বাঁচতেও চাই না।’
‘দ্য গার্ডিয়ান’কে দেওয়া সাক্ষাত্কারে ২৯ বছর বয়সী স্নোডেন বলেন, ‘আমি কোনো ভুল করিনি।’
স্নোডেনের কর্মকাণ্ডের পর যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তত্পরতা নিয়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান জেমস ক্ল্যাপার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন স্নোডেনের তথ্য ফাঁসের ঘটনায়। তিনি বলেছেন, এমন কাজ ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’। সম্প্রতি স্নোডেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উঠে পড়ে লেগেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ নথি ফাঁস করা উইকিলিকস স্নোডেনকে সমর্থন জানিয়েছে।

রবিনহুড অ্যানোনিমাস গ্রুপ

ইন্টারনেট জগতের ‘রবিনহুড’ হিসেবে খ্যাত অ্যানোনিমাস নামের হ্যাকারদের গ্রুপ। যেকোনো ওয়েবসাইট মুহূর্তে হ্যাক করে ফেলতে দক্ষ এ গ্রুপটি। তবে তাঁদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করে এ ধরনের কর্মযজ্ঞ চালায় তাঁরা। এ দলটি যতটা কুখ্যাতি অর্জন করেছে তেমনি হ্যাকিংয়ের ক্ষেত্রে দক্ষতাও দেখিয়েছে।

বিরক্তিকর পপ অ্যাডের জনক জন শিপল
ইন্টারনেট ব্রাউজারে পপ অ্যাড দেখতে বাধ্য হতে হয়েছে স্রেফ জন শিপলের জন্যই। পপ অ্যাডের জনক ম্যাসাচুসেটসের এ গবেষক। ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপনের এক দুয়ার তিনি যেমন খুলেছেন তেমনি অনেকের চোখে তাঁর এই কাজ ‘ভিলেন’-এর কাজের মতোই মনে হয়েছে।

‘পাগল প্রযুক্তিবিদ’ স্টিভ ওজনিয়াক
অ্যাপলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওজনিয়াককে ‘প্রযুক্তি গুরু’ হিসেবে জানেন অনেকেই। বর্তমানের প্রযুক্তিপ্রেমী প্রজন্মের যাত্রা শুরু হয়েছিল যাদের হাত ধরে, তাদেরই একজন ওজনিয়াক। স্টিভ ওজনিয়াক এবং স্টিভ জবস ভালো বন্ধু ছিলেন। তারা দুজন ১৯৭৬ সালে বাড়ির গ্যারেজে বর্তমানের জনপ্রিয় অ্যাপল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। স্টিভ ওজনিয়াককেই অ্যাপলের প্রথম কম্পিউটার তৈরি এবং প্রোগ্রামের জন্য পুরো কৃতিত্ব দেয়া হয়। ১৯৮১ সালে মারাত্মক একটি প্লেন দুর্ঘটনায় স্মৃতিশক্তি হারিয়েছিলেন ওজনিয়াক। ১৯৮৭ সালে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যাপল ছেড়ে দেন এবং বিভিন্ন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কাজ শুরু করেন। বিখ্যাত অনেক প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রাংশের ত্রুটি বের করে তিনি তাঁদের চোখে ‘ভিলেন’ বনে গেছেন। আবার সময় সময় তিনি এমন সব যন্ত্র তৈরি করেন যা দিয়ে মানুষকে বিরক্ত করতে যথেষ্ট। তাঁর বিশেষ আগ্রহ হচ্ছে নতুন মুঠোফোন বাজারে এলে প্রথম মুঠোফোনটি সংগ্রহ করা। তিনি সঙ্গে সব সময় একগুচ্ছ ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে ঘোরেন। মজার ব্যাপার হল প্রযুক্তি-পাগল স্টিভ ওজনিয়াকের বাড়িতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ নেই।