ইংলিশ ক্রিকেটারদের ‘ভূতের ভয়’

Author Topic: ইংলিশ ক্রিকেটারদের ‘ভূতের ভয়’  (Read 662 times)

Offline maruppharm

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1227
  • Test
    • View Profile
ভূতের ভয়ে বিনিদ্র রজনী! তাও লন্ডনের কেন্দ্রস্থলের মতো জায়গায়! একবিংশ শতকে এসে এমন গল্পও কি বিশ্বাসযোগ্য! যদি বিশ্বাস করতে ইচ্ছা জাগে তো করুন, না হলে অসুবিধা নেই। কিন্তু ইংলিশ ক্রিকেটার স্টুয়ার্ট ব্রড, বেন স্টোকস ও ম্যাট প্রায়র কিছুদিন আগে যে ভুতুড়ে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন‎—এটা তাঁরা স্বীকার করেছেন নিজ মুখেই।
খবরটা ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ডেইলি মেইল-এর। পত্রিকাটি এই দুই ক্রিকেটারের বরাতে জানিয়েছে, কিছু দিন আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ চলার সময় লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বিখ্যাত পাঁচতারকা হোটেল ল্যাংহামে রাত্রিযাপনের সময় তাঁরা অদ্ভুতুড়ে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন।
‘অনুভূতিটা সত্যিই অদ্ভুত। খুবই ভয়ংকর। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ চলার সময়কার এক রাতের কথা বলছি। আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাত্ মনে হলো আমার ঘরটায় প্রচণ্ড গরম। এতই গরম যে আমার ঘুমুতে অসুবিধা হচ্ছিল। হঠাত্ বাথরুমের কল থেকে পানি পড়ার শব্দ শুরু হলো। ঘরের লাইট জ্বাললাম। কিন্তু তখন আর পানি পড়ার শব্দ নেই। লাইট বন্ধ করলে আবার আওয়াজ। ভয়ংকর অনুভূতি। বুঝতে পারছিলাম না কী করব’—মেইলকে ঠিক এভাবেই নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ব্রড।
এই ঘটনার পরপরই টিম ম্যানেজমেন্টকে নিজের ঘরটি পরিবর্তন করে দেওয়ার অনুরোধ জানান এই পেসার।
ম্যাট প্রায়র ও বেন স্টোকসও একই ধরনের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন ব্রড। একরাতে ভূতের ভয়ে নিজের ঘর ছেড়ে প্রায়রের ঘরে আশ্রয়ও নিয়েছিলেন ব্রড, ‘ওটা আরেক দিনের কথা। ওই শ্রীলঙ্কা সিরিজের সময়ই। মধ্যরাতে হঠাত্ আমার ঘুমে ভেঙে গেল। মনে হলো আমার ঘরে কেউ একজন আছে। আমি স্পষ্টই দ্বিতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি টের পাচ্ছিলাম। সঙ্গে সঙ্গে ঘরের ফোন হাতে নিয়ে আমি অনলাইন হলাম। দেখি প্রায়রও অনলাইনে। আমি তখনই রুম ছেড়ে বেরিয়ে ওর রুমে গেলাম। প্রায়রও আমাকে একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা বলল।’
ব্রড স্টোকসের কথাও জানিয়েছেন, ‘স্টোকস ছিল হোটেলের তৃতীয় তলায়। ওর অভিজ্ঞতা নাকি আরও খারাপ। বিশ্বাস করুন, এই হোটেলে এমন কিছু আছে যা ভয় পাইয়ে দেওয়ার মতোই।’
ল্যাংহাম হোটেলকে ইংল্যান্ডের অন্যতম অভিজাত হোটেল হিসেবেই ধরা হয়। ১৮৬৫ সালে প্রিন্স অব ওয়েলস এই হোটেলটি উদ্বোধন করেছিলেন। ভিক্টোরিয়ান সোসাইটির অভিজাত লোকজনসহ বহু ব্রিটিশ পণ্ডিত বুদ্ধিজীবীদের পদধূলি পড়েছে এই হোটেলে। এই হোটেলের বিভিন্ন কক্ষে বসেই শার্লক হোমসের বেশ কিছু দারুণ কাহিনি রচনা করেছিলেন স্যার আর্থার কোনান ডয়েল।
কিন্তু এই হোটেলটি বহু বছর ধরেই ‘ভৌতিক’ কর্মকাণ্ডের জন্য কুখ্যাত। অনেকেই বলেন, এই হোটেলে নাকি কমপক্ষে সাতটি ‘অতৃপ্ত আত্মা’ ঘুরে ফেরে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এক জার্মান চিকিত্সক ও তাঁর স্ত্রীর অপআত্মা। এই জার্মান চিকিত্সক নিজের মধুচন্দ্রিমায় বেড়াতে এসে এই হোটেলেই তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই হোটেলের ব্যালকনি থেকেই লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছিল এক ব্রিটিশ সৈন্য।
ল্যাংহামের ওয়েবসাইটে অবশ্য ‘৩৩৩ নম্বর কক্ষ’টিকে ‘ভুতুড়ে’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। এই ঘরটিরও একটি ‘ভয়ংকর’ কাহিনি রয়েছে বলে জানিয়েছে ডেইলি মেইল, ‘১৯৭৩ সালে এই কক্ষেই অবস্থান করছিলেন জেমস আলেকজান্ডার গর্ডন নামের বিবিসি রেডিও’র এক অনুষ্ঠান ঘোষক। তিনি এক রাতে ঘুম ভেঙে দেখতে পান তাঁর ঘরে অদ্ভুত আলোর বর্ণচ্ছটা। সেই আলো একটি মনুষ্য অবয়বে রূপ নিতে নিতেই তিনি ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।’ সেই মনুষ্য অবয়বটির শরীরে নাকি ছিল ভিক্টোরিয়ান যুগের রাতের পোশাক।
ইংলিশ ক্রিকেটারদের ভুতুড়ে অভিজ্ঞতার ব্যাপারে ল্যাংহাম কর্তৃপক্ষ অবশ্য কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে টেস্ট ক্রিকেটারদের ভুতুড়ে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হওয়ার ব্যাপারটি কিন্তু নতুন কিছু নয়। এই ইংল্যান্ডেই ২০০৫ সালে এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার শেন ওয়াটসন ও ব্রেট লি। তাঁর অবশ্য সে সময় অবস্থান করছিলেন ডারহামের চেস্টার লি স্ট্রিটের লুমলি ক্যাসল হোটেলে।
লুমলি ক্যাসলও ইংল্যান্ডের অন্যতম ভুতুড়ে হোটেল হিসেবে কুখ্যাত।
Md Al Faruk
Assistant Professor, Pharmacy