খুশকি হলে মাথা চুলকায়, সাদা সাদা গুঁড়া দেখা যায় চুলে। চুল ময়লা ও তেলতেলে হয়ে যায়। সহজে এ থেকে পরিত্রাণও মেলে না। কিন্তু খুশকি আসলে কী, কেন হয় আর কীভাবেই বা এটি সারে, তা নিয়ে অনেকের আছে নানা ভুল ধারণা।
খুশকির কারণ অপরিচ্ছন্নতা?
চুল অপরিচ্ছন্ন থাকলে বা মাথার ত্বক বেশি শুষ্ক হয়ে গেলে খুশকি হয়—অনেকেই এ ধারণা পোষণ করেন। আসল কথা হলো, খুশকির মূল কারণ একধরনের ছত্রাক সংক্রমণ। এর নাম মেলাসেজিয়া। শুষ্ক নয়, বরং তৈলাক্ত চুলেই এই ছত্রাক বেশি জন্মায়। তারপর ত্বকের মৃত কোষ, খুশকি, তেল—সব মিলিয়ে চুলের গোড়ায় জমে গিয়ে ছিদ্রগুলো বন্ধ করে দেয় এবং অবস্থার আরও অবনতি ঘটে।
মানসিক চাপ ও খাবার
মানসিক চাপ বা টেনশনে খুশকি বাড়ে না। কোনো ধরনের খাদ্যাভ্যাসও এর জন্য দায়ী নয়। তবে দীর্ঘমেয়াদি রোগ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া বা অপুষ্টি বা ভগ্নস্বাস্থ্য খুশকির তীব্রতা বাড়াতে পারে। ত্বকের কিছু সমস্যা যেমন সেবোরিক ডার্মাটাইটিস, একজিমা ও সোরিয়াসিস খুশকির ঝুঁকি বাড়ায়।
খুশকি ছোঁয়াচে?
খুশকি ছত্রাক সংক্রমণ হলেও আদতে ছোঁয়াচে নয়। কেননা চুলে বা ত্বকে যে সাদা জিনিসগুলো দেখা যায় সেগুলো মৃত কোষ, সরাসরি ছত্রাক নয়। আর কারও পাশে বসলে বা অন্য কারও জিনিস ব্যবহার করলেই যে তারও খুশকি হবে, এমন কোনো কথা নেই।
বারবার চুল আঁচড়ানো ও ধোয়া
চিরুনি দিয়ে দিনে বেশ কয়েকবার চুল আঁচড়ালে মাথার ত্বকে রক্তসঞ্চালন বাড়ে, এতে ময়লা মৃত কোষগুলো সহজে আলগা হয়ে আসে ও ঝরে পড়ে। তাই চুল আঁচড়ানো বা মাথার ত্বক ম্যাসাজ করা ভালো। তাই বলে সারা দিন ধরে চুল আঁচড়াতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। কেননা খুশকির মূল চিকিৎসা এটি নয়। আবার চুল বারবার ধুলে বা শ্যাম্পু করলে খুশকি চলে যাবে, তা-ও ঠিক নয়। চুল ধুলে মৃত কোষ বা তেল ঝরে পড়বে। তবে ছত্রাক সংক্রমণ কমবে না। এ জন্য খুশকিরোধক শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে।
খুশকির মৌসুম আছে?
সব মৌসুমেই খুশকি হতে পারে, তবে চরম আবহাওয়ায় এর প্রকোপ বাড়ে। তাই খুব শীত বা খুব গরম পড়লে এই প্রবণতা বাড়তে পারে। আবার বর্ষাকালে আবহাওয়া বেশি আর্দ্র হয়ে গেলেও ত্বকের তৈলাক্ততা বাড়ে ও খুশকি বাড়ে। তাই কোনো মৌসুমেই আপনি নিরাপদ নন।
খুশকি থেকে পরিত্রাণ নেই?
মেডিকেটেড শ্যাম্পু ব্যবহার করে ও চুলের যত্নআত্তি খুশকিকে নিয়ন্ত্রণ করবে বটে, তবে একেবারে নির্মূল করবে না।
সূত্র: হেয়ারকেয়ার