বিপিএল-ফিক্সিংয়ের পূর্ণাঙ্গ রায়ের প্রায় ৫০টি অনুচ্ছেদজুড়েই আছে আইসিসির দুর্নীতি দমন ও নিরাপত্তা ইউনিটের (আকসু) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন। কাল সেই পূর্ণাঙ্গ রায় সামনে রেখে একই অভিযোগ তুললেন ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের আইনজীবী নওরোজ এম আর চৌধুরী এবং ক্রিকেটার মাহবুবুল আলম ও মোশাররফ হোসেনের আইনজীবী নুরুস সাদিক। তাঁদেরও মত—আকসুর তদন্ত ত্রুটিপূর্ণ।
‘তদন্তে অনেক ত্রুটি আছে। সেগুলো ট্রাইব্যুনাল সঠিকভাবে চিহ্নিত করেছেন’—কাল সন্ধ্যায় নুরুস সাদিকের চেম্বারে বসে সাংবাদিকদের বলছিলেন নওরোজ এম আর চৌধুরী। এও বলেছেন, চট্টগ্রাম কিংসের দুজন ইংলিশ খেলোয়াড় তিন দিন আগেই জানতেন ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের বিপক্ষে ম্যাচে ফিক্সিং হবে। মোহাম্মদ আশরাফুলকে নাকি রবি বোপারা সেটা বলেছেন এবং আশরাফুলই তা আবার আকসুকে জানান। আইনজীবীদের মত, চিটাগং কিংসের ওই খেলোয়াড়েরা তিন দিন আগে থেকেই কীভাবে সব জানে, তার তদন্ত হলে আরও অনেক কিছু বের হয়ে আসত।
আইসিসির দুই কর্মকর্তা ধরমবীর যাদব ও পিটার ওশিয়ে সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ রায়ে কী বলা আছে জানতে চাইলে নওরোজ বলেন, ‘ফিক্সিংয়ে এরাও জড়িত বলে ট্রাইব্যুনাল সন্দেহ করছেন।’ আরেক প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘পিটার ওশিয়ে এবং ধরমবীর যাদব আগে থেকে জানতেন ফিক্সিং হতে যাচ্ছে। কিন্তু তাঁরা তা বিসিবিকে জানাননি। রায়ে নির্দিষ্টভাবে এসেছে তাঁদের নাম।’ ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের কোচ ইয়ান পন্টকে ট্রাইব্যুনাল ‘ষড়যন্ত্রকারীদের একজন’ বলে উল্লেখ করেছেন বলেও জানান আইনজীবীরা। তার পরও কেন ইয়ান পন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়নি, তোলা হয়েছে সেই প্রশ্ন। এ ছাড়া তদন্তে দুর্বলতার জন্য আকসুর চেয়ারম্যান স্যার রোনাল্ড ফ্ল্যানাগান যে ট্রাইব্যুনালের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন সেটাও উল্লেখ আছে পূর্ণাঙ্গ রায়ে।
দ্বিতীয় বিপিএলের দুটি ম্যাচে স্পট ফিক্সিং হবে জেনেও তা বিসিবি বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাননি আকসু কর্মকর্তারা। বন্ধ করেননি ম্যাচও। কেন বন্ধ করেননি—জানতে চাইলে তাঁরা নাকি বলেছেন, ওই সময় ম্যাচ বাতিল করে দিলে হট্টগোল হতো। আইনজীবীদের দাবি, আকসুর সঙ্গে বিসিবির চুক্তি অনুযায়ী এ রকম কিছু ঘটতে দেখলে তা প্রথমে বিসিবিকে মৌখিকভাবে জানানো উচিত ছিল, পরে লিখিতভাবেও জানানোর কথা। কিন্তু এ নিয়ে বিসিবির কাছে কোনো রিপোর্টই আকসু করেনি। নওরোজ বলেন, ‘তারা বিসিবিকে সময়মতো সবকিছু জানায়নি, এতে চুক্তিভঙ্গ হয়েছে। বিসিবির উচিত আইসিসির বিরুদ্ধে টাকার জন্য মামলা করা...ক্ষতিপূরণসহ।’ ধরমবীর যাদবের ট্রাইব্যুনালের সামনে না আসা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবীরা৷
নওরোজ ও নুরুস সাদিক—দুই আইনজীবীই মনে করেন, পুরো ব্যাপারটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র। ‘যারাই এটা করেছে তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। তারা চেয়েছে বিপিএল অজনপ্রিয় হোক। একই সময়ে আশপাশের দেশের অন্য একটা টুর্নামেন্ট বাজার পাক। সেটা হয়ে গেছে’—বলেছেন নওরোজ।
http://www.prothom-alo.com/sports/article/237850/%E0%A6%86%E0%A6%95%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%B0_%E0%A6%A4%E0%A6%A6%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4_%E2%80%98%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E2%80%99