বাংলাদেশি তরুণ উদ্যোক্তারা অনেক সক্রিয় ও উদ্যমী

Author Topic: বাংলাদেশি তরুণ উদ্যোক্তারা অনেক সক্রিয় ও উদ্যমী  (Read 1326 times)

Offline maruppharm

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1227
  • Test
    • View Profile
ব্যবসার নিয়ন্ত্রণবিধি সংস্কার নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) আবাসিক ব্যবস্থাপক কাইল এফ কেলহফার

কাইল এফ কেলহফারপ্রথম আলো: বিশ্বব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইএফসির সর্বশেষ ডুইং বিজনেস বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশ দুই ধাপ এগিয়েছে। বাংলাদেশের এই অগ্রগতিকে কীভাবে দেখছেন?
কাইল এফ কেলহফার: বাংলাদেশে যে এগিয়ে যাচ্ছে, এটা তার একটি প্রতিফলন। বিশ্বব্যাংক-আইএফসির এই সূচকে ১৮৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩০তম, যা আগেরবার ছিল ১৩২তম। আসলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমেই প্রতিযোগিতাসক্ষম হয়ে উঠছে। প্রতিবছরই বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ছে। মোট দেশজ উৎপাদনের বা জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার অব্যাহতভাবে ৬ শতাংশ থাকছে। ৭ বা ৮ শতাংশ হলে আরও ভালো হতো। কিন্তু এই ৬ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধিকে খাটো করে দেখার কোনোই সুযোগ নেই। বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যসংক্রান্ত নিয়মকানুন ও বিধিবিধান সংস্কার ও আধুনিকায়ন হচ্ছে। নতুন ব্যবসা খোলা আগের চেয়ে সহজ হয়েছে।
প্রথম আলো: আইএফসি ব্যবসা-বাণিজ্যসংক্রান্ত নিয়মকানুন ও নিয়ন্ত্রণবিধি সংস্কারে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। এতে দেশের সরকারি ও বেসরকারি খাত কীভাবে সাড়া দিচ্ছে?
কাইল কেলহফার: আমরা সরকার ও বেসরকারি খাত উভয়কে নিয়েই কাজ করছি। সবারই লক্ষ্য যেহেতু প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সেহেতু বিনিয়োগ ও উৎপাদনের পরিবেশ যত অনুকূল করা যায়, তত ভালো। সেই বিবেচনা থেকে নিয়মকানুন সংস্কার ও আধুনিকায়নের প্রতি সবাই গুরুত্ব দিচ্ছে। আইএফসির সহযোগিতায় কাস্টমস কার্যক্রম অটোমেশন করা হয়েছে, কর কার্যক্রম অনলাইনে আনা হচ্ছে, যৌথ মূলধনি কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের পরিদপ্তরকে অনলাইনভিত্তিক করা হয়েছে। এগুলো একদিকে যেমন ব্যবসার ব্যয় কমিয়েছে, অন্যদিকে অনেক সময় সাশ্রয় করছে। এ রকম আরও কাজ চলছে।
প্রথম আলো: বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও অর্থায়ন কতটা বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে আপনাদের?
কাইল কেলহফার: বাংলাদেশে আইএফসির বিনিয়োগ কয়েক বছর আগেও ১০ থেকে ১২ কোটি ডলারে সীমিত ছিল। তবে ইদানীং তা বাড়ছে। গত বছর এই বিনিয়োগ ছিল ৮০ কোটি ডলার। এবার আমরা তা ১০০ কোটি ডলারে উন্নীত করতে চাই। শুধু এবার নয়, প্রতিবছরই ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে চায় আইএফসি। ঋণ প্রদান ও পুঁজি জোগান দুইভাবেই বিনিয়োগ করছে আইএফসি। তবে কোনো প্রকল্পে আমরা ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারি। সে হিসাবে বলা যায়, আইএফসির বিনিয়োগকৃত প্রকল্পের মোট প্রকৃত বিনিয়োগ কয়েক গুণ বেশি।
প্রথম আলো: বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আইএফসি কোন বিষয়গুলোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে?
কাইল কেলহফার: দুটি বিষয়কে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রথমত, ব্যবসা বা উদ্যোগটি সফল হতে হবে। সফল ব্যবসা হলে ভালো মুনাফা হবে, যা আবার ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। দ্বিতীয়ত, ব্যবসা বা উদ্যোগটি দেশের জন্য ভালো হতে হবে। অর্থাৎ এটি যেন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে, যেন দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রাখতে পারে। আবার আইএফসি উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি শ্রমিকদের বিষয়টিকেও গুরুত্বসহকারে দেখে থাকে। সে জন্যই আমরা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সঙ্গে বেটার ওয়ার্ক প্রোগ্রাম বা উন্নততর কাজের কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত হয়েছি। শ্রমিকদের বিষয়টি টেকসই বিনিয়োগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথম আলো: ব্যবসা করার প্রক্রিয়া সহজ করার ক্ষেত্রে আইএফসি কী কী বিষয় বিবেচনায় নিয়ে থাকে?
কাইল কেলহফার: আইএফসি মনে করে, বিভিন্ন নিয়মকানুন ও বিধিবিধানকে সংস্কার করতে হবে। সংস্কার মানে আগের তুলনায় উন্নততর করা, বিভিন্ন প্রক্রিয়া ও ধাপ কমিয়ে আনা। এর পাশাপাশি অবকাঠামো সংস্কার ও বিনির্মাণের দিকেও আইএফসি মনোযোগ দিয়ে থাকে। বিদ্যুৎ পরিস্থিতির কথা এখানে বলা যায়। পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ ছাড়া অব্যাহত উৎপাদন কখনোই সম্ভব নয়। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। ডুয়িং বিজনেস প্রতিবেদনেও দেখা যায়, বিদ্যুৎ-সংযোগ পেতে বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি সময় লাগে। তাই বাংলাদেশে আইএফসি তিনটি বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে।
প্রথম আলো: বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের বিশেষত তরুণ উদ্যোক্তাদের সম্পর্কে আপনার ধারণা কী?
কাইল কেলহফার: বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা হলো বেসরকারি খাত। এ খাতের উদ্যোক্তারা বিশেষত তরুণেরা অনেক সক্রিয়, অনেক উদ্যমী। বাংলাদেশের তরুণেরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়ে পড়ালেখা করেছে, কাজ করছে। যে তরুণটি যুক্তরাজ্যে লেখাপড়া করেছে কিংবা আফ্রিকার কোনো দেশে কাজ করছে, সে যখন দেশে আসছে, তখন সে জ্ঞান ও সেখানকার অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে আসছে। এমনকি যেসব শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করছে, তারাও কিন্তু অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরে আসে। এভাবে বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা অনেক বেড়েছে, ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।
[সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আসজাদুল কিবরিয়া]
Md Al Faruk
Assistant Professor, Pharmacy