প্রতি মুহূর্তের সারা বিশ্বের সব খবর পেতে সবচেয়ে কাছের মাধ্যম ইন্টারনেট। এখন ইন্টারনেট ব্যবহার শুধু বাসার কম্পিউটারে সীমাবদ্ধ নয়, বরং হাতের মুঠোয় থাকা ফোনেও ব্যবহার করা যায়, আবার সব খবরও পাওয়া যায়।
ইন্টারনেটে থাকা এবং বেশিগতির ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য ভালো ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন। বাসার কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপে চাইলে দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। প্রয়োজন অনুসারে কিলো বিট পার সেকেন্ড (কেবিপিএস) অথবা মেগা বিট পার সেকেন্ড (এমবিপিএস) গতির ইন্টারনেট সংযোগ নিলে আপনার প্রয়োজনীয় সব কাজই করে নিতে পারেন। তবে মুঠোফোন কিংবা ট্যাবলেটের জন্য ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নয়। এ ক্ষেত্রে মুঠোফোন কিংবা ট্যাবলেট কম্পিউটারে যে মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সিম (সংযোগ) ব্যবহার করছেন তাদের বিভিন্ন প্যাকেজ ইন্টারনেট সংযোগ নিতে পারেন। তবে এসব ক্ষেত্রে উপকারী হচ্ছে বহনযোগ্য রাউটার ব্যবহার করা। বর্তমানে থ্রিজি নেটওয়ার্ক সমর্থন করে এমন সিম ও রাউটার বাজারে পাওয়া যায়। এ ছাড়া ওয়াইম্যাক্স সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও বহনযোগ্য রাউটার বাজারে নিয়ে এসেছে। রাউটারে বড় সুবিধা হচ্ছে একই সঙ্গে একাধিক যন্ত্রে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় কোনো ধরনের প্লাগ এন প্লে সুবিধা ছাড়াই। এসব রাউটার পাঁচ হাজার থেকে শুরু করে দশ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে।
ব্রডব্যান্ডের ক্ষেত্রে তারের সংযোগ বড় একটি সমস্যা অনেকের কাছে। কিউবির ব্র্যান্ড ও যোগাযোগ বিভাগের প্রধান তাসনিম আইয়ুব জানান, ‘চাইলে আপনি বাসাতেও দ্রুতগতির ওয়াইফাই সেবা ব্যবহার করতে পারেন। অর্থাৎ পুরো বাসা ওয়াইফাই ইন্টারনেটের আওতায় নিয়ে এলে এ সংযোগের মাধ্যমেই আপনার বাসায় থাকা কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মুঠোফোন, ট্যাবলেট সবই ব্যবহার করা যাবে।’ ল্যাপটপের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপযোগী হচ্ছে মডেম। বিভিন্ন মোবাইল, ওয়াইম্যাক্স সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সহজে ব্যবহার উপযোগী মডেম রয়েছে। যদি আপনাকে নিয়মিতভাবে ঢাকার বাইরে যেতে হয় সে ক্ষেত্রে গ্রামীণফোন, সিটিসেল, বাংলালিংক, রবি, এয়ারটেলের মডেমসহ ইন্টারনেট সংযোগ নিতে পারেন। বর্তমানে অনেক বিভাগীয় শহরে বিভিন্ন মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় প্রজন্মের (থ্রিজি) দ্রুতগতির মোবাইল ইন্টারনেট সুবিধা চালু হয়েছে। চাইলে আপনি এসব প্রতিষ্ঠানের থ্রিজি গতির ইন্টারনেট সংযোগও নিতে পারেন। এ সংযোগ যেসব এলাকায় থ্রিজি রয়েছে সেখানে থ্রিজি সেবা এবং অন্য স্থানে সাধারণ টুজি গতির ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাবে। থ্রিজি সেবা পেতে বিভিন্ন মেয়াদের ইন্টারনেট প্যাকেজ নিতে পারেন। রয়েছে এক ঘণ্টা, তিন দিন, পাঁচ দিন, ১৫ দিন, ৩০ দিনের প্যাকেজ। আবার চাইলে ভলিউম অনুযায়ীও প্যাকেজ কিনতে পারবেন। এসব প্যাকেজ অপারেটর অনুযায়ী পাওয়া যাবে ৫০ থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকার মধ্যে। বিভিন্ন অপারেটরের থ্রিজি প্যাকেজের বিস্তারিত সেবা নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
সাধারণত ৫০০-১০০০ টাকা মাসিক খরচের মধ্যে ব্রডব্যান্ড সংযোগ পাওয়া যায়। এ বিষয়টি নির্ভর করে আপনি কত কেবিপিএস কিংবা এমবিপিএসের সংযোগ নিচ্ছেন এবং কতটুকু পরিমাণ ব্যবহার করবেন।
এ ছাড়া ওয়াইম্যাক্স মডেম কিনে ৫০০-১০০০০ টাকার মধ্যে পছন্দসই প্যাকেজ নিতে পারেন। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী প্রিপেইড কিংবা পোস্টপেইড ওয়াইম্যাক্স সংযোগও নিতে পারবেন। বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে থ্রিজি সেবা দিচ্ছে টেলিটক। টেলিটকের মডেম কিনেও চাইলে নির্দিষ্ট এক হাজার টাকার মধ্যে থ্রিজি সংযোগ ব্যবহার করতে পারেন। থ্রিজি প্যাকেজের অনেকগুলো ডেটা প্ল্যান রয়েছে। পছন্দসই যেকোনো একটি নিতে পারেন। এর বাইরে মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোরও রয়েছে বিভিন্ন ডেটা প্যাকেজ। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোনো একটি নিয়ে নিতে পারেন। তবে যদি কারও অনেক বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রয়োজন হয় তাহলে বড় প্যাকেজ নিলে ভালো হয়। এ ছাড়া একই প্যাকেজ নিয়ে কম্পিউটার, মুঠোফোন কিংবা ট্যাবলেটে ব্যবহার করতে চাইলে বহনযোগ্য রাউটার নিয়ে নিতে পারেন। শুধু ল্যাপটপের জন্য হলে ওয়াইম্যাক্স অথবা মডেম ব্যবহার করতে পারেন।
