দুজনই উইকেটকিপার, দলের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। তবে এর চেয়েও বড় পরিচয়, দুজনই দলের অধিনায়ক। এই পরিচয়েই কাল ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে কথা বললেন মুশফিকুর রহিম ও ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। কাল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুই অধিনায়কের সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন আরিফুল ইসলাম
নিজের ব্যাট দেখছেন মুশফিকুর রহিম। আজ থেকে শুরু প্রথম টেস্টে অধিনায়কের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশও। শামসুল হক বাংলাওয়াশের স্মৃতি—
মুশফিকুর রহিম: ওই সিরিজ অবশ্যই আমাদের অনুপ্রেরণা ও বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগায়। তবে আমরা টেস্ট খেলছি দীর্ঘদিন পর। সর্বশেষ টেস্টের পর মাত্র একটি তিন দিনের ম্যাচ খেলতে পেরেছি। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলেছি বটে, কিন্তু টেস্ট ক্রিকেট ভিন্ন ব্যাপার। আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ আসলে নিজেদের সঙ্গেই। কারণ অনেক দিন পর টেস্ট খেলছি, উইকেটও একদম নতুন। তবে এটাও সত্যি, সমস্যা কিছু হলে আমাদের চেয়ে ওদের হবে তিন গুণ বেশি। আশা করছি দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারব।
প্রত্যাশার চাপ বেশি কিনা—
মুশফিক: চাপ তো সব সময়ই থাকে। দেশের মাটিতে আরও বেশি থাকে। গত এক-দেড় বছর দেশের মাটিতে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি। তবে চাপ নিলেই চাপ। এর চেয়েও বড় সিরিজ আমরা খেলেছি। আমাদের ক্রিকেটাররা আগের চেয়ে অনেক পরিণত ও দায়িত্বশীল। যদি সামর্থ্য অনুযায়ী একটা দল হিসেবে খেলতে পারি, চাপকে জয় করা অবশ্যই সম্ভব।
গত এক-দেড় বছরে কয়েকবার কাছাকাছি গিয়েও জিততে না পারা—
মুশফিক: এটা আমরা ভেবেছি এবং সেভাবেই নিজেদের প্রস্তুত করার চেষ্টা করেছি। অনেকবারই আমরা তিন দিন ভালো খেলে এক দিন বা দুই দিনে ম্যাচ হেরে গেছি। শ্রীলঙ্কা সফরে একটা ইনিংস ভালো খেলার পর আমরা পরস্পরকে মনে করিয়ে দিচ্ছিলাম যেন পরের ইনিংসটাও ভালো খেলতে পারি। আশা করছি টেস্টের পাঁচটা দিন আমরা সেশন বাই সেশন ভালো খেলতে পারব এবং ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারব।
সিরিজ জয়ের লক্ষ্য—
মুশফিক: সিরিজ জয়ের লক্ষ্য তো অবশ্যই আছে। প্রতিটি ম্যাচ জয়ের জন্য খেলব। জিততে যা যা করা প্রয়োজন, সব করার চেষ্টা করব। শুধু টেস্ট নয়; টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি সব ম্যাচেই জয়ের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছি।
সাকিবের বর্তমান অবস্থা—
মুশফিক: তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচটি খেলতে পারলে ওর জন্য ভালো হতো। তবে সাকিব স্মার্ট ক্রিকেটার। যতটুকু অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছে, আশা করি কাজে লাগিয়েছে। প্রস্তুতিতে ঘাটতি এর পরও থাকতে পারে, তবে সাকিবরে সামর্থ্য আছে সেটা পুষিয়ে দেওয়ার।
সাকিবের কাছে এবারের প্রত্যাশা—
মুশফিক: এমন একজন ক্রিকেটার থাকলে অধিনায়কের কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়। আশা করি, সাকিব আগেরবারের মতোই কিছু করবে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওর রেকর্ড খুব ভালো। আশা করি আমাদেরও কিছু সুযোগ দেবে, যেন আমরা কিছু করে দেখাতে পারি (হাসি)।
দলের প্রস্তুতি—
মুশফিক: আরেকটা বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচ খেলতে পারলে ভালো হতো। তবে প্রিমিয়ার লিগে বেশ কিছু প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলতে পেরেছি। সেন্টার উইকেটে অনুশীলনের জন্য আমরা কয়েক দিন আগেই এখানে চলে এসেছি। বৃষ্টির কারণে সেটা হয়ে ওঠেনি। তবে আগেই বলেছি, আমাদের চেয়ে ওদের সমস্যা তিন গুণ বেশি হবে। প্রস্তুতি আদর্শ না হলেও আমাদের সবাই যেভাবে খেলছে এবং প্রিমিয়ার লিগেও যেভাবে অনেকে পারফর্ম করেছে, তাতে আমরা দারুণ আত্মবিশ্বাসী।
আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে দলকে—
মুশফিক: জেতার জন্য আত্মবিশ্বাস থাকতেই হবে। তবে আমরা অতি আত্মবিশ্বাসী নই। জিততে হলে আমাদের সবাইকে সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে। আর অনেক দিন পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ হচ্ছে, সবাই খুব ক্ষুধার্ত ভালো করার জন্য।
ব্যক্তিগত লক্ষ্য—
মুশফিক: আমার চাওয়া দলীয়ভাবে ভালো করা এবং দলের সাফল্যে আমার যেন সর্বোচ্চ অবদান থাকে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের সাফল্য বাংলাদেশের জন্য চাপ না প্রেরণা—
মুশফিক: আমি তো বলব প্রেরণা হয়েই এসেছে। ওরা র্যাঙ্কিংয়ে আমাদের পেছনে ফেলার পর আমার খুবই খারাপ লেগেছিল। আশা করি, এই সিরিজটা জিতে আমরাও র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করব। তবে র্যাঙ্কিংয়ের চেয়েও বড় ব্যাপার হলো, ভালো খেলার ধারাবাহিকতা ধরে রাখা।
মাঠের বাইরের ঘটনার প্রভাব—
মুশফিক: সময় এখন ক্রিকেটে মন দেওয়ার। আমার জন্য, পুরো দলের জন্যও বড় একটি সিরিজ এটি। সবার মন এদিকেই। এই সিরিজটা ভালো খেলে আবার আমরা ক্রিকেট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।