বদলে যাবে জীবন: আইবিএমের পাঁচ ভবিষ্যদ্বাণী
এমন কোনো ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছেন যেখানে রাস্তায় কোনো জ্যাম থাকবে না, কোন রোগ হওয়ার আগেই তা জানা যাবে? আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে মানুষের জীবনধারা পাল্টে দিতে পারে এমন পাঁচটি পূর্বাভাস দিয়েছে মার্কিন প্রযুক্তি-প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিনস বা আইবিএম। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট সিনেট এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে।
মানুষের জীবনযাত্রাকে পরিবর্তন করে দিতে পারে এমন পাঁচটি ধারণার কথা মার্কিন টিভি নেটওয়ার্ক সিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে জানিয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিনসের গবেষক বার্নি মেয়ারসন। আগামী পাঁচ বছরে কোন ধারণাগুলো মানুষের জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে তা নিয়ে আইবিএম প্রতি বছর ‘ফাইভ ইন ফাইভ’ নামে একটি তালিকা প্রকাশ করে। এ বছরে আইবিএমের থিম হচ্ছে ‘আগামীতে সবকিছু শিখবে’।
আইবিএমের বার্ষিক পাঁচ ভবিষ্যদ্বাণী সম্পর্কে জানিয়েছেন বার্নি মেয়ারসন জানিয়েছেন, আগামী পাঁচ বছরে যে ধারণাগুলো মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আনতে পারে তার মধ্যে রয়েছে উন্নত কেনাকাটার সুবিধা, ডিএনএ বিশ্লেষণ করে উন্নত চিকিত্সা, ডিজিটাল অভিভাবকের উত্থান, উন্নত শ্রেণীকক্ষ ও ট্রাফিক জ্যামহীন শহর-ব্যবস্থা।
মেয়ারসন জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে মানুষ কোনো পণ্য কেনাকাটা কথা ভাবতে শুরু করলে সে সম্পর্কে আগেভাগেই টের পাবেন ক্রেতারা। ফলে অনলাইন দোকান চলে আসবে মানুষের পকেটে। পণ্য কিনতে আসার আগেই ক্রেতার জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য গুছিয়ে রাখতে পারবেন বিক্রেতা। ক্রেতার মনোভাব শিখে বা জেনে নিতে পারবে ডিজিটাল স্টোরগুলো। দোকানের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে দোকানের পণ্যের তালিকা চলে আসবে ব্যক্তির স্মার্টফোনে। সে অনুযায়ী চলার পথেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন তিনি।
আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই মানুষ উন্নত চিকিত্সাসেবা পাবে। বর্তমানে রোগ নির্ণয়ে ডিএনএ বিশ্লেষণ পদ্ধতি খুব কম ক্ষেত্রে ব্যবহূত হয়। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই ডিএনএ বিশ্লেষণ করে রোগ নির্ণয় ও চিকিত্সা পদ্ধতির ব্যাপক পরিবর্তন আসতে পারে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে চিকিত্সকেরা এক দিনেই ব্যক্তির ডিএনএ পরীক্ষা করে সে সমস্যার সমাধান করে দিতে পারবেন।
পাঠদানের ক্ষেত্রেও ব্যাপক পরিবর্তন আসবে আগামী পাঁচ বছরে। শিক্ষার্থীর যাবতীয় তথ্য বিশ্লেষণ করে তার উপযোগী পাঠ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার চলে আসবে শিক্ষকদের কাছে। শ্রেণীকক্ষে কোনো শিক্ষার্থীর নির্দিষ্ট কোনো জায়গায় সমস্যা হলে তা প্রথমদিনেই শিক্ষক বুঝতে পারবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী তাকে সাহায্য করতে পারবেন।
আগামী পাঁচ বছরে মানুষকে ভারচুয়াল জগতে নিরাপত্তা দিতে তৈরি হতে পারে এমন কোনো প্ল্যাটফর্ম যা অভিভাবক হিসেবে কাজ করবে। আবার অনলাইন ব্যবহারকারীর প্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট পরিচালনার জন্যও এই অভিভাবক কাজ করতে সক্ষম হবে। তথ্য গোপন রাখা এবং ব্যক্তিগত তথ্য কার কাছে যাচ্ছে, কীভাবে ব্যবহার হচ্ছে সে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে এই ভারচুয়াল অভিভাবক।
আগামী পাঁচ বছরে পরিবর্তন আসতে পারে শহর-ব্যবস্থায়। রাস্তায় জ্যাম থাকবে না, শহর হবে স্মার্ট। আইবিএমের গবেষক মেয়ারসনের মতে, আগামীতে স্মার্টফোন, সামাজিক যোগাযোগের সাইট ও অন্যান্য অনলাইন মিডিয়া ব্যবহার বাড়বে। মানুষ সরাসরি শহরের নেতৃস্থানীয় মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে এবং তাদেরকে শহরের সমস্যা জানাতে এবং সমাধানে উদ্যোগী হতে বলবে।
http://www.prothom-alojobs.com/index.php?NoParameter&Theme=article_zone_new&Script=articleviewdetails_new&ArticleID=167