কুয়োর পানি থেকে জানা যেতে পারে আগাম ভূমিকম্প

Author Topic: কুয়োর পানি থেকে জানা যেতে পারে আগাম ভূমিকম্প  (Read 1068 times)

Offline mahzuba

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 235
  • Test
    • View Profile
সম্প্রতি আইসল্যান্ডের একটি কুয়োতে সোডিয়াম এবং হাইড্রোজেনের পরিমান হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় ভুতাত্বিকরা বুঝতে পারেন সে অঞ্চলের পাহাড়ের ওপর পড়ছে চাপ। এর পর পরই দেখা যায় ভূমিকম্প।

এ ব্যাপারে গবেষণা প্রকাশিত হয় Nature Geoscience জার্নালে। শত শত বছর ধরে গবেষণা চলার পরেও ভূমিকম্প আগে থেকে বুঝতে পারার উপায় বেশ কম। আর জদিও এই গবেষনা থেকে ধরে নেওয়া হচ্ছে যে ভূগর্ভস্থ পানির অবস্থা থেকে ভুমিকম্পের ব্যাপারে আগে থেকে জানা যেতে পারে, এ ব্যাপারে আরও অনেক পরীক্ষা নিরিক্ষার পরেই মানুষের জীবন বাঁচাতে তা সক্ষম হবে। গবেষণার সাথে জড়িত স্টকহম ইউনিভার্সিটির আলাসডেয়ার স্কেল্টন বলেন, তারা এখনি কোনো মিথ্যে আশা দিতে চান না। তবে ভূগর্ভস্থ পানির রাসায়নিক বিশ্লেষণ আগে থেকে ভুমিকম্পের ব্যাপারে ধারনা দিতে পারে।

ভূমিকম্প শুরু হবার আগে পর্যবেক্ষণ করতে হবে সে অঞ্চলের কুয়ো। ১৯৯৫ সালে কোবে এবং ১৯৭৮ সালে ইজু-ওশিমা এলাকায় ভূমিকম্প হবার আগে জাপানের গবেষকেরা ভূগর্ভস্থ পানিতে রাসায়নিক পরিবর্তন দেখতে পান। ১৯৭৬ সালে চীনের তাংশান ভূমিকম্পের আগেও এই ঘটনা দেখা যায়। এই পরিবর্তনকে বিশ্লেষণ করে ভূমিকম্পের আগাম লক্ষন হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

২০০৮ সাল থেকে শুরু করে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে আইসল্যান্ডের হিউসাভিক শহরের বাইরে একটি কুয়োর পানি পরীক্ষা করেন স্কেল্টন। ২০১২ সালের ২১ অক্টোবর এবং ২০১৩ সালের ২ এপ্রিল ভূমিকম্প হবার আগে চার থেকে ছয় সপ্তাহ আগে থেকে এর পানিতে কিছু মৌলের পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে যেতে দেখা যায়।সোডীয়াম এবং হাইড্রোজেনের পরিমাণ ভূমিকম্পের আগে উল্লেখযোগ্য পরিমানে বেড়ে যায় এবং ভূমিকম্পের পর আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়।এ ছাড়াও ২০০২ সালের এক ভূমিকম্পের আগে অন্য একটি কুয়োর পানিতে বেড়ে যেতে দেখা যায় বিভিন্ন ধাতব মৌলের পরিমাণ।

ঠিক কি কারনে এভাবে ভূমিকম্পের আগে ভূগর্ভস্থ পানির রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না এখনই। ধারনা করা হচ্ছে ভূমিকম্পের আগে ভূগর্ভে ফাটল প্রসারিত হতে থাকে এবং এর মাঝে পানি প্রবেশ করে খনিজ পদার্থ দ্রবীভূত করে।

তবে আইসল্যান্ড যেহেতু মোটামুটি বিশাল এক লাভার কুণ্ডলীর ওপর বসে আছে, তাই এসব পরিবর্তনের পেছনেও সেই লাভারই হাত থাকতে পারে। ভূগর্ভে লাভা চলাচলের কারণে হতে পারে এসব পরিবর্তন এবং ভূমিকম্প।

তবে ভূমিকম্পের আগাম সতর্কতা দেবার জন্য এই গবেষণা ব্যবহার করা যাবে কিনা, তার জন্য প্রয়োজন আরও লম্বা সময় ধরে গবেষণা।