ব্রণ দূর করতে যা করতে হবেঃ
ঘুমানোর অভ্যাসঃ সবচেয়ে জরুরী হল প্রতিদিন রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যেতে হবে এবং সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে হবে। কারণ রাত জাগলেও মুখে ব্রণ উঠে। তাই প্রতিদিন রাত ১১/১২ মাঝে ঘুমতে যাবেন এবং ৬/৭ টার মাঝে উঠে পরবেন।
মুখ ধোয়াঃ তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ বেশি হয়। তার জন্য মুখটাকে সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে দুবার মুখ পরিষ্কার করবেন। মুখ ধোয়ার সময় হালকা গরম পানি এবং নর্মাল ফেসওয়াস ব্যবহার করবেন। সপ্তাহে একদিন স্ক্রাব ফেসওয়াস দিয়ে মুখ আলতো করে ম্যাসাজ করে পরিষ্কার করবেন।
খাদ্যাভাসঃ আমাদের প্রতিদিনের নানা খাবার এর কারণেও ব্রণ উঠে। অতিরিক্ত পরিমাণে তৈলাক্ত খাবার, ভাজাপোড়া এবং চর্বিযুক্ত খাবার ত্বকে ব্রণ উঠার জন্য দায়ী। চকোলেটও ব্রণ উঠার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তাই এসকল খাবার যতটা সম্ভব কম খাওয়ার চেষ্টা করুন পারলে পরিহার করুন।
মানসিক চাপ কমানোঃ মানসিক চাপের কারণেও ত্বকে ব্রণ উঠে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে ব্রণ সমস্যার সৃষ্টি করে। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ মিনিট ইয়োগা এবং মেডিটেশন করুন। এতে আপনার মনে প্রশান্তি আসবে এবং মানসিক চাপ কমে যাবে।
মুখে হাত দিবেন নাঃ আমরা অনেক সময় নিজের অজান্তে ব্রণে হাত দেই এবং খুঁটাখুঁটি করি। এতে করে ব্রণের পরিমাণ বেড়ে যায়। কারণ ব্রণের ভিতরের রস বের হয়ে হাতে লেগে যায় এবং তা ত্বকের অন্য জায়গায় লেগে সেখানেও ব্রণ উঠা শুরু করে। ব্রণ খুঁটানোও উচিৎ না এতে করে কালো দাগ পরে যায়।
মেকআপ উঠানোঃ মেকআপ উঠানোর সময় খেয়াল রাখবেন মেকআপটা যেন ঠিকভাবে তোলা হয়। কখনই মেকআপ নিয়ে ঘুমোতে যাবেন না। এতে ব্রণ উঠার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। মেকআপ কেনার সময় খেয়াল রাখবেন তা যেন নন-অ্যালার্জিক হয়।
প্যাকের ব্যবহারঃ
নিম প্যাকঃ ব্রণের চিকিৎসায় নিমের ব্যবহার প্রচুর। নিম অ্যান্টি-ফাংগাস, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া এবং রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের ব্রণ দূর করতে সহায়তা করে।
নিয়মঃ
নিম পাতা বেটে তার পেস্ট তৈরি করে নিন।
বানানো পেস্ট মুখে ১৫ মিনিট রেখে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
চিনির স্ক্রাবঃ স্বাস্থ্য উজ্জ্বল, দীপ্তিময় মসৃণ ত্বক পেতে চিনির স্ক্রাব খুবই কার্যকারী। ব্রাউন সুগার ত্বকের মড়া চামড়া, ময়লা, ব্রণ থেকে ক্ষরিত রস যা আবার ব্রণ উঠতে সাহায্য করে সেগুলোকে পরিষ্কার করে।
নিয়মঃ
৩ চামচ ব্রাউন সুগার ১ চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন।
পুরো মুখে লাগিয়ে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে ম্যাসাজ করে নিন ৫ মিনিট
১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে শুকনো কাপড়ে মুছে নিন।
আলুর প্যাকঃ আলুতে প্রচুর পরিমাণে তন্তু ও ভিটামিন-এ রয়েছে যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ত্বকের যত্নেও আলুকে ব্যবহার করা যায়। আলু চোখের নিচের কালো দাগ, চোখের নিচে ফুলে যাওয়া, রোদে পোড়া দাগ, বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত আলুর ব্যবহার করলে খুব দ্রুত এর সুফল পাওয়া যায়। এছাড়াও ব্রণ দূর করতেও আলুর উপকারিতা অসীম।
নিয়মঃ
আলু কুচি করে কেটে তা ব্রণের উপর লাগান।
আলু ছেঁচে তার রস ব্রণের উপর লাগিয়ে রাখলেও ব্রণ ভালো হওয়ার পাশাপাশি ব্রণের দাগ দূর হয়।
দারুচিনিঃ ব্রণের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য দারুচিনি গুঁড়া খুবই কার্যকারী। এতে আন্টি-মাইক্রোবিয়াল আছে যা ব্রণ দূর করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে।
নিয়মঃ
কয়েকটা দারুচিনি নিয়ে তাকে প্রথমে গুঁড়ো করে নিন।
এতে এক চামচ মধু এবং বেসন মিশান
তৈরি করা প্যাক পুরো মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন।
শুখিয়ে গেলে হাত দিয়ে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে ম্যাসাজ করে উঠিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
কমলার খোসাঃ কমলার খোসায় প্রচুর পরিমাণে সাইট্রিক এসিড এবং ভিটামিন সি রয়েছে যা ত্বককে সতেজ করে এবং ব্রণ দূর করে।
নিয়মঃ
কমলার খোসাকে পেস্ট করে নিন।
পুরো মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন।
ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন।
প্রাকৃতিক স্ক্রাবঃ ঘরে তৈরি স্ক্রাব দিয়ে ত্বকের ময়লা, কালো দাগ, মড়া চামড়া খুব ভালভাবে পরিষ্কার করা যায়। আর মুখ পরিষ্কার থাকলে ব্রণ উঠার পরিমাণও কমে যায়।
নিয়ম:
একটি পাত্রে ১ চা চামচ চালের গুঁড়া নিন
এতে চা চামচ বেসন এবং চা চামচের ১/৪ ভাগ হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে নিন।
১ চা চামচ কাঁচা দুধ মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন।
প্যাকটি পুরো মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন।
কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
অন্যান্য প্যাকঃ
রাতে লেবুর রস ব্রণের উপর লাগিয়ে রাখুন। সকালে উঠে মুখ ধুয়ে ফেলুন। রস লাগানো অবস্থায় রোদের আলোতে যাবেন না।
মাস্ট্রাড অথবা মাস্ট্রাড পাউডার মধুর সাথে মিশিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
ডিমের সাদা অংশ সাদা মাস্ক হিসেবে কাজ করে যা ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে।
রসুনের রস জানি গন্ধের কথা মনে করেই নাক কুঁচকবেন কিন্তু এটা ব্রণ সারানোর জন্য খুব কার্যকারী। রসুনের রস যতক্ষণ সম্ভব লাগিয়ে রাখুন। দেখবেন ব্রণ কখন পালিয়ে গেছে টেরও পাবেন না।