বিশ্বকাপ অভিজ্ঞতা বলছেন রোনালদো ‘২০০২ সালে ব্রাজিল ছিল অসাধারণ’

Author Topic: বিশ্বকাপ অভিজ্ঞতা বলছেন রোনালদো ‘২০০২ সালে ব্রাজিল ছিল অসাধারণ’  (Read 813 times)

Offline maruppharm

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1227
  • Test
    • View Profile
১৯৯৪ সালে ২৪ বছর পর বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছিল ব্রাজিল। সেই স্কোয়াডে থাকা ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর সেদিন প্রাণভরে উপভোগ করেছিল বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ। একটি ম্যাচেও মাঠে নামা না হলেও বিশ্বকাপ জয় আসলে কী সপ্তদশী সেই কিশোর সেটা খুব ভালোভাবেই বুঝে গিয়েছিল।

হ্যাঁ, রোনালদোর কথাই বলা হচ্ছে। ৯৪’র বিশ্বকাপ ফাইনালের পর ব্রাজিলীয় ফুটবলারদের আনন্দ অভিসারের ছবিগুলোতে ফাঁকে-ফোকরে আবিষ্কার করা যায় তাঁকে। ‘বড়’দের আনন্দের ফাঁকে সেদিনই যেন রোনালদোর প্রতিজ্ঞাটা করা হয়ে গেছে। মাঠে খেলে দেশকে বিশ্বকাপ জেতাতে হবে। দেশের বিশ্বকাপ জ েরাখতে হবে অনন্য ভূমিকা। দেশের বিশ্বকাপ জয়ে অবদান রেখে পরিণত হতে হবে কিংবদন্তিতে। পরের দুটো বিশ্বকাপে সেই প্রতিজ্ঞার কথা বুকে নিয়েই যেন রোনালদো খেললেন। আটানব্বইয়ের বিশ্বকাপ জয়ের খুব কাছাকাছি চলেও গিয়েছিলেন।

কিন্তু ফাইনালে তাঁর দল ফ্রান্সের কাছে ৩-০ গোলে হেরে রোনালদোর সেই স্বপ্ন পূরণ হতে দেয়নি। ২০০২ সালে রোনালদো যেন প্রতিজ্ঞাটা সাজালেন অন্যভাবে। নিজেকে তুলে ধরলেন অন্য উচ্চতায় নায়ক হয়েই জিতলেন বিশ্বকাপ। অথচ ২০০২ বিশ্বকাপের আগের সময়টা তাঁর জন্য ছিল ভয়াবহ দুঃসময়। সম্ভাবনাময় ফুটবল ক্যারিয়ারটার ইতিই ঘটে যাবে কিনা, সেই আশঙ্কাও জেগেছিল অনেকের মনে। ক্লাব ফুটবলে ইন্টার মিলানের হয়ে তিনটি মৌসুমে রোনালদো খেলতে পেরেছিলেন মাত্র ২৪টি ম্যাচ। ২০০০-০১ মৌসুমের একটি ম্যাচেও মাঠে নামতে পারেননি। সেই রোনালদোই ২০০২ সালের বিশ্বকাপে হয়েছিলেন ব্রাজিলের স্বপ্নসারথি। সাত ম্যাচে করেছিলেন আটটি গোল। ফাইনালে তাঁর জোড়া গোলের সুবাদেই পঞ্চমবারের মতো বিশ্বসেরার মুকুট পড়েছিল ব্রাজিল। কিসের প্রেরণায় এভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন? গল্পটা শুনুন বিশ্বকাপে ১৫ গোলের মালিকের মুখ থেকেই


‘হাঁটুর ইনজুরি আর বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচারের কারণে আমাকে ভালোই ভুগতে হয়েছে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকার কথা আমি মনে করতে পারি। যখন আমার হাঁটু দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছিল তখন সেটা দেখেই আমি শক্তি সঞ্চয়ের চেষ্টা করেছি।

আমার পরিবার, ফিজিও, ডাক্তার; সবাই আমাকে খেলা চালিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জুগিয়েছে। আর সেটা খুবই দরকারী ছিল। আমার ছেলে রোনাল্ডের জন্মও আমাকে ব্যথা সহ্য করার সাহস জুগিয়েছে।
আমার ইচ্ছাশক্তি খুবই প্রবল। ফুটবলের প্রতি আমার ভালোবাসাও কখনো ফুরাবার নয়। খেলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমি যে কোনো কিছুই সহ্য করতে পারি। আমি শুধু ফুটবল খেলিই না, ফুটবলেই আমি বাঁচি-মরি।

নিজের সর্বোচ্চ সেরা ফর্মে ফিরতে পারাটাই ছিল আমার লক্ষ্য। আমি চেয়েছি বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকার হতে। চার বছর আগের হতাশাজনক স্মৃতি মুছে ফেলার ইচ্ছা তো অবশ্যই ছিল।

২০০২ বিশ্বকাপের আগের কয়েকটি মাস আমি প্রতিদিনই ভাবতাম বিশ্বকাপ জয়ের কথা। প্রতি মুহূর্তেই আমি বিশ্বকাপ শিরোপাটা চোখের সামনে কল্পনা করতাম। ট্রফিটা তুলে ধরতে পারাটা কী অসাধারণ একটা অনুভূতি হবে, সেই চিন্তাতেই আমি বিভোর ছিলাম। সত্যিই ট্রফিটা হাতে নিয়ে দেখা, সেটাতে চুমু খাওয়ার অনুভূতিটা চমত্কার।

আমাদের দলটা ছিল খুবই দুর্দান্ত। আমি ক্যারিয়ারে যতগুলো দলের সঙ্গে খেলেছি, তার মধ্যে এটাই ছিল সেরা। রিভালদো, রোনালদিনহো, রবার্তো কার্লোস, কাফু, আমি... এই দল দিয়ে আমরা যে কোনোভাবে, যে কোনো মুহূর্তেই গোলের দেখা পেতে পারতাম। প্রতিটা ম্যাচ জিততে পারতাম। একারণেই আমরা সেই আসরের সাতটি ম্যাচই জিতেছিলাম। একারণেই আমরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম।

অনেকেই আমাকে ক্যারিয়ারের সেরা গোলগুলোর কথা জিজ্ঞাসা করে। কিন্তু আমি শুধু দুইটা গোলের কথাই চিন্তা করতে পারি। যে গোলদুটো আমি ফাইনালে করেছিলাম, সেগুলো ছিল অনন্য। একই সঙ্গে ছিল খুব তাত্পর্যপূর্ণও। বিশ্বকাপ জয়ের অভিজ্ঞতা তো আর আপনার প্রতিদিনই হবে না!’
Md Al Faruk
Assistant Professor, Pharmacy