বছরজুড়ে পাওয়া যায় বিভিন্ন স্বাদের ফল। কোনোটি মিষ্টি আবার কোনোটি টক। যেই স্বাদেরই হোক, দেশীয় ফলে থাকে আবহাওয়া উপযোগী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
157
1
1 Print Friendly and PDF
ঋতু পরিবর্তনের সময় যে রোগগুলো হয় সেগুলো প্রতিরোধ করে দেশি ফল। এ নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সিলেটের সরকারি কিবরিয়া কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. মো. মহিব বুল্যাহ জানান, মৌসুমি ফল মৌসুমি রোগ প্রতিরোধ করে। দেশি ফলের পুষ্টি বেশি।
আমলকী
অনেকের ধারণা বিদেশি ফলের দাম বেশি, পুষ্টিও বেশি। ধারণা ভুল। সহজভাবে দেখলে বোঝা যায়, বড় আকারের একটি কমলায় যে পরিমাণ ‘ভিটামিন সি’ থাকে, তার থেকে বেশি থাকে একটি আমলকীতে। এই ফল দামে সস্তা অথচ ভিটামিনে ভরপুর।
দাঁত, ত্বক ও চুলের যত্নে আমলকী উপকারি। ক্ষুধা ও প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়াতেও আমলকীর জুড়ি নেই। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষুধা ও খাবারে রুচি বাড়াতে আমলকীর রয়েছে জাদুকরি শক্তি। এ কারণে ভেষজ চিকিৎসায় আমলকী অনেক রোগের ওষুধ বানাতে ব্যবহার করা হয়। স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও বেশ উপকারি এই ফল।
চুল কালো করতে কাঁচা আমলকী পিষে পানিতে রেখে মাথায় ব্যবহার করলে চুল কালো ও উজ্জ্বল হয়। শুকনো আমলকী হলে একদিন আগে ভিজিয়ে রেখে একই প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা যায়।
জলপাই জলপাই
জলপাই
জলপাইয়ের তেল বা অলিভ অয়েল— লিকুইড গোল্ড বা তরল সোনাও বলা হয়। শীতে বিভিন্ন লোশনের পরিবর্তে শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বক নমনীয় থাকে।
শীতে শিশুদের শরীরে জলপাইয়ের তেল মাখলে দেহের তাপ বাড়বে। ঠাণ্ডা জনিত সমস্যা কমে আসবে। জলপাইয়ে রয়েছে ভিটামিন এ, সি এবং ই। এগুলো দেহের রোগজীবাণু ধ্বংস করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করে তোলে।
শীতে সর্দি-কাশি হয়, হাঁপানি রোগীদের ভোগান্তি বাড়ে। এ সময় প্রতিদিন খাবার পর এক চা-চামচ অলিভ অয়েল নিয়মিত খেলে শরীরের উষ্ণতা বাড়বে। জলপাই শিশুদের হাঁড় ও মাংসপেশী মজবুত করে। প্রোটিনের ঘাটতি দূর করে।
যাদের শরীরে দূষিত কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি তারা রান্নায় অলিভ অয়েল খেতে পারেন। বিশ্বের অনেক দেশে রান্নায় সয়াবিন তেলের পরিবর্তে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা হয়। এই তেলে সয়াবিন তেলের মতো কোনো ক্ষতিকর উপাদান নেই।
জাম্বুরা জাম্বুরা শীত এলেই বাতাসের আদ্রতা বাড়ে, শুষ্ক হয়ে যায় ত্বক। এটা বেশিরভাগ মানুষের সমস্যা। এ সময় জলপাইয়ের তেল বা অলিভ অয়েল মাখলে ত্বক ফেটে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
শীতের আগেই এ ফল পাওয়া যায়। পরিমিত খেলে এটি শীতের সময় দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় করে তুলবে। এছাড়া পুরানো ঘা শুকাতেও জলপাই উপকারি।
জলপাই ক্ষুধাবর্ধক। এছাড়া বাতের ব্যথায় জলপাইয়ের তেল মালিশ করলে উপশম হয়। উচ্চ রক্তচাপ ও মাথাঘুরা রোগে যারা ভুগছেন তারা জলপাই খেলে উপকার পাবেন। আচার বানিয়ে জলপাই সংরক্ষণ করা যায়।
জাম্বুরা
অতি পরিচিত ফল। জাম্বুরার খোসা বেশ পুরু, ভেতরের অংশ ফোমের মতো নরম। শীতের আগে থেকে জাম্বুরা পাওয়া যায়। এ ফলে আছে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি। নিয়মিত খেলে শীতকালীন রোগব্যাধি সহজে কাবু করতে পারে না।
রসালো এই ফল জ্বর কমাতে সাহায্য করে। সর্দি জ্বরে তেল ও মরিচ দিয়ে জাম্বুরা মেখে খেলে কম সময়ের মধ্যে আরাম বোধ হয়।
চালতা চালতা
চালতা
এই ফলে আছে ভিটামিন সি। আঁশও আছে পর্যাপ্ত। লবণ, মরিচ দিয়ে মাখানো চালতা জিভে জ্বল নিয়ে আসলেও এর গুণ অনেক। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা তারা এ ফল খেতে পারেন। খাবারে আঁশ হজমে সহায়ক। হজমশক্তিকে বাড়িয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে।
চালতার টক বানিয়ে খেলেও উপকার হয়।
আচার বানিয়ে চালতা অনেকদিন সংরক্ষণ করা যায়।