ডায়বেটিস আপনারও হতে পারে: সচেতন হউন আজই-১
বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত একটি রোগের নাম – ডায়বেটিস। এই রোগটি নারী-পুরুষ বা বয়স ভেদে সকলের মধ্যেই দেখা যায়। আমাদের দেশেও প্রচুর ডায়বেটিস রোগী রয়েছে এবং দিন দিন তা বাড়ছে। আমাদের চারপাশে তাকালেই অনেক রোগী দেখতে পাই। যদিও রোগটি ব্যপক হারে বাড়ছে, কিন্তু এর প্রতি মানুষের সচেতনতা তেমন নেই বললেই চলে। অনেকে এই রোগ নিয়ে না জেনেই দিন পার করছেন এবং শরীরের অবস্থার অবনতি ঘটাচ্ছেন। যদিও রোগটি সারাজীবনের তবুও একে নিয়ন্ত্রন করে সুস্থ্যসবলভাবে বেঁচে থাকা যায় অনায়াসে। এই রোগ নিয়ে সকলের মনেই নানা প্রশ্ন আছে। ১ম পর্বে আসুন আজ সেইসব প্রশ্নেরই উত্তর খুজি।
প্রশ্নঃ ১
কখন ডায়বেটিসের জন্য টেস্ট বা পরীক্ষা করানো উচিত?
উত্তরঃ
যদি আপনার বার বার প্রস্রাব পায়, রাতে বেশ কয়েকবার উঠতে হয় প্রস্রাব করতে, হঠাত ওজন কমতে থাকে, হঠাৎ খিদে বেড়ে যায়, হাত-পায়ে ঝিঁ ঝিঁ ধরে, বারবার নানা ধরনের ইনফেকশন হয়, কেটে গেলে ক্ষত না শুকোয়-এমন লক্ষন দেখা দিলে অবশ্যই ডায়বেটিস রয়েছে কিনা, তা পরীক্ষা করিয়ে নেবেন। এ ছাড়াও মোটা মানুষদের নিয়মিত ডায়বেটিসের পরীক্ষা করানো দরকার। পাশাপাশি বাবা-মা, ভাই-বোন অথবা পরিবারের রক্তের সম্পর্ক আছে এমন কারও যদি ডায়বেটিস থেকে থাকে, তাহলে অবশ্যই এই টেস্ট করানো উচিত। ৪৫ বছর বয়সের পর থেকে নিয়মিতভাবে প্রতি তিন বছর অন্তর ডায়বেটিসের পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত।
প্রশ্নঃ ২
ডায়বেটিস বা সুগারের রোগ ধরলে সেটা কি কোনওদিন সারে?
উত্তরঃ
এই প্রশ্নের জবাব সরাসরি ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’তে ঠিকঠাক দেওয়া যায় না। কারণ, এমন অনেক মোটা মানুষ রয়েছেন যাঁদের ডায়বেটিস ধরেছে, তাঁরা যদি ঠিকঠাক নিয়ম মেনে খাওয়া দাওয়া করেন এবং নিয়মিত ব্যায়াম করে নিজেদের আদর্শ দৈহিক ওজনের কাছাকাছি পৌঁছতে পারেন বা ৭-১০% ওজন কমাতে পারেন, তাহলে দেখা গেছে বেশ কিছু মানুষের ওষুধ বন্ধ করা গেছে।
প্রশ্নঃ ৩
তার মানেই কি সেই মানুষটার ডায়বেটিস রোগ সেরে গেল?
উত্তরঃ
ডায়বেটিস রোগ একবার ধরা পড়লে সারা জীবনের ব্যাপার। আমরা যেটা দেখি, সেটা হল ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে কি না। যদি নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তাহলে তার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হিসেবে শরীরে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে।
প্রশ্নঃ ৪
ডায়বেটিস থেকে কী কী জটিলতা শরীরে দেখা দিতে পারে?
উত্তরঃ
সারা বিশ্বে কিডনি ফেলিওরের প্রধান কারণটাই হল ডায়বেটিস মেলিটাস। এমনকী আমাদের দেশে অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ হল ডায়বেটিসের জন্য চোখের রেটিনা নষ্ট হয়ে যাওয়া। সুগারের জন্য শরীরের স্নায়ু, শিরা, ধমনী, প্রতিটি প্রত্যঙ্গেরই সমস্যা শুরু হয়। যার ফলে হার্ট অ্যাটাক, ব্রেনের স্ট্রোক, নিউরোপ্যাথি-এই সমস্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রশ্নঃ ৫
ডায়বেটিস হলে কি একজন মানুষের পছন্দের সব খাবার বন্ধ করে দিতে হয়?
উত্তরঃ
না। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারনা। একজন সাধারণ মানুষের হেলদি ডায়েট বলতে যা বোঝায়, বেশিরভাগ ডায়বেটিস রোগীর ক্ষেত্রে সেটা খেলেই চলে। আমরা যেটা হিসেব করে দিই, তা হল প্রতিটি রোগীর বয়স, ওজন এবং সারাদিনে কী ধরনের দৈহিক কাজকর্ম করতে হয়, তার ওপর ভিত্তি করে গড়া।