দৈনন্দিন জীবনে বেশিরভাগ মানুষই ফ্যাট বা স্নেহজাতীয় খাদ্য থেকে দূরে থাকতে চান। যারা একটু বেশি সচেতন তারা আবার জানেন কোনটা ভালো ফ্যাট আর কোনটা খারাপ ফ্যাট। কিন্তু ফ্যাটকে এড়িয়ে চলতে গিয়ে আমরা ভুলে যাই যে ফ্যাটও আসলে আমাদের খাদ্যের একটা দরকারি উপাদান। দেখে নিন ফ্যাটের ব্যাপারে অজানা এবং জরুরি কিছু তথ্য,যেগুলো আপনার স্বাস্থ্য রক্ষায় কাজ দেবে ভীষণ।
১) ফ্যাট হলো শক্তি উৎপাদনকারি খাদ্য
বেশিরভাগ শক্তি আমরা পেয়ে থাকি শর্করা থেকে। কিন্তু ফ্যাট থেকেও অনেকটা শক্তি আসে। খাবারে ফ্যাট যোগ করলে এর থেকে পাওয়া শক্তি মোটামুটি দ্বিগুণ হয়ে যায়। বাচ্চাদের খাবারে বেশি ফ্যাট থাকে, কারণ এতে তাদের শরীরে ফ্যাট জমা হতে পারে এবং শরীর থেকে তাপ সহজে বের হতে পারে না।
২) ফ্যাট কম খেলে কমবে ওজন
শরীরে জমে থাকা চর্বি কমানোর জন্য সবচাইতে ভাল উপায় হলো চর্বি খাওয়া কমিয়ে দেওয়া। ওজন কমাতে ব্যায়ামের চাইতেও ভালো উপায় হলো এটা। এর জন্য লো-ফ্যাট খাবার খাওয়া উপকারি।
৩) শরীরের কোথায় চর্বি জমেছে তা জানাটা জরুরি
পেট অথবা লিভারে চর্বি জমলে তা সবচাইতে ক্ষতিকর এবং এ থেকে তৈরি হতে পারে টাইপ টু ডায়াবেটিস। তবে অতিরিক্ত চিনি এবং অ্যালকোহল গ্রহণের ফলেও লিভারে চর্বি জমতে পারে।
৪) শরীরের জ্বালানী হিসেবে শর্করা ব্যবহৃত হয়, ফ্যাট নয়
শরীরের জ্বালানী হিসেবে শর্করা ব্যবহৃত হয়ে যায়। কিন্তু অতিরিক্ত জ্বালানী থাকলে সেটা ফ্যাট হিসেবে জমা রয়ে যায় শরীরে কারণ শর্করা জমা রাখার চাইতে শরীরে ফ্যাট জমা রাখাটা বেশি সুবিধাজনক।
৫) উর্বরতার জন্য নারীদের দরকার হয় ফ্যাট
একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ নারীর শরীরের প্রায় ২০-৩০ শতাংশ ফ্যাট থাকা জরুরি, যা পুরুষের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। ১৮ শতাংশের নিচে নেমে গেলে ওভ্যুলেশন বা ডিম্বপাত বন্ধ হয়ে যায়। আবার শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি বেড়ে গেলেও বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে।
৬) কিছু ফ্যাটি এসিড শরীরের জন্য জরুরি
ভেজিটেবল অয়েল, ফিশ অয়েল এবং কিছু বাদাম থেকে আমরা পাই এমন কিছু ফ্যাটি এসিড যা আমাদের ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য জরুরি।
৭) কিছু ভিটামিন শরীরে শোষণ করার জন্য ফ্যাটের দরকার হয়
চর্বিতে দ্রবীভূত হয় ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে। শরীরে এদের শোষণের জন্য প্রতিদিন ৩০ গ্রাম ফ্যাট দরকার হয়।
৮) রক্তের কোলেস্টেরলের ওপর প্রভাব
ফ্যাটের বিভিন্ন প্রকারভেদ আছে এবং গবেষণায় দেখা যায়, খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিডের বদলে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড ব্যবহারে কমে যায় রক্তের কোলেস্টেরল এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। তবে সব স্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তের কোলেস্টেরল বাড়ায় না। শুধুমাত্র লরিক, মাইরিস্টিক এবং পামিটিক ফ্যাটই এসিডের কারণে বাড়ে কোলেস্টেরল।