তারুণ্যনির্ভর ইংল্যান্ড দলে তিনি সবচেয়ে অভিজ্ঞ। দুর্দান্ত ফর্মের কারণে এবার দলও তাকিয়ে তাঁর দিকে। সে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন তো স্টিভেন জেরার্ড? বিশ্বকাপের জন্য ইংল্যান্ডের প্রস্তুতিই বা কেমন? এফএ ওয়েবসাইটের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ইংল্যান্ড অধিনায়ক দিয়েছেন এমন অনেক প্রশ্নের জবাব—
বিশ্বকাপের প্রস্তুতি কেমন চলছে? এখন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত যে ম্যাচগুলো খেলবেন সেগুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ?lস্টিভেন জেরার্ডস্টিভেন জেরার্ড: যে মুহূর্তে আমরা বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছি তখন থেকেই আমাদের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। প্রস্তুতি ম্যাচগুলোতে কোচ হয়তো নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন, একই সঙ্গে এটাও লক্ষ্য থাকবে যাতে দলটা সতেজ থেকে বিশ্বকাপে যায়। আমরা চাইব শুরু থেকেই সেরাটা দিতে, কারণ বিশ্বকাপে গা-ছাড়া হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
l বিশ্বকাপ ড্রয়ের পর আপনার প্রথম প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
জেরার্ড: যে দলগুলোর সঙ্গে আমরা খেলব, সবার সঙ্গেই রোমাঞ্চকর ম্যাচ হবে। একই সঙ্গে এটা আমাদের জন্য বড় পরীক্ষাও। এই গ্রুপের প্রতিটি দলেরই সামর্থ্য আছে গ্রুপপর্ব পেরিয়ে যাওয়ার। গ্রুপটা এতই কঠিন। আমাদের আর তর সইছে না।
l প্রথম প্রতিপক্ষ ইতালি। কিয়েভের কোয়ার্টার ফাইনালটার (২০১২ ইউরো) স্মৃতি কি ফিরে আসবে?
জেরার্ড: ওই ম্যাচটা ছিল নকআউট পর্বে। সুতরাং ওটা থেকে এটা কিছুটা আলাদা। তবে হ্যাঁ, এবার আমরা ফলটা আমাদের পক্ষে চাই আর সেটা হচ্ছে জয়। প্রথম ম্যাচে যদি জয় দিয়ে শুরু করা যায় তাহলে গ্রুপের বাকি ম্যাচগুলোতে সেটা আমাদের কাজে লাগবে। আশা করছি, এবার ভাগ্য আমাদের পাশে থাকবে।
l প্রতিপক্ষ হিসেবে কোস্টারিকা কিছুটা অচেনা হলেও উরুগুয়েকে তো আপনারা ভালোভাবে চেনেন। বিশেষ করে সুয়ারেজের মতো একজনের মুখোমুখি হতে হবে আপনাদের। তাঁকে নিজের দলে পেলেই হয়তো বেশি খুশি হতেন...
জেরার্ড: অবশ্যই, ওর সঙ্গে একই দলে খেলাটা আমার বেশি পছন্দ। পেলে তো ভালোই হতো। ও বিশ্বমানের খেলোয়াড়, যেকোনো প্রতিপক্ষকে ভোগানোর সামর্থ্য আছে ওর। আমি ওকে খুব ভালোভাবে চিনি, ওর শক্তিটা জানি, অল্পবিস্তর যে দুর্বলতা আছে সেটাও অজানা নয়। তবে আমি তার মুখোমুখি হতে প্রস্তুত।
l এই ম্যাচটা নিয়ে কি আপনাদের দুজনের কথা হয়েছে?
জেরার্ড: যখন আপনি ঘরোয়া লিগে কারও সঙ্গে খেলবেন, সে আপনার সতীর্থ, আপনার দায়িত্ব হচ্ছে সব সময় তার পাশে থাকা, বন্ধু হিসেবে যতটুকু পারা যায় সাহায্য করা। কিন্তু আমরা দুজনই জানি, যখনই উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটার শুরুর বাঁশি বাজবে, ৯০ মিনিটের জন্য এই বন্ধুত্ব ভুলে যেতে হবে। তখন আমরা যাঁর যাঁর দেশের জন্য লড়ব। তবে লুইসের (সুয়ারেজ) জন্য আমার প্রশংসার কমতি নেই। ও অসাধারণ খেলোয়াড়, আমার চোখে বিশ্বসেরা পাঁচজনের একজন।
l কয়েকজন ইংল্যান্ড-সতীর্থের সাম্প্রতিক ফর্ম দেখে আপনি নিশ্চয়ই খুব খুশি? বিশেষ করে ড্যানিয়েল স্টারিজ?
জেরার্ড: ড্যানিয়েল সবাইকে মুগ্ধ করেছে এবং আমার মনে হয় ও যদি এ রকম পরিশ্রম করে যেতে পারে তাহলে সে যেমন ফুটবলার হতে চায় তেমনই হতে পারবে। ও এই মৌসুমে দারুণ ফর্মে আছে আর অনুশীলনে কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতায় আমি বলতে পারি, ও অমিত প্রতিভাধর। সবাই হয়তো সুয়ারেজ, রোনালদো কিংবা অন্য বড় তারকাদের ওপর চোখ রাখবে। কিন্তু ড্যানিয়েলেরও সামর্থ্য আছে বিশ্বকাপের তারকা হয়ে ওঠার।
l রয় হজসন বলেছেন, ইংল্যান্ডে তরুণ প্রতিভার প্রসার বেড়েছে। আপনিও কি একমত?
জেরার্ড: রাহিম স্টার্লিং, স্টারিজ, অ্যান্ড্রুজ টাউনসেন্ড, জ্যাক উইলশেয়ার, অক্সলেড-চেম্বারলেইনের মতো খেলোয়াড়েরা প্রতি সপ্তাহেই ক্লাবের হয়ে তাদের প্রতিভা দেখাচ্ছে। এখন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে বড় টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের হয়েও পারফর্ম করা। যদি ওরা সেটা করতে পারে, আমার বিশ্বাস, আমরা সফল হব।
l ব্রাজিল বিশ্বকাপের জন্য কতটা উন্মুখ?
জেরার্ড: কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞেস করে কোথায় বিশ্বকাপ খেলতে পছন্দ করব, আমার জবাব হবে—ইংল্যান্ড। তবে যদি সেটা না হয়, আমার পরের পছন্দ হবে ব্রাজিল। এটা শুধু ওদের ইতিহাস, ঐতিহ্য আর বিশ্বকাপ উন্মাদনার কারণে। আমার বিশ্বাস, সেখানে যাওয়া, খেলা, পুরো সফরটাই হবে অসাধারণ । বিশেষ করে আমার এই বয়সে। আমি চাই, ইংল্যান্ডের হয়ে জ্বলে উঠতে, যাদের বিশ্বাস নেই আমাদের ওপর, তাদের সবাইকে চমকে দিতে।