রাস্তার ধুলোবালু বা প্রখর রোদ থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজন রোদচশমা (সানগ্লাস)। তবে হালফ্যাশনে চশমার ব্যবহারের ধরনও পাল্টেছে। এখন বড় ফ্রেমের রোদচশমার ব্যবহার বেশি দেখা যায়। তরুণীদের কাছে রঙিন ফ্রেমের রোদচশমার আকর্ষণ বেশি।
গতকাল বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডির একটি চশমার দোকানে কথা হয় শিক্ষার্থী ফাইজা আক্তারের সঙ্গে। তিনি কিনেছেন দুই রঙের কাচের বড় ফ্রেমের চশমা। বললেন, ‘ফ্যাশন তো বটেই, চোখের সুরক্ষায় রোদচশমা ব্যবহার করি।’ দোকানের বিক্রেতা ফারুক হোসেন বলেন, দুই রং মিশ্রণের ফ্রেমের রোদচশমার বিক্রি বেশি, যার দাম ৫৫০ থেকে দুই হাজার টাকা। এ ছাড়া বাজারে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চশমা রয়েছে।
বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে: রে-ব্যান, লুসবাটন, শ্যানেল, গুচ্চি, ফাস্টট্র্যাক, কেরারা, পুলিশ, ডিএনজি, ওকলে, প্যারাডা, রিবন, সাফারি বা ক্রিশ্চিয়ান ডিওর। এসব ব্র্যান্ডের চশমার দাম পড়বে এক হাজার থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে।
রাজধানীতে ফুটপাত থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিপণিবিতানে এসব রোদচশমা পাওয়া যাবে। তবে ব্র্যান্ডের ভালো রোদচশমা পেতে খ্যাতনামা বিপণিবিতানে যাওয়াই উত্তম।
রোদচশমা ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো বাধাধরা নিয়ম নেই। ব্যবহারিক দিক থেকে সেটি সুবিধাজনক এবং মুখের সঙ্গে মানানসই, সেটি কেনা যেতে পারে। বাজারের পুরুষ ও নারীদের জন্য আলাদা রকমের রোদচশমা রয়েছে। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে পছন্দমতো রোদচশমা কিনতে পারেন আগ্রহীরা।
বারডেমের সহযোগী অধ্যাপক পূরবী দেবনাথ প্রথম আলোকে জানান, চোখের চারপাশের ত্বক রোদে পুড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে রোদচশমা ব্যবহার জরুরি৷ প্রখর রোদে চশমা আরাম দেয় চোখে৷ তবে সব রোদচশমা আরাম না দিয়ে ক্ষতি করতে পারে৷ যেমন বাকা গ্লাস বা ফ্রেম শক্ত হলে চোখে ব্যথা হতে পারে। বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে৷
ভালো রোদচশমার বৈশিষ্ট্য
ভালো রোদচশমার লেন্স অতিবেগুনি রশ্মির ৯৯ থেকে ১০০ শতাংশ আটকে দিতে পারে। এ ছাড়া দৃশ্যমান রোদের ৭৫ থেকে ৯০ শতাংশ থেকে চোখকে আড়াল করে রাখে|
এই রোদচশমা রং ও আলো শোষণে সঠিকভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং বিকৃতি ও অসম্পূর্ণতা থেকে মুক্ত। আলো ও রং সঠিকভাবে বুঝতে হলে ধূসর সানগ্লাস ভালো|
সূর্যালোকে চোখের যত ক্ষতি
চোখের সাদা অংশ
পিংগুকুলা নামের সমস্যার কারণে চোখের সাদা অংশের ওপর স্বচ্ছ ও সরু আবরণ তৈরি হতে পারে। এতে কর্নিয়ার আশপাশে হলদে দাগ পড়তে পারে।
আইরিস
প্রখর সূর্যালোকের প্রভাবে নীল চোখের আইরিসে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি।
চোখের চারপাশের ত্বক
অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে চোখের আশপাশের ত্বকে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কর্নিয়া
ধুলোবালু পড়ে চোখের কর্নিয়ায় সংক্রমণ
হতে পারে। এতে কেউ কেউ ব্যথা থেকে
শুরু করে সাময়িক অন্ধত্বের মতো গুরুতর সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন।
লেন্স
আইরিসের পেছনে স্ফটিক-সদৃশ লেন্সে ছানি পড়ে যেতে পারে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ছানি অপসারণ তেমন কঠিন নয় আজকাল। তার পরও রোদচশমা ব্যবহার করে ছানি পড়ার ঝুঁকি এড়ানোর সুযোগ রয়েছে।
রেটিনা
চোখের এই অংশটি অত্যন্ত সংবেদনশীল। অতিবেগুনি রশ্মি এবং রেটিনা নষ্ট হয়ে বয়সজনিত অন্ধত্বের সম্পর্ক রয়েছে।
সূত্র: আমেরিকান একাডেমি অব অফথালমোলজি/হাফিংটন পোস্|