বস্তায় ভরে রাস্তায় ফেলে দিলো মাকে!/ Mom gave away sacks filled the streets!

Author Topic: বস্তায় ভরে রাস্তায় ফেলে দিলো মাকে!/ Mom gave away sacks filled the streets!  (Read 1174 times)

Offline imam.hasan

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 246
    • View Profile
পাঁচ দিন ধরে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন আশিউর্ধ্ব হাসিনা বেগম। কঙ্কালসার শরীর। জীবন বয়ে বেড়ানোই যেন দায়!

বেগনাবাদে স্বামী আবদুল করিমের সঙ্গে কেটে গেছে দীর্ঘ সময়। সেই ছায়া সরে তীব্র রোদ আজ হাসিনার মাথায়।

বৃদ্ধ বয়সের অক্ষমতা মেনে নিতে পারেনি দুই ছেলে আর পুত্রবধূরা। সমাধান বের হলো বস্তায় ভরে রাস্তায় ফেলে দেওয়ার!

শনিবার বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপ হয় হাসিনা বেগমের। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ৩০৯ নম্বর ওয়ার্ডের ১৬ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।

কর্তব্যরত চিকিৎসক কামরুজ্জামান জানান, কোমরের হাড় ভেঙ্গে গেছে তার। যে কারণে তিনি একটি পা নড়াতে পারছেন না। এখানে যতটা সম্ভব সেবা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় হাসপাতালে এই চিকিৎসা সম্ভব নয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠাতে হবে।

তিনি বলেন, এই শোকে তার স্মৃতিশক্তিও কিছুটা লোপ পেয়েছে। গ্রামের নাম বলতে পারলেও, বাড়ির ঠিকানা বা তার ছেলেরা কোথায় কাজ করেন তা জানাতে ভুলে গেছেন হাসিনা।

হাসিনার সামনে যেতেই দু’চোখ ছলছল করে ওঠে ‍তার। অস্পষ্ট স্বরে জানান, তার দুই ছেলে ছোটন মিয়া এবং লাল মিয়া। পুত্রবধূরা জানিয়েছে, ‘বসিয়ে বসিয়ে খাওয়ানো যাবে না। অন্য বাড়ি গিয়ে খাবার চেয়ে এনে খেতে হবে’। ঝামেলা এড়াতে বড় ছেলে ছোটন ও তার স্ত্রী একটি বস্তায় ভরে রাস্তায় ফেলে দিয়ে গেছে।

এ কথা জানানোর পরেই হাসিনা বলে ওঠেন, ‘আল্লাহ আমার রুহুটা নিয়ে যাও।’

তবে আশা ছাড়েননি হাসিনা! এখনও তিনি বিশ্বাস করেন ছেলেদের ভুল ভাঙবে। ছেলেরা এসে নিয়ে যাবে তাকে। কেউ দেখা করতে এলেই সরল বিশ্বাসে বলছেন, ‘আমার পোলার লগে দেখা হইলে কইও আমি হাসপাতালে, আমারে নিয়া যাইতে।’

মোবাইল ফোনে তার ছবি তোলার সময় তিনি বলেন, ‘ছবি তুলেন কেন? আমি তো কথা কইতে পারি। আমার পোলার লগে কথা কমু, অরে একটু ফোন দাও।’

ছেলের নম্বর চাইলে তিনি জানান, একটি ছোট কাগজে ছেলের মোবাইল নম্বর লেখা ছিল, সেটা হারিয়ে গেছে।

গত পাঁচ দিন আগে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাউছুল আজম ফতুল্লা শাসনগাঁও এলাকার একটি সড়ক থেকে হাসিনা বেগমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন।

গাউছুল আজম বাংলানিউজকে জানান, স্থানীয় একটি পত্রিকায় হাসিনা বেগমের একটি ফিচার ছবি প্রকাশিত হয়। ছবি দেখে কৌতুহলবশত আমি তাকে খুঁজে বের করে হাসপাতালে ভর্তি করি।

সুস্থ হওয়ার পরেও যদি তার সন্তানদের খুঁজে না পাওয়া যায় তাহলে সরকারিভাবেই পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

ব্যক্তিগতভাবেও হাসিনা বেগমকে সহযোগিতা করার সুযোগ রয়েছে।