চলে গেলেন ডিএনএর জনক ফ্রেডরিক স্যাঙ্গার
যুক্তরাজ্যের কিংবদন্তি প্রাণরসায়নবিদ, ডিএনএর (বংশলতিকা) জনক ও দুইবার নোবেল পুরস্কারজয়ী বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক সেঙ্গার বুধবার ৯৫ বছর বয়সে মারা গেছেন। বিশাল কর্মপরিধি ও রসায়ন জগতের জটিল সব আবিষ্কারের জন্য সহকর্মীদের কাছে তিনি ‘সর্বকালের সেরা বিজ্ঞানী’ এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানের ‘রিয়েল হিরো’ নামে পরিচিত ছিলেন।
বিজ্ঞান প্রজন্মে ‘জাত বীর’ হিসেবে পরিচিত এই কিংবদন্তি পুরুষের জন্ম ১৯১৮ সালের ১৩ আগস্ট ইংল্যান্ডের গ্লুচেস্টারশায়ার শহরে। বালক বয়স থেকে চিকিৎক বাবাকে অনুসরণ করেন তিনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে তার কাছে প্রিয় হয়ে ওঠে রসায়নবিদ্যা। তাই স্নাতক ভর্তি হন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে। ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন ১৯৪৩ সালে।
পুষ্টি জগতের প্রোটিনের গঠনের ইতিবৃত্ত আসে ড. ফ্রেডিরিখের গবেষণা ও চিন্তার সূত্র ধরে। প্রোটিনের রাসায়নিক রূপ দাঁড় করানোর জন্য ১৯৫৮ সালে প্রথমবার নোবেল পান তিনি। প্রজন্ম চিহ্নিতকরণে বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত ডিএনএ টেস্ট পদ্ধতি। ডিএনএর গাঠনিক রূপ নিয়ে তার তত্ত্বটি ‘সেঙ্গার সিকিউয়েন্স’ নামে পরিচিত, যা বর্তমানে ডিএনএ টেস্টে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর জন্য ১৯৮০ সালে আবারো নোবেল পান ফ্রেডরিখ। ওই যুগান্তকারী তত্ত্বের জন্য ‘ফাদার অব জেনমিকস’ উপাধিতে ভূষিত হন তিনি।
ফ্রেডরিকের পাওয়া পুরস্কারগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিলো ব্রিটেনের সর্বোচ্চ পুরস্কার অর্ডার অব মেরিট (১৯৮৬) পুরস্কার। ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের নাইট উপাধির জন্যও তাকে নির্বাচিত করা হয়। তবে নিজের নামের পাশে স্যার শব্দটি যোগ করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করতেন না বলে সেই পুরস্কারটি নেননি এই বিজ্ঞানী।
২০ নভেম্বর রাতে এই বর্ষীয়ান রাসায়নবিদের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছে বিবিসি, গার্ডিয়ানসহ বিশ্বগণমাধ্যম। তবে প্রকাশিত তাৎক্ষণিক খবরে তার মৃত্যুর সময় ও অবস্থানের কথা উল্ল্যেখ করা হয়নি। খবরে কেবল প্রকাশ করা হয়েছে এই কীর্তিমানের অবদান ও স্বীকৃতির স্মারক। এদিকে বিবিসি জানিয়েছে, ফ্রেডরিক দুইবার নোবেল পাওয়া একমাত্র ব্রিটিশ এবং রসায়নে দুইবার নোবেল পাওয়া পৃথিবীর একমাত্র বিজ্ঞানী।
সম্মাননা
ফেলো অব দ্য রয়েল সোসাইটি - ১৯৫৪
কমান্ডার অব দ্য অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার - ১৯৫৩
অর্ডার অব দ্য কম্প্যানিয়ন্স অব অনার - ১৯৮১
অর্ডার অব মেরিট (কমনওয়েলথ) - ১৯৮৬
রয়েল মেডেল - ১৯৬৯
কপলি মেডেল - ১৯৭৭
এক নজরে ফ্রেডরিক স্যাঙ্গার
জন্ম: ১৩ আগস্ট ১৯১৮ (বয়স ৯৫) ইংল্যান্ড, যুক্তরাজ্য
জাতীয়তা: ব্রিটিশ
কর্মক্ষেত্র: প্রাণরসায়ন
প্রতিষ্ঠান: কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়,
প্রাক্তন ছাত্র: কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণ: ইন্সুলেনের অ্যামিনো এসিড সিকুয়েন্স, ডিএনএ সিকুয়েন্সিং-এর ডিডিঅক্সি
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার রসায়নে নোবেল পুরস্কার (১৯৫৮)
রসায়নে নোবেল পুরস্কার (১৯৮০)
সূত্র: বিবিসি, গার্ডিয়ান, উইকিপিডিয়া