ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপ। তাতে ব্রাজিলের অন্যতম স্বপ্ন-সারথি তিনি। কেমন সে স্বপ্নপূরণের অনুভূতি? বিশ্বকাপের জন্য তাঁর প্রস্তুতিটাই বা কেমন চলেছে? অস্ট্রেলিয়ান একটি সাময়িকীর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে নেইমার বলছেন সেসব কথা—
নেইমারবিশ্বকাপের মাস খানেক বাকি। আপনার মনের মধ্যে এখন কী চলছে?
নেইমার: আমি ভাবছি দেশের জার্সি গায়ে বিশ্বকাপ খেলাটা কত সম্মানের ব্যাপার! আমার শৈশবের স্বপ্ন সত্যি হতে যাচ্ছে। আমি আকুল হয়ে আছি, ভাবতেই শিহরণ জাগছে৷ যদিও এখনো বিশ্বকাপের আরও মাস খানেক বাকি৷
বিশ্বকাপের জন্য নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করছেন?
নেইমার: যতটা ভালোভাবে পারা যায়। প্রতিটা ম্যাচ খেলার আগে আমি যেভাবে প্রস্তুতি নিই, সেভাবেই নিচ্ছি। আমি নিশ্চিত, আমার সতীর্থরাও সেভাবেই নিচ্ছে। আমরা ট্রফিটা জেতার জন্য সর্বস্ব দিয়ে খেলতে চাই।
ব্রাজিল দলের অবস্থা কেমন? শিরোপা জেতার জন্য প্রস্তুত?
নেইমার: দারুণ। এরচেয়ে ভালো আর হতে পারে না। আমাদের অনুশীলনের পরিবেশটাও দুর্দান্ত। দলের প্রত্যেকেই একসময় স্বপ্ন দেখত ব্রাজিলের জার্সি গায়ে খেলার। শেষ পর্যন্ত স্বপ্ন সত্যি হওয়ায় আমরা গর্বিত।
কোন দলের বিপক্ষে ফাইনালে খেলাটা হবে স্বপ্নের মতো?
নেইমার: ফাইনালে খেলাটাই তো স্বপ্নের মতো । প্রতিপক্ষ নিয়ে আমার কোনো পছন্দ নেই। যারাই ফাইনাল খেলুক, আমাদের জন্য কাজটা সহজ হবে না। তবে আমি স্বপ্ন দেখি ব্রাজিলের হয়ে একটা ক্লাসিক ফাইনাল খেলার।
আপনার বাবা তো ফুটবলার ছিলেন। আপনার ফুটবলার হওয়ার পেছনে এটাই কি বড় ভূমিকা রেখেছে?
নেইমার: আমার মনে হয় এটা বড় ভূমিকাই রেখেছে। আমি যখন সুযোগ পেতাম বাবার ম্যাচ কিংবা অনুশীলন দেখতে চলে যেতাম। আমি ওই পরিবেশেই বড় হয়েছি। তিনি আমাকে খেলা শিখিয়েছেন, ছোটবেলা থেকে আমাকে ফুটবলবিষয়ক উপদেশ দিয়েছেন।
আপনার বাবা কেমন ফুটবলার ছিলেন? তাঁর খেলার প্রভাব আপনার মধ্যে কতটুকু?
নেইমার: তিনি সব সময় বলতেন, তিনি পরিশ্রমী খেলোয়াড়। আমার শুধু তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ দিকের খেলার কথা মনে আছে। কারণ তার আগে আমি খুব ছোট ছিলাম। কিছুক্ষণ আগেই আমি তাঁর একটা ভিডিও দেখছিলাম, যেখানে তিনি হেড করে গোল করার পর পাগলের মতো উদ্যাপন করছেন। পাখির মতো হাত মেলে দিয়ে নাচছেন। আমিও তাঁর মতোই উদ্যাপন করি। তবে আমি বাবার চেয়ে ভালো নাচি।
আপনার মধ্যে যে আত্মবিশ্বাস সেটা কি খেলে খেলে এসেছে, নাকি প্রকৃতিপ্রদত্ত?
নেইমার: কিছুটা তো ভেতরে থাকেই। তবে খেলতে খেলতে সেটা বাড়ে। শুধু ফুটবলে নয়, যেকোনো খেলায় অথবা আপনি অন্য যা-ই করেন আপনাকে আত্মবিশ্বাসী থাকতে হবে।
আপনার পায়ে বল, দর্শকের গগনবিদারী চিৎকার, আপনি একজন, দুজন, তিনজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন—ওই সময়ের অনুভূতিটা জানতে চাচ্ছি..
নেইমার: ওই অনুভূতির কোনো তুলনা নেই। দর্শক আপনার নাম ধরে চিৎকার করছে, আপনি অসাধারণ একটা ড্রিবলিং অথবা দুর্দান্ত একটা পাস দিলেন। কিংবা হয়তো দারুণ একটা গোল করলেন। ওই সময়ের অনুভূতি বলে বোঝানো যাবে না।