নভোচারী হওয়ার ক্ষেত্রে বয়স যে কোনো বাধাই নয়, নাসার নভোচারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার কিশোরী অ্যালিসার প্রশিক্ষণ নেওয়ার বিষয়টা অন্তত সেটাই প্রমাণ করে। ২০৩৩-৩৪ সালনাগাদ মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার জন্য নভোচারী প্রশিক্ষণ শুরু করেছে ১৩ বছর বয়সী অ্যালিসা কারসন।
নাসার মুখপাত্র পল ফোরম্যান সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বিবিসিকে জানিয়েছেন, অ্যালিসার মতো মানুষকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখে নাসা। মঙ্গল মিশনে যাওয়ার জন্য একদিন যে নভোচারীর প্রয়োজন হবে অ্যালিসা এখন ঠিক সেই বয়সে রয়েছে। সে এখন একজন নভোচারী হওয়ার পথে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে।
অ্যালিসার বাবা ব্রেটও মেয়ের আগ্রহের বিষয়টি সমর্থন দিয়ে তাকে অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন। ২০৩৩ সালে তাঁর মেয়ে মঙ্গল গ্রহে গিয়ে নিজের স্বপ্নপূরণ করতে পারবে বলেও আশাবাদী তিনি। মেয়ের সঙ্গে মহাকাশ মিশনের ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা করেছেন বলেই বিবিসিকে জানিয়েছেন ব্রেট। তিনি বলেন, ‘ঝুঁকি নিয়েই যদি স্বপ্নপূরণ করার একমাত্র পথ হয়, তবে সেই ঝুঁকি নিতে অ্যালিসা প্রস্তুত।’
মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যে নানা প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে অ্যালিসা। নাসা স্পেস ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। শিখেছে স্প্যানিশ, ফরাসি আর চীনা ভাষা।
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যালিসা বলেছে, ‘আমি অন্য কিছু হওয়ার কথাও ভেবেছি। কিন্তু নভোচারী হওয়ার লক্ষ্য আমার সে তালিকার শীর্ষে ছিল। মঙ্গলে যাওয়ার মিশনে আমার সামনে বাধা হয়ে আসতে পারে এমন কোনো প্রতিবন্ধকতাই আমি রাখিনি।’
মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার লক্ষ্য প্রসঙ্গে অ্যালিসা বলে, ‘আমি মঙ্গলে যেতে চাই। কারণ এটি এমন একটি স্থান, যেখানে কেউই আগে কখনো যায়নি। আমিই প্রথম সেই পদক্ষেপটি নিতে চাই।’
১৩ বছর বয়সী অ্যালিসার মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার এই প্রত্যয় ইতিমধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহাকাশ সংস্থার নজর কেড়েছে। ইতিমধ্যে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বেসরকারি মহাকাশ সংস্থা মার্স-ওয়ান তাকে মঙ্গলে যাওয়ার বিষয়ে প্রেজেন্টেশন দিতেও বলেছে।
প্রসঙ্গত, মার্স-ওয়ান মঙ্গল গ্রহে ২০২৫ সালনাগাদ মানুষ পাঠাতে চায়। তবে তারা শুধু সেখানে মানুষকে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। মঙ্গল থেকে মানুষ ফিরিয়ে আনবে না তারা।