পরশু রাতে ঢাকায় পৌঁছে কাল সকালে এলেন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। ঘুরেফিরে দেখলেন বিসিবি কার্যালয়, ড্রেসিংরুম, মাঠ এবং ক্রিকেটারদের নিজেদের মধ্যে খেলা প্র্যাকটিস ম্যাচের কিছুটা। ম্যাচ শুরুর আগে উইকেটের পাশে দাঁড়িয়ে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথাও বললেন। পরে কথা বলেছেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। বাংলাদেশ দলের নতুন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সেই সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো এখানে—
বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে লক্ষ্য—
চন্ডিকা হাথুরুসিংহে: সার্বিকভাবে লক্ষ্য দলের উন্নতি। দলটাকে আরও ভালো করার জন্য চেষ্টা করে যাব। এটাই আমার চিন্তা। একটি-দুটি সিরিজ জেতা নয়, সাফল্যের ধারাবাহিকতা চাই। মূল লক্ষ্য হলো, আমার দুই বছর যখন শেষ হবে, বাংলাদেশ দল যেন খুব ভালো অবস্থায় থাকে। দেশে এবং দেশের বাইরে ম্যাচ জেতে।
র্যাঙ্কিংয়ের লক্ষ্য—
হাথুরুসিংহে: এ রকম লক্ষ্য নির্ধারণ খুবই বিপজ্জনক৷ কারণ আমরা এখনো জানি না আমাদের কী আছে। কোনো সংখ্যার কথা আমি বলব না। আমরা যদি দল হিসেবে উন্নতি করি, ভালোভাবে অনুশীলন করি এবং খেলোয়াড়দের জন্য সঠিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারি, ভালো ফল এমনিতেই আসবে। আমার কাজ হলো ওদের জন্য সেই পরিবেশ ও আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলো নিশ্চিত করা। দল যেন সংশ্লিষ্ট সবার কাছ থেকে সেরা সমর্থনটা পায়। শ্রীলঙ্কা দলের সঙ্গে থাকার সময় দেখেছি, গত চার বছরে অস্ট্রেলিয়াতেও দেখলাম, প্রক্রিয়াটা পুরোপুরি ঠিক থাকলে বেশির ভাগ সময় দল ভালো করে। এখানেও আমি সেদিকেই দৃষ্টি রাখব।
সঠিক প্রক্রিয়ার ব্যাপারে বিসিবির নিশ্চয়তা—
হাথুরুসিংহে: আমাকে যখন চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়, তখনই আমি এটা বলেছিলাম। তারা আমাদের সব রকমের সমর্থন দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমারও মনে হয় বর্তমান বোর্ড আন্তরিকভাবেই চাইছে কিছু পরিবর্তন আনতে।
২০১৫ বিশ্বকাপ—
হাথুরুসিংহে: আমাদের যা কিছু আছে, সে অনুযায়ীই পরিকল্পনা সাজাতে হবে। দলের সঙ্গে এখনো কথা হয়নি। গত চার বছর তাদের খেলাও খুব একটা দেখা হয়নি, কারণ তারা অস্ট্রেলিয়ায় খেলার সুযোগ কমই পায়। ২০১০ সালের আগে যখন শ্রীলঙ্কায় ছিলাম, তখন কিছু ছেলের সামর্থ্যের ব্যাপারে আমার ধারণা হয়েছে। তার মধ্যে কিছু খেলোয়াড় তাদের সেরা সময়ে আসতে শুরু করেছে। এখন সঠিক দলটাকে বেছে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে গিয়ে খেলার প্রস্তুতি নেওয়াটাই হলো ব্যাপার। কন্ডিশনের কারণে উপমহাদেশের দেশগুলোর জন্য এটা চ্যালেঞ্জ হবে। কাজেই যদি যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে নিজেদের প্রস্তুত করতে পারি, আমরা অনেক দূর যাব। দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে পারলেই আমি সন্তুষ্ট এবং আমার প্রথম লক্ষ্য এটাই।
বিশ্বকাপের আগের সময়টা যথেষ্ট কি না—
হাথুরুসিংহে: আমার তো কিছু করার নেই! আমি তো সময় কিনতে পারব না। যা নেই, তা নিয়ে ভাবার মানুষ আমি নই। আট মাস আছে, এই সময়ের মধ্যে আমাদের সম্ভাব্য সেরাটাই করে দেখাতে হবে।
ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে কি বের হবে বাংলাদেশ—
হাথুরুসিংহে: ফলাফল খারাপ হয়েছিল কেন তা জানি না। আমি এখন শুধু সামনেই তাকাতে চাই এবং চ্যালেঞ্জ গ্রহণের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে চাই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে আট সপ্তাহ সময় পাচ্ছি খেলোয়াড়দের জানার জন্য। তাদেরও আমাকে চেনাটা গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমান বাংলাদেশ দল সম্পর্কে ধারণা—
হাথুরুসিংহে: বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলার সময় আমি একবার শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং কোচ ছিলাম। তাদের প্রতিভা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা আছে। ফিট থাকলে একজন খেলোয়াড়ের সেরা সময় ২৫ থেকে ৩৫ বছর। এ ছাড়া শুনেছি, ভালো কিছু তরুণ খেলোয়াড়ও উঠে আসছে। আমাদের ভালো একটা বোলিং ইউনিট দরকার, যারা ২০ উইকেট নিতে পারবে। এটাও একটা চ্যালেঞ্জ।
ক্রিকেট নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা—
হাথুরুসিংহে: আমি জানি, জাতি হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট-পাগল। আমি চাই তারা ধৈর্য ধরবে এবং দলকে সমর্থন েদবে।