মঙ্গল গ্রহের উদ্দেশে যাত্রা করার পর ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের দুটি মহাকাশযান এখন পর্যন্ত সুষ্ঠুভাবেই এগিয়ে চলেছে। অভিযান পরিচালনাকারী দুই কর্তৃপক্ষ এ খবর জানিয়েছে। নভোযান দুটি আগামী সেপ্টেম্বরে মঙ্গলের কক্ষপথে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারতের মার্স অরবিটার মিশন (এমওএম) ইতিমধ্যে মঙ্গল অভিমুখে যাত্রার ৮০ শতাংশেরও বেশি সম্পন্ন করেছে। নভোযানটি এখন পর্যন্ত সমস্যামুক্ত রয়েছে। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (আইএসআরও) ফেসবুক পেজে গত ২১ জুলাই এ তথ্য প্রকাশিত হয়। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নভোযানটি ‘লাল গ্রহের’ কক্ষপথে প্রবেশ করবে।
দ্বিতীয় নভোযানটি মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (নাসা) নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মার্স অ্যাটমোস্ফিয়ার অ্যান্ড ভোলাটাইল অ্যাভল্যুশন (ম্যাভেন) নামের ওই অভিযানও এখন পর্যন্ত ত্রুটিমুক্ত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। নাসার নভোযানটি এমওএমের এক সপ্তাহ পরে (২১ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলের উদ্দেশে চূড়ান্ত যাত্রা শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশ গবেষক ব্রুস জ্যাকস্কি বলেন, তাঁরা এখন মঙ্গলের কক্ষপথে ম্যাভেনের প্রবেশের মুহূর্তটি পর্যবেক্ষণের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
মঙ্গল গ্রহ সম্পর্কে অনুসন্ধানের লক্ষ্যে এমওএম এবং নাসার ম্যাভেন গত নভেম্বরে যাত্রা শুরু করেছিল। ম্যাভেনের এই অভিযানের মধ্য
দিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মঙ্গলের ওপরের দিকের বায়ুমণ্ডলের ইতিহাস সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য জানার আশা করছেন। নভোযান দুটির নিয়ন্ত্রণকারীরা গত দুই মাসে ‘প্রায়োগিক প্রস্তুতিমূলক’ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন। এতে করে তাঁরা বিশেষ মুহূর্তে যেকোনো জরুরি পদক্ষেপ নিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন।
নাসার ম্যাভেন অভিযানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এটি কক্ষপথে প্রবেশের আগে সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না, যাচাই করে দেখার জন্য ছয় থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত মহড়া দিতে পারবে। ১৯৯৮ সালে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল পর্যবেক্ষণের জন্য পাঠানো মার্স ক্লাইমেট অরবিটার অভিযানের ‘অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে’ ম্যাভেনকে এভাবে তৈরি করা হয়েছে। মার্স ক্লাইমেট অরবিটারটি লাল গ্রহের বায়ুমণ্ডলে গিয়ে গতিপথ নির্ধারণে ত্রুটি সারাতে ব্যর্থ হয়ে সেখানেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। নাসার গবেষকেরা এবার এ ধরনের ব্যর্থতা এড়াতে চান।
এদিকে, ম্যাভেনের যন্ত্রপাতি মঙ্গলের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা জানিয়েছেন। একটি যন্ত্র ওই গ্রহে সূর্যের ভূমিকা সম্পর্কে কিছু তথ্য ইতিমধ্যে জোগাড় করে ফেলেছে। আর ভারতীয় গবেষকেরাও এমওএমের অগ্রগতির যাবতীয় খোঁজ-খবর নিচ্ছেন নিয়মিত। তাঁরা গত বৃহস্পতিবার এমওএমের অ্যান্টেনাটি পরীক্ষা করে দেখেছেন, যেটি পৃথিবীর সঙ্গে নভোযানটির প্রাথমিক যোগাযোগ বজায় রাখতে সহায়ক হবে। আইএসআরওর কর্মকর্তারা ফেসবুকে গত রোববার লিখেছেন, মঙ্গলের কক্ষপথে প্রবেশের অভিযাত্রায় আর মাত্র ১৪ শতাংশ পথ বাকি আছে এমওএমের। এটির অ্যান্টেনা ঠিকভাবে কাজ করছে। ডিসকভারি নিউজ।