অন্য প্রাণিকুল থেকে ঠিক যে যে বৈশিষ্ট্যের কারণে মানুষকে আলাদা করা যায়, তার একটি হলো ভাষা। প্রাণীরা নিজেদের ভাব বিনিময়ে বিভিন্ন ধরনের অঙ্গভঙ্গি বা ডাক ব্যবহার করলেও এগুলোর একটিও স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে গড়ে ওঠেনি। অথচ এক মানবপ্রজাতিই কত না ভাষায় কথা বলে। সেসব ভাষার আবার কত ধরনের প্রকৃতি। কিন্তু এ ভাষাগুলো কি মানুষের জন্মগত প্রবৃত্তি, নাকি চলমান সামাজিক প্রক্রিয়া- তা নিয়ে ছিল দ্বিধাবিভক্তি। এবার কি কিছুটা আলো মিলল?
যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে অবস্থিত নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দাবি, তাঁরা শিশুদের ভাষা শেখার প্রবণতার ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখেছেন, প্রত্যেকটি শিশু মাতৃভাষায় কথা বলার দক্ষতা নিয়েই জন্মায়। অর্থাৎ, ভাষার পদাংশ বা সিলেবলের সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে বংশগতির মাধ্যমেই। ফলে মাতৃভাষায় সে অতি দ্রুত পারদর্শী হয়ে ওঠে।
নিকট-অবলোহিত বর্ণালিবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে গবেষকরা শিশুদের মস্তিষ্কের ওপর বিভিন্ন শব্দের প্রভাব পরীক্ষা করে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছান। তাঁরা আরো জানিয়েছেন, বংশগতির প্রভাবের কারণেই শিশু শ্রুতিমধুর এবং কর্কশ শব্দের পার্থক্য ধরতে পারে এবং সে অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। সাধারণত প্রতিটি ভাষার পদাংশে এক ধরনের প্রাথমিক মিল থাকে। পরে সামাজিক রীতিনীতি, চর্চা এবং আর্থ-সামাজিক নানা কারণে ভাষায় পরিবর্তন সাধিত হয়। কিন্তু প্রাথমিক অংশে মিল থাকায় তা শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশের সময়ই ভাষাবিষয়ক জ্ঞানে সহায়তা দেয়। একই গবেষণার অন্য একটি অংশে দেখা গেছে, যারা মাতৃভাষার বাইরে এক বা একাধিক ভাষায় পারদর্শী, তাদের মস্তিষ্ক অন্যদের তুলনায় বেশি কার্যকর। সূত্র : ডেইলি মেইল।