পুঁজিবাদীদের নতুন সমীকরনের বিষ ফোড়ঁন ‘মুক্তবাজার অর্থনীতি’
দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সামনে এগিয়ে চলা দিকে দিন দুঃস্বাদ্য হয়ে-ই চলেছে। তাদের জীবন ভাজের প্রতি পদে পদে মৃত্যুর ফাঁদ। ‘ব্যক্তি’ কিম্বা ‘রাষ্ট্র’ উভয় ক্ষেত্রেই কথাটি ‘ধ্রব; সত্য। আধুনিক সমাজে স-চতুর পুজিঁবাদীরা অথনৈতিক মুক্তির কথা বলে অযথা ‘মুক্তবাজার অর্থনীতির’ ধোঁয়া ছড়াচ্ছে-অনেকটাই চাঁদে যাওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে-ডোঙ্গা নৌকাকে সম্বল করে। দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে নিয়ে পুজিঁবাদী চিন্তাবিদদের এমন নতুন সমীকরনের ফলে দরিদ্ররা আরও অসহায় হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে রাস্তায় নামছে। লুটেরা পুজিবাদী এবং তাদের তাবেদার দালাল-চেঁটিয়ারা স্থীর নিঃস্বাস নিয়ে সুখের হাঁসি হাসছে- আজীবন আধিপত্য টিকিয়ে রাখার আনন্দে। দরিদ্র দেশ-গুলোর শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত নীতি আদর্শহীন ও ক্ষমতা লিপ্সু সরকাররাও এতে কম যাচ্চে না। এই রুপ অনৈতিক প্রতিযোগিতার ফলে রাজনীতিতে খুব দ্রুতই নেমে আসছে তথাকথিত ‘কালো বিড়ালের’ থাবা।
ফলে যুগ যুগ ঐতিহ্যের মেধাবী জীবন দর্শন ‘রাজনীতি’ সমাজনীতি, অর্থনীতি আস্তে আস্তে দখলে চলে যাচ্ছে অশিক্ষিত, ভন্ড, দুর্বৃত্ত, দলকানাদের হাতে। নীতি-আদর্শ বর্জিত ‘রাজনীতি’ পেশিশক্তি ও অর্থশক্তিকে ভর করে মানবতাকে ছুড়ে ফেলছে ডাষ্টবিনের নোংরা ড্যামে। অনেকটা লাভের গুড় পিপিলিকায় খাওয়ার মত। অথচ রাজনীতির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে ‘politic is the public service for all kinds of national Interest,.
আমাদের দেশের অনেক বুদ্ধিজীবিরাই মনে করেন ‘মুক্তবাজার অর্থনীতির ফলে আমরা দরিদ্ররা আমাদের উৎপাদিত সস্তা পন্য গুলোকে বিশ্ববাজারে অতি সহজেই রফতানী করতে পারছি। মেনে নেওয়া যায় একথার সততা আছে। কিন্তু প্রশ্ন থাকছে উৎপাদিত পণ্যের মালিক দরিদ্র কৃষক কি পাচ্ছে?
ধরা যাক আমাদের দেশে তৈরী পোষাক শিল্পের কথা। বাংলাদেশে একটি পোষাক তৈরী করতে সর্বসাকুল্যে খরচ পড়ে মাত্র ১.৫ ডলারের মত। বিদেশে এই পোষাকটি কমপক্ষে ২০ ডলার বিক্রি হলেও তৈরী কারক দরিদ্র শ্রমিক তার ন্যায্য পাওয়ানা থেকে ক্রমাগত বঞ্চিত হয়েই চলেছে মালিকদের ছলচাতুরীর কারণে। অথচ দরিদ্র-অসহায় এই সকল শ্রমিকের তৈরী রক্তমিশ্রিত পোষাক বিক্রি করে লাভ পাচ্ছে সেই পুজিঁবাদীরা ও তাদের দোসর স্বদেশী চেটিয়া পুজিবাদীরা (মালিকরা)।
পরিসংখ্যানে দেখা গিয়াছে বাংলাদেশের প্রায় ৯০ লাখ লোক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রম বিক্রি করছে। এই সকল শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করলেও নীতি-আদর্শহীন সরকার কোন সুনিদিষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না ববং বৈদেশিক ‘রেমিটেন্স ভোগ করে গাল-গলায় নহর তুলছে। সরকার শ্রমিকদের উপার্জিত অর্থের উপর বিরাট অংকের কমিশন খাচ্ছে অতীব লজ্জাজনক ভাবেই।
স্বাধীনতাত্তর কাল থেকেই পুজিঁবাদী ও চেটিয়া পুজিবাদীদের সমর্থনপুষ্ট শাসন জাতীয় উন্নয়নের কথা বলে সরকারী তহবিল থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেই চলেছে এবং একশ্রেণীর ফ্যাসীবাদী শ্রেণী সৃষ্টি করছে। যারা সরকারকে অকুন্ঠ সমর্থন দান করছে। সরকারের এই ভ্রান্ত নীতির ফলাফলে দেখা যাচ্ছে; নিত্য-নতুন ধনিক শ্রেনীর উত্থান যা ইতিহাসকেও হার মানাচ্ছে।
সরকারী সমর্থনে ধারাবাহিক লুটপাটের এই স্বরুবরে ক্রমাগত রাজার ছেলে রাজা, মন্ত্রীর ছেলে মন্ত্রী, শিল্পপতির ছেলে শিল্পপতি বনেই যাচ্ছে। সাম্যবাদীর অনেকে মনে করেন ‘অবাধ বানিজ্য নীতির’ আরেক নাম ভাগ-বাটোয়ারার পয়ঁতারা। এই নীতিতে শিল্পকারখানা গুলোতে চলছে মালিকানার নব-উলংগ নৃত্য এবং শ্রমিক নিপীড়নের; ঐতিহাসিক স্বরনীয় উদাহারন।
আধুনিক কালের আকাশ সংস্কৃতির প্রভাব বা ডিজিটাল দেশ গড়ার স্বপ্ন ‘কাকের ময়ুর সাজ সমতুল্য’। এই সকল স্লোগানের পিছনে রয়েছে আধিপত্যকামীদের সুচারু ‘রাজনৈতিক খেলা’। দরিদ্র মানুষদের হাজার বছরের কৃষ্টি-কালচার, সমাজ-সংস্কৃতি, ধমীয়-আচার, রীতি-নীতি ধ্বংশ ও নুন্যতম্য আর্থিক সমর্থকে পুঙ্গ করে নব উদ্দ্যামে পুজিবাদীবাদ প্রতিষ্ঠা করা।
তবে উপরোক্ত সকলই র্স্বাথক ও সফল সম্ভব!!! যদি একটি ‘সচেতন জাতি’ সৃষ্টি করা সম্ভব হয়। আমরা জন্মগত ভাবে সুবিধা ভোগী শ্রেনীর বিরুদ্ধি। বঞ্চনার জীবনের শেষ ধাপটি পযর্ন্তও আমরা সমতা চাই? জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মৌলিক অধিকার চাই। বাচার মত বাঁতে চাই। পুজিবাদীদের বিনাষ চাই।।।