চিপস হতে পারে ক্যান্সারের কারণ!
দোকানে থরে থরে সাজানো রঙিন ঝলমলে চিপস এর প্যাকেট দেখলে লোভ লাগাই স্বাভাবিক। আকর্ষনীয় প্যাকেট ও মজাদার স্বাদের কারণে চিপস অনেকেরই প্রিয় একটি খাবার। বিশেষ করে চিপসের প্রতি শিশুদের আকর্ষণ অনেক বেশি। সব খাবার বাদ দিয়ে চিপস খেতে বেশি ভালোবাসে তারা। এই নিয়ে অধিকাংশ অভিভাবকরাই বেশ বিরক্ত। আবার অনেক অভিভাবক সন্তানের হাতে শখ করে চিপসের প্যাকেট তুলে দেয়। ফলে সন্তানেরও চিপস খাওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে।
চিপস খেতে মজা ও দেখতে লোভনীয় হলেও চিপস হয়ে উঠতে পারে মরণ ব্যাধি ক্যান্সারের কারণ। সম্প্রতি গবেষকরা এমনই একটি তথ্য দিয়েছেন।
ডক্টর জরগেন স্ক্লান্ডট এর মতে চিপসে বিপদজ্জনক মাত্রার অ্যাক্রিলামাইড পাওয়া গিয়েছে যা অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের ফুড সেফটির হেড ডক্টর স্ক্লান্ডট জেনেভায় একটি জরুরী মিটিং ডেকে এই কথা বলেন। ব্রিটেন, সুইডেন, নরওয়ে, জার্মানী ও সুইজারল্যান্ডের গবেষকদের একটি দল বিষয়টি নিয়ে গবেষনা করেন এবং গবেষনার ফল প্রকাশ করেন। গবেষকরা আলুর চিপস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ব্রেকফাস্ট সিরিয়ালে উচ্চ মাত্রায় অ্যাক্রিলামাইডের উপস্থিতি পেয়েছে যা খুবই বিপদজনক। যেসব খাবার উচ্চ তাপমাত্রায় অধিক সময় ধরে প্রস্তুত করা হয় সেগুলোতে অ্যাক্রিলামাইডের উপস্থিতি বেশি পাওয়া যায় বলে জানা গিয়েছে।
অ্যাক্রিলামাইড বিভিন্ন ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী উপাদান। কিন্তু এই বছরের এপ্রিল মাসের আগেও বিজ্ঞানীদের ধারনাই ছিলো না যে অ্যাক্রিলামাইড রান্নার পদ্ধতির কারণে উৎপন্ন হয়ে থাকে।
বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫জন গবেষক ও খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন খাবারের উপর তিন দিন গবেষনা চালিয়ে ও আলাপ আলোচনা করে এই গবেষণাটি করেন। বিজ্ঞানীরা খাবার প্রস্তুতকারী ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকারীদের সাথে অ্যাক্রিলামাইড কমিয়ে কি করে খাবার প্রস্তুত করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন।
ডক্টর স্ক্লান্ডট বলেন যে অ্যাক্রিলামাইড বিশ্বের বহু মানুষের ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী একটি উপাদান। এটি একটি জেনোটক্সিক উপাদান। অর্থাৎ এটি শরীরের জেনেটিক্সে কিছু পরিবর্তন করে এবং ক্যান্সার সৃষ্টি করে। জরিপে দেখা গিয়েছে যে প্রায় ৩০%-৪০% ক্যান্সারের ক্ষেত্রেই অ্যাক্রিলামাইডের সম্পৃক্ততা পাওয়া গিয়েছে। বর্তমান সময়ে গ্রহণ করা অ্যাক্রিলামাইডের প্রভাব আজ থেকে বহু বছর পরেও পড়তে পারে। যত বেশি অ্যাক্রিলামাইড গ্রহণ করা হবে তত বেশি ঝুঁকি বাড়বে।
তেলে ভাজা, বেকিং, গ্রিল কিংবা রোস্ট করার ক্ষেত্রে অ্যাক্রিলামাইড বৃদ্ধি পায়। তবে ভাজি ও বেক করা খাবারে অ্যাক্রিলামাইডের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তবে খাবার সেদ্ধ করার সময় অ্যাক্রিলামাইড বৃদ্ধি পায় না। ব্রিটেনের ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সির গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ও আলুর চিপসে ৩১০ পার্ট পার বিলিয়ন অ্যাক্রিলামাইড এর উপস্থিতি পাওয়া যায়।