এই ডিসেম্বরে চীন চাঁদের উদ্দেশ্যে তাদের মহাশূন্যযান উৎক্ষেপণ করতে যাচ্ছে। এই প্রথমবারের মত চীনের কোন মহাশূন্যযান পৃথিবীর বাইরে কোন স্থানে অবতরণ করতে যাচ্ছে, যদি সফলভাবে সব কিছু সম্পন্ন হয়। চীনের কর্মকর্তারা গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানান।
সব পরিকল্পনা ঠিকভাবে এগুলে চীনের এই চন্দ্রযান ডিসেম্বরের মাঝামাঝি নাগাদ চাঁদে অবতরণ করবে আশা করা হচ্ছে। State Administration of Science, Technology and Industry for National Defence (SASTIND) এর উ ঝিয়ান তাই এই অভিযানের ব্যপারে আশাবাদী। ‘জিনহুয়া’র দেয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, Chang'e-3 নামে এই মহাশূন্যযানে আছে একটি ল্যান্ডার ও একটি রোভার যার নাম দেয়া হয়েছে Yutu(jade rabbit)। ইউটু’র কাজ হবে চাঁদের ভৌগলিক বৈশিষ্ট্য ও এর পৃষ্ঠের উপাদান সংক্রান্ত জরিপ পরিচালনা এবং চাঁদের প্রাকৃতিক সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান চালানো। চীনের চন্দ্রমিশনের প্রধান বিজ্ঞানী Ouyang Ziyuan জিনহুয়া’কে এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য দেন।
ইউটু চাঁদের সিনাস ইরিডাম বা রঙধনুর সাগরে (bay of rainbows) অবতরণ করবে। এরপর এটি টানা তিন মাস চাঁদের বুকে এর কাজ করে যাবে। এটির গতি ঘণ্টায় ২০০ মিটার। ইউটু’র অবতরণের জন্য ‘বে অব রেইনবো’কে বেছে নেয়ার কারণ হচ্ছে এই স্থানটি বেশ আলোযুক্ত ও যোগাযোগের জন্য মসৃণ। এর আগের চন্দ্রমিশনগুলো চাঁদের নিরক্ষরেখা বরাবর পরিচালিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত চাঁদের ‘বে অব রেইনবো’ স্থানটি নিয়ে কোন গবেষণা পরিচালিত হয় নি।
Chang'e-3 মিশন চীনের চন্দ্রমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের অভিযান। এর আগে ২০০৭ ও ২০১০ সালে চীনের Chang'e-1 ও Chang'e-2 মিশন দুটিও সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছিল। এবারের Chang'e-3 মিশনের মাঝে আছে এই মহাশূন্যযানের চাঁদের কক্ষপথে অবস্থান নেয়া, চাঁদে অবতরণ ও পৃথিবীতে ফিরে আসা। তবে মূল চ্যালেঞ্জের বিষয় হচ্ছে মহাশূন্য অভিযানের ক্ষেত্রে চীন প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অনেক নতুন প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে। এই মিশনে ব্যবহৃত শতকরা ৮০ ভাগের বেশি প্রযুক্তি সম্পূর্ণ নতুন। মহাশূণ্যযানটি অবতরণের পর এর রোভার যান চাঁদের বুকে তার অভিযান শুরু করবে।
নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে চীনের এই চন্দ্রাভিযানের ফলাফল কি হয় সেটি দেখার জন্য অপেক্ষা করে আছেন বিজ্ঞানীরা।