দাঁতের ৩টি সমস্যা ও প্রতিরোধের সহজ উপায়
আপনার মুখের সৌন্দর্যকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয় একটুকরো সুন্দর হাসি। তবে সুন্দর হাসির অধিকারী হতে গেলে দাঁতের নিয়মিত যত্ন নিতে হবে অবশ্যই। নিয়মিত যত্ন না নিলে দেখা দিতে পারে দাঁতে ক্যাভিটি, মুখের আলসার, এমনকি মুখের ক্যানসারও। তাই দাঁত, মাড়ি বা মুখের ভেতরের যে কোনও ছোট বড় সমস্যাকে অবহেলা করা উচিত নয়। সময়মত চিকিৎসা না করালে বা নিয়মিত দাঁতের যত্ন না নিলে আপনার মুখের সুন্দর হাসি মলিন হতে সময় লাগবে না বিশেষ। আসুন, আজ জেনে নেই দাঁতের কিছু সাধারন সমস্যা ও দাঁতের যত্ন সম্পকে।
দাঁতের কিছু সাধারন সমস্যাঃ
আমাদের দাঁতে সাধারণত তিন ধরনের সমস্যা দেখা যায়-
১) নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ
২) মাড়ি থেকে রক্ত
৩) দাঁতে ক্যাভিটি
ভালোভাবে দাঁত ব্রাশ না করলে মাড়িতে খাদ্য কনা জমে থাকে,ফলে দাঁতের এই সাধারন সমস্যাগুলো দেখা দেয়। আমাদের মুখের ব্যাকটেরিয়া খাবার খাওয়ার পর প্লাক তৈরি করে। যাদের দাঁত আঁকাবাঁকা তাদের দাঁতে প্লাক জমার পরিমান আরও বেশি হয়। এছাড়া অধিক পরিমানে মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে মুখের ভেতর থাকা ব্যাকটেরিয়া এক ধরনের অ্যাসিড তৈরি করে। এর কারনে দাঁতে ক্যাভিটি দেখা দেয়। এই ক্যাভিটি যখন বাড়তে বাড়তে নার্ভে গিয়ে পৌছায়, তখনই দাঁতের গোঁড়ায় অসহ্য ব্যথা শুরু হবে। অনেক সময় আমাদের দাঁতের ছোট্ট কিছু অংশ ভেঙ্গে যায়। সেই ভাঙ্গা দাঁতের থেকে মুখে বা জিভের কোন জায়গায় বারবার ঘষা লাগলে সেটি থেকে মুখে আলসার দেখা দিতে পারে। মনে রাখবেন, এই ধরনের সমস্যা অবহেলা করলে ভবিষ্যতে ক্যানসার হবার সমূহ সম্ভাবনা।
প্রতিরোধের উপায়-
-দিনে কমপক্ষে ২ বার মাঝারি ব্রিসলের ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজতে হবে। একবার সকালে নাস্তার পরে ও আরেকবার রাতে ঘুমের পূর্বে। রাতে ব্রাশ করার পর আর কিছু খাবেন না।
-তিন মাস অন্তর অন্তর ব্রাশ বদল করতে হবে।
-নিয়মিত দাঁত ফ্লস করুন, এতে করে দাঁতে খাদ্য কণা আটকে থাকবে না।
-যেসব খাবার ও পানীয়তে চিনির পরিমান বেশি থাকে সেগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। মিষ্টি খাবার খাওয়া হলে ভালো করে কুলি করে নিন। এছাড়া যেসব পানীয়তে অ্যাসিডের পরিমান বেশি থাকে সেগুলো কম খাওয়াই ভালো। যেমন- কোল্ড ড্রিংকস, প্যাকেটজাত জুস। এতে দাঁতের ক্ষয় কম হবে।
-রশুন দাঁতের জন্য দারুন উপকারী। রশুন দাঁতের ইনফেকশন প্রতিরোধ করে। খাদ্য তালিকায় নিয়মিত কাঁচা রসুন বা রসুনের আচার রাখতে পারেন।
-ধূমপান করা থেকে বিরত থাকুন। কারন ধূমপানের ফলে দাঁতে দাগ ও মুখে বাজে গন্ধের সৃষ্টি হয়। এছাড়া মুখের ক্যানসারের অন্যতম কারণও হলো ধূমপান।
-পান মশলা ও সুপারি থেকেও ঠোঁটের ও জিভের ক্যানসার হত পারে ।এইজন্য এইগুলো খাবার অভ্যাস পুরোপুরি ত্যাগ করুন ।
-দাঁত ব্রাশ করার সময় মাড়ি থেকে সহজেই রক্ত বের হলে এখনই সচেতন হন ও ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সমস্যা বেশি বাড়ার আগেই চিকিৎসা করিয়ে নেয়া ভালো।
-মুখের ভেতরে সাদা বা লাল রঙের ক্ষত দেখা দিলে দেরী না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এইরকম কোনো লক্ষন থাকলে আপনার মুখে আলসার আছে কিনা তা একমাত্র চিকিৎসকই বলতে পারবেন।
-দাঁতের সমস্যা প্রতিরোধ করার সব চাইতে ভালো উপায় হলো নিয়মিত দাঁতের ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া।