রোনালদো আর বিশ্বকাপ৷ দুটি শব্দ একসঙ্গে বসলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে এক যুগ আগের সেই ছবি। ইয়োকোহামার ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে তাঁর জোড়া গোল। ভেসে ওঠে চার বছর পর জার্মানিতে জাঁ ফন্টেইনকে ছাড়িয়ে যাওয়া গোলের কথাও। আরও একটা বিশ্বকাপ, এবার তাঁর নিজের দেশে। খেলার মাঠ ছেড়ে কিংবদন্তি ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার এবার আয়োজকের ভূমিকায়। মাঠে প্রতিপক্ষের মতো এখানেও সামলাতে হচ্ছে নানা প্রতিবন্ধকতা। কেমন সে অভিজ্ঞতা? বিশ্বকাপ নিয়ে তাঁর প্রত্যাশাটাই বা কী? সাও পাওলোতে রয়টার্সের মুখোমুখি রোনালদো—
রোনালদোআয়োজনের নানা প্রতিবন্ধকতা প্রসঙ্গে
২০০৭ সালে যখন সিদ্ধান্ত হলো যে ব্রাজিলে বিশ্বকাপ হবে, তখনই প্রেসিডেন্ট লুলা ডা সিলভা সব জায়গায় সই করেছেন, সব চুক্তিতে সম্মতি দিয়েছেন। কিন্তু যখন কাজ শুরু হলো, দেখা গেল নানান আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর বিশৃঙ্খলা। তিনটি স্টেডিয়াম তো এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি। এটা খুবই লজ্জার, আয়োজক হিসেবে আমি বিব্রতও।
শ্বকাপবিরোধী বিক্ষোভ প্রসঙ্গে
বিশ্বকাপের আগেও ব্রাজিল খুব একটা নিখুঁত দেশ ছিল না। এটা এমনই ছিল অথবা এর চেয়ে খারাপ। তবে এটা আমার দেশ, আমি এই দেশকে ভালোবাসি। আমাদের উচিত হবে না দেশের এ রকম ভাবমূর্তি বিদেশের কাছে তুলে ধরা।
ব্রাজিল দল নিয়ে প্রত্যাশা
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিলের প্রথম ম্যাচটাই হবে এই দলের অনেক খেলোয়াডের বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ। ওটাই হয়তো বিশ্বকাপে ব্রাজিলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেবে। দলটা তরুণ। তবে আমরা দেখেছি, এসব তরুণ এরই মধ্যে অনেক বড় ক্লাবের হয়ে খেলছে, জাতীয় দলের হয়েও খেলছে এক-দেড় বছর ধরে। আমার মনে হয় না অভিজ্ঞতা ফল নির্ধারণে খুব বড় ভূমিকা রাখবে। হ্যাঁ, এটা ম্যাচে কোনো কোনো মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। তবে এটাই ফল নির্ধারণ করে দেবে, এমন নয়।
ব্রাজিলের আবহাওয়া নিয়ে
দেখুন, ইউরোপের অনেক দল এর চেয়ে বেশি তাপমাত্রায় খেলে। যেসব ম্যাচ নিয়ে বিতর্ক হতে পারে, যেমন মানাউসে বেলা একটার ম্যাচ, সেই সূচি তো এরই মধ্যে বদলানো হয়েছে। আমি নিজেও মানাউসে গিয়েছি। গ্রীষ্মকালে ম্যাচের সময় সেখানকার তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির মতো ওঠে, শীতকালে ২৮-২৯। খেলার জন্য এমন তাপমাত্রা তো বেশ ভালো। আমার মনে হয় ব্রাজিল বিশ্বকাপ নিয়ে এটা আরেকটা বিতর্ক, যার কোনো মানে হয় না। কেউ তো পোর্তো আলেগ্রের শীতের কথা বলছে না।
তবে আমার যদি ক্ষমতা থাকত, ড্রটা নিজের মতো সাজাতে পারতাম, ইউরোপীয় দলগুলোর খেলা ফেলতাম উত্তরাঞ্চলে, আর আফ্রিকানদের পাঠাতাম দক্ষিণে (হাসি)।
ক্লোসার কাছে রেকর্ড হারানোর ভয়
ও যদি আমার চেয়ে বেশি গোল করতে পারে তাহলে সব কৃতিত্ব তার। আমি ওকে কোনোভাবেই নিরুৎসাহিত করব না বা অভিনন্দন জানাতে কার্পণ্য থাকবে না। রেকর্ড তো গড়াই হয় ভাঙার জন্য। ক্লোসা না হলেও অন্য কেউ সেটা ভাঙবে। কেউ আমার রেকর্ড (বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ১৫ গোল) ভাঙতে পারবে না, এই বিভ্রান্তি আমার মধ্যে নেই।