মহাশূন্যের গভীরে সৌরজগতের বাইরে থেকে প্রথমবারের মতো অতিপারমাণবিক নিউট্রিনো কণা আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে জ্যোতির্বিদ্যায় নতুন একটি যুগের সূচনা হয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন। তাঁদের আশা, পরমাণুর চেয়েও ক্ষুদ্রতর এই কণার সাহায্যে দূরবর্তী অঞ্চলে সংঘটিত বিভিন্ন মহাজাগতিক ঘটনার (যেমন: নক্ষত্রের বিস্ফোরণ ও কৃষ্ণগহ্বর) ব্যাপারে নতুন নতুন তথ্য জানা সম্ভব হবে।
অ্যান্টার্কটিকার বরফ আবরণের এক মাইল গভীরে স্থাপিত অতিমাত্রায় সংবেদনশীল পর্যবেক্ষণযন্ত্রের মাধ্যমে সৌরজগতের বাইরে ওই উচ্চশক্তিসম্পন্ন নিউট্রিনোর উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। এই অতিপারমাণবিক কণা মহাশূন্যের গভীর থেকে সাধারণত পৃথিবীর মতো বস্তুর মধ্য দিয়ে সরাসরি চলে যায়।
তবে অ্যান্টার্কটিকার আইসকিউব গবেষণাগারে কর্মরত বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, ২০১১ সালে কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত তাঁরা ২৮টি নিউট্রিনোর আলোকচ্ছটার উপস্থিতি সম্পর্কে এবার নিশ্চিত প্রমাণ পেয়েছেন। এখন নিউট্রিনো শনাক্তকরণে নতুন ধরনের দূরবীক্ষণযন্ত্র (টেলিস্কোপ) ব্যবহারের চেষ্টা চলছে। কারণ, সাধারণ টেলিস্কোপে সব রকম মহাজাগতিক ঘটনা পর্যবেক্ষণের সুযোগ নেই।
এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে সায়েন্স সাময়িকীতে। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গ্রেগরি সুলিভান বলেন, নিউট্রিনো জ্যোতির্বিদ্যার যুগ কেবল শুরু হলো। নিউট্রিনোর বিভিন্ন উৎস এবং এসব অতিপারমাণবিক কণার ত্বরণের উৎস নিয়ে রহস্য অন্তত ১০০ বছর ধরে অমীমাংসিত রয়েছে। এখন বিজ্ঞানীদের হাতে একটি উপকরণ এসেছে যা দিয়ে নিউট্রিনো পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জ্যোতিপদার্থবিদ্যার প্রভূত উন্নয়নের দিগন্ত উন্মোচন করা যাবে।
আইসকিউব গবেষণাগারে ১১টি দেশের ২৬০ জন বিজ্ঞানী কাজ করছেন। মহাশূন্যের গভীর থেকে এসে আমাদের শরীরের ভেতর দিয়ে লাখ লাখ নিউট্রিনো নিয়মিত প্রবাহিত হচ্ছে। উচ্চশক্তিসম্পন্ন এসব কণার উপস্থিতি সাধারণ অবস্থায় আমরা টেরই পাই না। গার্ডিয়ান।