কম্পিউটারে সেট করা প্রোগ্রামের মতো মানুষের মস্তিষ্কেও কিছু মৌলিক শব্দ সেট করা থাকে। এসব শব্দ সংকেতের মাধ্যমে চিন্তার আলোকে পূর্ণাঙ্গ ভাষায় রূপান্তরিত হয়। মানুষের মস্তিষ্কের ওপর গবেষণা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুবিদ্যা বিভাগের একদল বিজ্ঞানী এ দাবি করেছেন। মস্তিষ্কে শব্দের গঠনের এ প্রক্রিয়ার রহস্য উদ্ঘাটনের ফলে একদিন বাক্প্রতিবন্ধীদেরও কথা বলানোর কৌশল বের করা সম্ভব হবে। তা ছাড়া মানুষের মন পড়াও সম্ভব হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করছেন।
গবেষকদলের প্রধান এরিক লুথার্ড বলেন, বিদ্যুৎপ্রবাহ ব্যবহার করে তাঁরা মানুষের মস্তিষ্কের একটি অংশে ৪০টি বা তার বেশি মৌলিক শব্দ সৃষ্টি হতে দেখেছেন। এসব শব্দ মিলে ইংরেজি ভাষার পুরো ভাণ্ডার সৃষ্টি হয়।
এরিক লুথার্ড আরো বলেন, চারজন মৃগীরোগীর ওপর তাঁরা গবেষণা চালান। তাদের প্রথমে ‘ওও’, ‘আহ’, ‘ইহ্’ এবং ‘ইই’ চারটি শব্দ উচ্চারণ করতে বলা হয়। তখন গবেষকরা ওই চার ব্যক্তির মস্তিষ্কের একাংশে চারটি সংকেত সৃষ্টি হতে দেখেন। ওই সংকেতগুলো শনাক্ত করার মাধ্যমে তাঁরা দেখতে পান, সেগুলো দিয়ে কিছু বাক্য গঠন হয়। কিন্তু ইংরেজি ভাষার পুরো শব্দ সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। এভাবে ৬৪টি বিদ্যুৎপ্রবাহ ব্যবহারের মাধ্যমে তাঁরা পরীক্ষণপাত্রদের মস্তিষ্কে ৪০টি বা তার বেশি মৌলিক শব্দ আবিষ্কার করেন।
গবেষকরা বলেন, কম্পিউটারে সেট করা নির্দিষ্ট প্রোগ্রাম তার ওই সীমাবদ্ধতার মধ্যেই ফলাফল দেওয়ার চেষ্টা করে। মানুষের মস্তিষ্কের শব্দগুলোও যেকোনো প্রত্যাশার বা চিন্তার একটা ধারণা দাঁড় করাতে পারে এবং বিকল্প পথ বাতলে দেয়। অর্থাৎ মস্তিষ্কে শব্দ-সংকেত পেঁৗছামাত্র এসব শব্দ একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চিন্তার রূপান্তর ঘটায়। তবে গবেষকরা বলছেন, মানুষের মস্তিষ্কের এ প্রক্রিয়ার বিষয়টি অনেক জটিল এবং এর বিস্তারও অনেক। বর্তমান গবেষণায় তাঁরা সামান্য ধারণা নিতে পেরেছেন মাত্র। ভবিষ্যতে এ নিয়ে আরো বিচিত্র তথ্য দিতে পারবেন বলে তাঁরা আশা প্রকাশ করছেন।
সূত্রঃ:দেহ:: জীবনের ঠিকানা।