নতুন জীবনের সূচনার শুভক্ষণে বিভিন্ন সংস্কৃতিতে পালন করা হয় ভিন্নধর্মী বিভিন্ন প্রথা। কোন কোন সমাজের বিয়ের রীতি অন্য সমাজের বিপরীত। কোনো সমাজের বিয়ের রীতি আবার আরেক সমাজে হাসির উদ্রেক ঘটায়।
মঙ্গোলিয়ার ডোর সম্প্রদায়ে বিবাহের দিন ধার্য করতে হবু বর কনেকে একসঙ্গে একটি মুরগির বাচ্চা হত্যা করে নাড়িভুড়ি সরিয়ে লিভার কতটা সুস্থ ও স্বাভাবিক আছে তা নিশ্চিত করতে হয়। লিভারটির অবস্থা ভালো থাকলে বর কনের অভিভাবকগণ দিন ধার্য করে তাদের দীর্ঘ আকাঙ্খিত নতুন জীবন শুরুর আয়োজন করেন।
মৌরিতানিয়াতে কনের মোটা হওয়াটা বেশ আকর্ষণের। সেখানে কনেকে সম্ভাবনাময় ও স্বামীর চোখে আকর্ষণীয় করতে বাড়ির বয়স্ক নারীরা জোর করে হলেও অধিক চর্বিযুক্ত খাবার খেতে বাধ্য করে। অদ্ভুত এই প্রথাটি লেব্লাহ নাম পরিচিত।
কেনিয়াতে কনের বাবা তাকে পাত্রস্থ করার পূর্বে বাবা তার মেয়ের মুখ ও বুকে থু থু ছিটিয়ে দেন। যাতে কিছু তাদের অমঙ্গল না করতে পারে।
মালয়েশিয়ার সাবার সন্দাকান শহরে বিবাহের ঠিক ৩ দিন আগে প্রচলিত আছে আরেক অদ্ভুত প্রথা। সেখানে টাইডং গোত্রে বর কনে দুজনেরই বিবাহের আগের ৩ দিন টয়লেটে যাওয়া নিষেধ। কারণ এই গোত্রের সমাজ বিশ্বাস করে, এটা তাদেরকে সৌভাগ্য এনে দিবে। তাদের মধ্যকার আনুগত্যহীনতা দূর করবে ও তাদের সন্তানদের মৃত্যুকে দুরে ঠেলে দিবে।
যখন অধিকাংশ বিয়েতেই সবাই আনন্দিত সময় কাটাই তখন চীনের সিসুয়ানের তুজিয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা অন্যরকম সময় পার করেন। এই সপ্রদায়ের মেয়েরা বিয়ের ঠিক একমাস আগে থেকে প্রতিদিন এক ঘন্টা কান্নাকাটি করে থাকে এবং দিন ঘনিয়ে আসলে কনের সঙ্গে তার মা ও দাদী যোগ দেন। বলা হয় প্রথাটি একজন চীনা রাজকুমারীর বিবাহের সময় থেকে পালিত হয়ে আসছে, যখন ওই রাজকুমারীর মা তার বিয়েতে অঝোরে কেঁদেছিলেন।
ভারতে বছরের লম্বা দিনগুলোতে মাগ্লিক নারীদেরকে কলা কিংবা বট গাছকে বিয়ে করতে হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানের পর পরই গাছটি কেটে ফেলা হয় যাতে বর কনের কোন অভিশাপ না আসে।
প্রাচীন ফ্রান্সে অতিথিদের অভ্যর্থনার পর পর বর কনেকে জোর করে একটি পাত্র ভরে পানীয় ও মদ পান করানো হত।
আফ্রিকার দেশ নাইজারে যদি কোন ছেলে কোন মেয়েকে পছন্দ করে তবে তাকে ওই মেয়ের বাড়ির বাইরে ছিঁচকে চোরের মত উকি দিতে হবে এবং তারপর মেয়েটি বাবা মাকে ওই ছেলের ব্যাপারে জানাতে পারবে। তাদের বিয়ের দিন একটি ছাগল জবাই এবং পরবর্তীতে অতিথিদের জন্য উটের নাচের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশে ঘটক ছেলের পক্ষ থেকে মেয়ের বাড়িতে প্রস্তাব নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি মেয়ের পক্ষ হয়েও ছেলের বাড়িতে প্রস্তাব নিয়ে আসেন। আমাদের দেশে ঘটকদের প্রধান উদ্দেশ্য থাকে ছেলে ও মেয়ে উভয়কে পরস্পরের কাছে আকর্ষণীয়, সুদর্শন ও যোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করা। এর পরই না বিয়ে! তবে অনলাইনেই এখন বিয়ে হচ্ছে। তাই হারিয়ে যাচ্ছে প্রথাগত জটিলটা।
সূত্র: ডেইলি মেইল (slight edited)