ডিয়েগো কস্তাকে নিয়ে ব্রাজিল-স্পেনের রশি টানাটানির খবর কারোরই অজানা নেই। জন্মসূত্রে ব্রাজিলিয়ান হলেও কস্তা বিশ্বকাপ খেলতে আসবেন স্পেনের হয়েই। বিশ্বকাপে তাঁকে ব্রাজিলের বিপক্ষে খেলতে দেখা যাবে কি না, তা অবশ্য এখনো নিশ্চিত না। কিন্তু উদ্বোধনী ম্যাচেই আরেক ‘বিভীষণের’ মুখোমুখি হতে হবে ব্রাজিলকে।
তাঁর নাম এদুয়ার্দো ডি সিলভা। ম্যাচ শুরুর আগে যাঁকে দেখা যেতে পারে দুই দেশের জাতীয় সংগীতের সঙ্গেই গলা মেলাতে। জন্ম ব্রাজিলে হলেও বিশ্বকাপের মঞ্চে সিলভা মাঠে নামবেন নিজ দেশের প্রতিপক্ষ হয়ে। শুধু মাঠে নামাই না, ৩১ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার হয়ে উঠতে পারেন ব্রাজিলের প্রধান হুমকিও।
ক্রোয়েশিয়ার সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় সিলভার নামটা আছে দ্বিতীয় স্থানে। ২০০৪ সালে অভিষেকের পর ৬৯ ম্যাচ খেলে ২৯টি গোল করেছেন সিলভা। সামনে আছেন শুধু ডেভর সুকার। যাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ভর করে ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলেছিল ক্রোয়েশিয়া।
১৯৮৩ সালে রিও ডি জেনিরোর এক বস্তিতে জন্ম হয়েছিল সিলভার। খুব ছোটবেলা থেকেই ছিলেন ফুটবলপাগল। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই তিনি নজর কাড়েন ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব ডায়নামো জাগরেবের। ১৯৯৯ সালে পাড়ি জমান ক্রোয়েশিয়ায়। দুই বছর পরই খেলতে শুরু করেন ডায়নামোর মূল দলের হয়ে। ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ১০৮টি ম্যাচ খেলে করেছেন ৭৩ গোল। খেলেছেন ইংল্যান্ডের অন্যতম শীর্ষ ক্লাব আর্সেনালের হয়েও। ২০১০ সাল থেকে খেলছেন ইউক্রেনের ক্লাব শাখতার দোনেেস্কর হয়ে।
ক্লাব ফুটবলে সুনাম কুড়ালেও বিশ্বকাপের মঞ্চে কখনো উঠতে পারেননি সিলভা। ২০০৬ সালে সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু বয়স কম বলে তাঁর ওপর আস্থা রাখতে পারেননি ক্রোয়েশিয়ার তত্কালীন কোচ। ২০১০ সালে তো বাছাইপর্বের বাধাই পেরোতে পারেনি ক্রোটরা। অবশেষে মাতৃভূমি ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপেই স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে সিলভার।
ঘরের ছেলের বিশ্বকাপ অভিযান নিয়ে সাজসাজ রব পড়ে গেছে ব্রাজিলের ভিলা কেনেডি অঞ্চলে। ছোটবেলাটা এখানেই কাটিয়েছেন সিলভা। তাঁর সৌজন্যে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে অনেককেই হয়তো দেখা যাবে ক্রোয়েশিয়ার পক্ষে গলা ফাটাতে। কিন্তু সেটা শুধু ওই একটা ম্যাচের জন্যই। সিলভার মা জোয়েলমা ডি সিলভা বলেছেন, ‘এখানে, পরিবারের সবাই এদুয়ার্দো ডি সিলভাকে সমর্থন করবে। কিন্তু প্রথম ম্যাচের পর সবাই আবার ব্রাজিলের সমর্থক হয়ে যাবে।’
কে জানে, এদুয়ার্দো নিজেও হয়তো উদ্বোধনী ম্যাচের পর মনে মনে ব্রাজিলের জয়ই কামনা করবেন। তাঁর ভাই ব্রুনোর মন্তব্য শুনে তো তেমনটাই মনে হচ্ছে, ‘সিলভা কাজ করছে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে। কিন্তু মনেপ্রাণে সে তো একজন ব্রাজিলিয়ানই।’