বিশ্বকাপের উদ্বোধনীতে থাকছে চমক

Author Topic: বিশ্বকাপের উদ্বোধনীতে থাকছে চমক  (Read 815 times)

Offline monirulenam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 295
  • Test
    • View Profile
১২ জুন ২০১৪। বাংলাদেশ সময় রাত ১২টার দিকে বিশ্বের কয়েক মিলিয়ন দর্শকের চোখ আটকে ‍যাবে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের সাও পাওলোতে। কেউ সরাসরি মাঠে বসে, কেউ বিশ্বের বড় শহরগুলোর জায়ান্ট স্ক্রিনের সামনে, বাকিরা ড্রয়িং রুমের টিভি সেট আর ইন্টারনেটে লাইভ স্ট্রিমিংয়ের সামনে আঠার মত বসে থাকবে জমকালো এক প্রদর্শনীর জন্য। এদিন ব্রাজিলের সাও পাওলো স্টেডিয়ামে পর্দা উঠবে সবচেয়ে বৈশ্বয়িক ক্রীড়া বিনোদন ফুটবল বিশ্বকাপ ২০১৪’র।

ব্রাজিল-ক্রোয়েশিয়ার মাঠের লড়াই শুরুর আগে জমকালো এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে ফিফা ও আয়োজক ব্রাজিল। ফুটবলই যেখানে আসল সেখানে এমন জমকালো উদ্বোধনী প্রাসঙ্গিক কেন, সেটা জানতে একটু ফ্ল্যাশব্যাক থেকে ঘুরে আসা যাক।

একটা সময় ছিল, ফুটবল তখনো এতটা বৈশ্বয়িক আকার ধারণ করেনি। ফিফার তো জন্মই হয়নি। অলিম্পিক প্রতিরূপের মত সাংস্কৃতিক প্রদর্শনীর প্রচলন হয়নি। লিখিত আছে তখন নাকি বিশ্বকাপ আয়োজিত হতো আঞ্চলিক দলগুলোর পারস্পারিক সম্মতির মাধ্যমে।

সেই সময় ১৮৮৮ সালে প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজিত হয়েছিল স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে। সেখানে অংশ নেয় দুটি ক্লাব। স্কটিশ এফএ  কাপ চ্যাম্পিয়ন ‘রেনটন এফসি’ ও ইংলিশ কাপ চ্যাম্পিয়ন ‘ব্রমউইচ’। রেনটন এফসি হয় চ্যাম্পিয়ন। অর্থাৎ প্রথম বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন দল!সেভাবে আরো দুটো বিশ্বকাপ আয়োজন করে ফেলে তারা। ততোদিনে ফিফার জন্ম হয়েছে। ফ্রান্স তখন সংস্থাটির মালিক। সংস্থাটি ফুটবলকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে শুরু করেছে। দেরিতে হলেও স্কটিশ-ইংলিশরা এর সদস্য পদ নেয়। পরে ফিফার আয়োজনে ১৯৩০ সালে উরুগুয়েতে অনুষ্ঠিত হয় আধুনিক বৈশ্বয়িক টুর্নামেন্ট বিশ্বকাপের প্রথম অফিসিয়াল আসর।

তখন অবশ্য বাছাই পর্বের ধারণা জন্ম নেয়নি। আমন্ত্রিত দেশগুলোর কেউ অংশগ্রহণে সম্মতি দিত। কেউ দূরদেশ পাড়ি দিয়ে খেলতে যেতে অস্বীকৃতি জানাতো। সেখান থেকে বিবর্তিত হয়ে এখন চার বছর পর পর বাছাই পর্ব পেরোনো ৩২টা দল নিয়ে একক বা যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরটি। অলিম্পিকের পর ক্রীড়াজগতেরই সবচেয়ে বড় আসর যেটি।

ফুটবল যত দ্রুত বৈশ্বয়িক আকার ধারণ করতে লাগলো, সমানভাবে বাড়তে লাগলো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের গুরুত্ব। আয়োজক দেশের শিল্প-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য, শেকড়-বিবর্তন, জীবনযাত্রা বিশ্বের কয়েক মিলিয়ন মানুষের সামনে তুলে ধরতে খেলার পাশাপাশি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান তাই এখন এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ।

শুরুতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেবল নাচ-গানের বিষয়টি প্রাধান্য পেত। এরপর যুক্ত করা হয় শিশুদের অংশগ্রহণ। ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের স্কুল ছাত্রদের খেলোয়াড়ের পোশাক পরিয়ে  পতাকা বহনের মধ্য দিয়ে এর প্রচলন শুরু। পরে ১৯৭০ বিশ্বকাপে মেক্সিকো সেটা অনুসরণ করে। যার ধারাবাহিকতা এখনো ‍বজায় আছে।

এসবের সাথে বিখ্যাত ব্যক্তিদের পারফরমেন্স, অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তব্য, ম্যাজিক প্রদর্শনী, লেজার লাইটের মাধ্যমে আলোর নকশা এখনতো উদ্বোধনের নিয়মিত অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সেসব রীতি অনুসরণ করা হবে ব্রাজিল বিশ্বকাপেও। দেশটির প্রেসিডেন্ট দিলমা রুসেফের প্রথম কিকের মাধ্যমে যাত্রা শুরু হবে ব্রাজিল বিশ্বকাপ ২০১৪’র।

বিশ্বকাপের থিম হলো ‘টিম বল গেমস’। ৬০০ এর অধিক অংশগ্রহণকারী চোখ ধাঁধানো সজ্জা নিয়ে তুলে ধরবে ব্রাজিলের ‍বিখ্যাত খেলোয়াড়, ইতিহাস, ঐতিহ্যের কথা। এসব নিখুঁতভাবে আয়োজনের দায়িত্বে আছেন বেলজিয়ান আর্টিস্টিক ডিরেক্টর ডাফনো কর্নেজ। যার অধীনে গত এক বছর ধরে রিহার্সেল করছে অংশগ্রহণকারীরা।

বিশ্বকাপে অংশ নেয়া সকল দেশের ঐতিহ্যও তুলে ধরার ব্যবস্থা থাকবে। প্রতিফলক ফেলে অনুষ্ঠানস্থলের কেন্দ্রে একটি জীবন্ত বলের প্রতিকৃতি তৈরি করা হবে। যাতে ৯০হাজার গুচ্ছ লাইট ব্যবহৃত হবে। কেবল বলটি তৈরি করতেই ৭হাজার আলোক প্রক্ষেপণ সৃষ্টি করা হবে।

অনুষ্ঠানের শেষ ২৫ মিনিট হবে সবচেয়ে জমকালো। শেষ ২০ ঘণ্টার প্রস্তুতি ও ৮৪ ঘণ্টার রিহার্সেল তুলে ধরা হবে এ অল্প সময়ে।

বিশ্বকাপ শুরুর আগের দুই ঘণ্টার মধ্যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। প্রায় এক ঘণ্টার অনুষ্ঠানে অ্যাক্রোবেটিক জিমন্যাস্ট, ট্রাম্পোলিনিস্টের সাথে থাকবে ক্যাপোয়েরা পারফরমেন্স। ( ক্যাপোয়েরা হলো বৈবাহিক শিল্প ও নাচের মূদ্রার সমন্বয়ে শারীরিক শৃঙ্খল এবং আন্দোলনের প্রতিভাষা প্রদর্শনের মাধ্যম। ব্রাজিলীয় ক্রীতদাসরা যেটা বৈষম্যের প্রতি প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে উপস্থাপন করতো।)টুর্নামেন্ট প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে উদ্বোধণী অনুষ্ঠানে গান গাইতে আসছেন ‘প্যালেস্টাইন আইডল’ খেতাব জয়ী মধ্যপ্রাচ্যের গায়ক মোহাম্মদ আসেফ। থাকবে অরো কিছু একক পারফরমেন্স ও লেজার প্রদর্শনী।

সবশেষে বিশ্বকাপের অফিসিয়াল গান ‘ওলে ওলা’র সাথে জেনিফার লোপেজ, পিটবুল, ক্লোদিয়া লেইটি ও ব্রাজিলের বিখ্যাত ব্যান্ড ‘ওলোডামে’র সম্মিলিত পারফরমেন্সের মধ্য দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটবে।

এরপর শুরু হবে আসল মহারণ। মাঠে গড়াবে ফুটবল। আর ফুটবলের পিছু স্বপ্নের তারকারা। একমাস ধরে ফুটবল দেবতা কখনো যাদের দু’হাত ভরে দেবেন স্মরণীয় অনেক স্মৃতি, কখনো কেবল বেদনার জল।




Offline Nusrat Nargis

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 361
    • View Profile
Thanks for sharing.
Nusrat Nargis

Assistant Professor
Department of Business Administration
Daffodil International University