মাত্র ১০০ বছর পর যদি উত্তর দিকটা দক্ষিণ আর দক্ষিণ দিকটা উত্তর দিক বলে গণ্য করতে হয়, তবে কেমন হবে? ব্যাপারটা যেমনই হোক না কেন, সেটা ঘটতে যাচ্ছে। এর আগে অবশ্য বিজ্ঞানীরা মনে করতেন উত্তর-দক্ষিণ পরিবর্তনটা আসতে কয়েক হাজার বছর লেগে যাবে। এখন তাঁরা বলছেন, মাত্র ১০০ বছরের মধ্যেই পরিবর্তনটা আসতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি ও ফ্রান্সের বিজ্ঞানীরা সাম্প্রতিক গবেষণা শেষে জানান, পৃথিবী নামক এই গ্রহটির জন্মের পর বহুবার সেটির চৌম্বকক্ষেত্রের দিক পরিবর্তন ঘটেছে। সর্বশেষ পরিবর্তনটি ঘটে সাত লাখ ৮৬ হাজার বছর আগে। আর সেটি ঘটেছিল ১০০ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে। চৌম্বকক্ষেত্রের দিক পরিবর্তনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে তাঁরা জানান, দ্বিমেরুবিশিষ্ট এই চৌম্বকক্ষেত্রের তীব্রতা লাখো বছর ধরে একই রকম থাকে। কোনো এক অজানা কারণে এই তীব্রতা এক সময় কমতে থাকে এবং চৌম্বকক্ষেত্রটি দুর্বল হয়ে পড়ে। তারপর এক সময় চৌম্বকক্ষেত্রের মেরু পরিবর্তিত হয়ে যায়। সেই ঘটনাটিই আবার ঘটতে চলেছে পৃথিবীতে। তবে প্রথমে সেই প্রক্রিয়ার সময়কাল কয়েক হাজার বছর বলে ধারণা করলেও এখন বিজ্ঞানীরা মাত্র ১০০ বছরের কথা বলছেন। অর্থাৎ একজন মানুষ তাঁর জীবদ্দশায় হয়তো মেরু পরিবর্তনের ঘটনা দেখে যেতে পারবেন।
পরিবর্তনটি কয়েক হাজার বছরে ঘটবে, নাকি ১০০ বছরে ঘটবে, সেই চিন্তা তো আছেই। সেই সঙ্গে বিজ্ঞানীরা চিন্তিত চৌম্বকক্ষেত্রের দিক পরিবর্তনজনিত নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে। এ পরিবর্তন পৃথিবীর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ধসিয়ে দিতে পারে। প্রভাবিত হবে জীবজগৎও। বিজ্ঞানীদের মতে, বিদ্যমান শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্র পুরো জীবজগৎকে ক্ষতিকর সূর্যরশ্মি ও মহাজাগতিক রশ্মি থেকে সুুরক্ষা দেয়। মেরু পরিবর্তন প্রক্রিয়া চলাকালে চৌম্বকক্ষেত্র যখন দুর্বল হয়ে পড়বে, তখন আর সেই সুরক্ষা ব্যবস্থা কাজ করবে না। ফলে বেড়ে যেতে পারে ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব। ঘটতে পারে জীবের বংশগতির অনাকাঙ্ক্ষিত বিকৃতি। চৌম্বকক্ষেত্রের দিক পুরোপুরি পরিবর্তিত হওয়ার আগ পর্যন্ত চলতে থাকবে এসব ঘটনা। মেরু পরিবর্তন প্রক্রিয়া যত দীর্ঘায়িত হবে, ততটা সময় ধরে তা জীবজগতের ওপর প্রভাব ফেলতে থাকবে। সূত্র : ডেইলি মেইল।