জাতীয় লিগে খুলনার হয়ে ঢাকা মহানগর দলের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেছিলেন ২০১২-এর নভেম্বরে। এর ১৪ মাস পর আজ বিসিএল দিয়ে আবারও দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে ফিরছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে আপাতত টেস্টে ফেরার ইচ্ছা তাঁর নেই
কতটা প্রস্তুত দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে ফেরার জন্য?
মাশরাফি বিন মুর্তজা: প্রস্তুতি খারাপ না। শারীরিকভাবে ভালো অবস্থায় আছি। তবে সাদা পোশাক-লাল বলে খেলার ব্যাপারটা আলাদা। সেই প্রস্তুতি নেই বললেই চলে।
হাঁটুর সর্বশেষ অবস্থা কী?
মাশরাফি: এই সমস্যা আসলে কখনোই পুরোপুরি যাবে না। আমার কাজ হচ্ছে যতটুকু সম্ভব নিজেকে ফিট রাখা। সেটাই রাখছি। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।
শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগে বিসিএলে দুটো ম্যাচ হবে। দুটোই খেলবেন?
মাশরাফি: আপাতত প্রথম ম্যাচটা খেলব। এটা খেলে দেখি কেমন বোধ করি। পরের ম্যাচে খেলব কি না, সেই সিদ্ধান্ত পরে।
ম্যাচ খেললেও পুরো সামর্থ্যে বল করবেন? এক স্পেলে সর্বোচ্চ কত ওভার বল করতে পারবেন?
মাশরাফি: এমন না যে এই ম্যাচগুলো আমি টেস্ট খেলার জন্য খেলছি। আপাতত যেহেতু অন্য কোনো খেলা বা অনুশীলন নেই, সে জন্য নিজেকে খেলার মধ্যে রাখার জন্য খেলব। সে ক্ষেত্রে বোলিংটা নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাচ্ছি। তিন সেশনে হয়তো তিনটার বেশি স্পেল করব না।
এত দিন পর দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেট খেলতে গিয়ে কোনো ভয় কাজ করছে?
মাশরাফি: খেলবই যখন, ভয় পেয়ে কী হবে? সে রকম ভয়-টয় আগে থেকে কাজ করে না। তবে বেশি চাপ পড়লে খেলার মধ্যে অনেক সময় অবচেতনে ভয়টা আসে। মানসিকভাবে শক্ত থেকে সেটাকে দূর করার চেষ্টা করি।
২০০৯ সালে সেন্ট ভিনসেন্টে যখন চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লেন, তখন কি ভেবেছিলেন টেস্ট ক্যারিয়ারটা ওখানেই শেষ?
মাশরাফি: ওই চোটটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় নেগেটিভ টার্নিং পয়েন্ট। বল ডেলিভারির ঠিক আগে ল্যান্ড করতে গিয়ে মানসিকভাবে ভীষণ ভেঙে পড়েছিলাম। সুস্থ হওয়ার ছয় মাস পরও বল করার সাহস হতো না। মনে হতো, বল করার জন্য লাফ দিলেই আবার ব্যথা পাব। শুধু টেস্ট না, আমার পুরো ক্যারিয়ারটাই শেষ হয়ে যেতে বসেছিল আসলে।
টেস্টে ৩০০ উইকেটের স্বপ্ন দেখতেন শুরুর দিকে। সেটা হয়তো আর হবে না...
মাশরাফি: ৩০০ উইকেট নিয়ে আর ভাবি না। ওটা মনে হলে এখন লজ্জাই পাই। যতবার চোট কাটিয়ে ফিরেছি, এই টেস্ট খেলতে গিয়েই আবার মাঠ থেকে ছিটকে গেছি। এখন একটা জিনিসই চাই—যাই খেলি, দলের জন্য যেন কিছু করতে পারি।
প্রথম টেস্টে ৪ উইকেট পাওয়ার পর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক হিসাব নিকাশ করেছিলেন...মনে আছে?
মাশরাফি: তখন অনেক স্বপ্ন দেখতাম। একেকটা টেস্টে কয়টা করে উইকেট নেব—সেই টার্গেট করে করে এগোবো। দিন যত গেছে, চোট যত পেয়েছি, এসব চিন্তাও দূরে সরে গেছে। এখন কিছুই খারাপ লাগে না। খেলা ভালোবাসি তাই খেলি।
২০১৪ সালে টেস্টে ফিরতে চান—এমন একটা কথা বলেছিলেন গত বছর...
মাশরাফি: আমি বললেই তো হবে না। আমাকে আগে খেলার মতো অবস্থায় আসতে হবে। সামনে শ্রীলঙ্কা সিরিজ, আমি মনে করি এই সিরিজে ফেরার আমার কোনো সুযোগই নেই। নির্বাচকদের চিন্তা-ভাবনা কী জানি না, আমারটা তো আমাকেই বলতে হবে। টেস্টে ফিরলেই তো শুধু হবে না, পারফরম করতে হবে।
টেস্ট ক্যারিয়ার নিয়ে কী ভাবছেন?
মাশরাফি: দেখেন বাংলাদেশ বছরে ৪-৬টা টেস্ট খেলে। এটা আমার জন্য ইতিবাচক। একটা সিরিজ খেলার পর নিজেকে আবার প্রস্তুত করার সুযোগ পাব। তবে তার আগে প্রতিদিন আমাকে অন্তত ১৮ ওভার বল করার সামর্থ্য অর্জন করতে হবে। টেস্টে কখনো কখনো দিনে ২০-২২ ওভার বলও করতে হয়। সে অবস্থায় যেতে হবে।