* প্রতিটি সফর- বিশেষত হজ থেকে ফিরে এসে নিকটস্থ মসজিদে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা সুন্নত।
হজরত কা'ব বিন মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, 'রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন কোনো সফর থেকে ফিরে আসতেন তখন মসজিদে (নফল) নামাজ আদায় করতেন।'- বোখারি শরিফ
ইমাম নববী (রহ.) বলেন, "উক্ত নামাজ 'প্রত্যাবর্তনের নামাজ'- 'মসজিদের সম্মানার্থে' পঠিত নামাজ নয়।"
* হজ থেকে প্রত্যাবর্তন করে শুকরিয়াস্বরূপ গরিব-মিসকিন ও আত্মীয়স্বজনকে খাবারের দাওয়াত করা বৈধ। ইসলামী ফিকহর পরিভাষায়- সে খাবারকে 'নকিয়াহ' বলা হয়।
হজরত জাবের বিন আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, 'রাসুল (সা.) যখন মদিনায় এসেছেন, তখন একটি গরু জবাইয়ের নির্দেশ দিলেন। জবাইয়ের পর সাহাবিগণ তা থেকে ভক্ষণ করেছেন।'- বোখারি, বাবুত ত্বয়াম ইনদাল কুদুম। তবে রিয়া, অহংকার ও বিশেষ উদ্দেশ্য সামনে রেখে এমন দাওয়াতের ব্যবস্থা ইসলাম অনুমোদন করে না।- (ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া ৭/১৮৫)
* ঘরে ফিরে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা মুস্তাহাব। হাদিস শরিফে এসেছে, 'যখন তুমি ঘর থেকে বের হবে, তখন দুই রাকাত নামাজ পড়বে। সেই দুই রাকাত নামাজ তোমাকে (ঘরের) বাইরের বিপদাপদ থেকে হেফাজত করবে। আর যখন ঘরে প্রত্যাবর্তন করবে, তখনো দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে। সে নামাজ তোমাকে (ঘরের) অভ্যন্তরীণ বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করবে।'- মুসনাদে বাজ্জার
* হাজি সাহেবগণকে অভ্যর্থনা ও শুভেচ্ছা জানানো, তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, মোসাফাহা, কোলাকুলি করা ও তাঁদের দ্বারা দোয়া করানো মুস্তাহাব। কিন্তু ফুলের মালা দেওয়া, তাঁদের সম্মানার্থে স্লোগান ইত্যাদি দেওয়া সীমা লঙ্ঘনের অন্তর্ভুক্ত। এসব কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত।- আপকে মাসায়েল : ১/১৬২
* জমজমের পানি অন্য শহরে নিয়ে গিয়ে লোকদের পান করানো মুস্তাহাব। অসুস্থ রোগীদের গায়ে ব্যবহার করাও বৈধ।- মুয়াল্লিমুল হুজ্জাজ : ৩০৩
হাদিস শরিফে এসেছে : "হজরত আয়েশা (রা.) জমজমের পানি সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন এবং বলতেন, 'রাসুল (সা.) জমজমের পানি সঙ্গে নিয়ে যেতেন'।"- তিরমিজি, কিতাবুল হজ : ১১৫
* আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবকে হাদিয়া-তোহফা দেওয়া সুন্নত। কিন্তু মনের আগ্রহ ব্যতীত কেবলই প্রথা পালনের জন্য কোনো কাজ করা শরিয়তসম্মত নয়। হাজিদের হাদিয়া দেওয়া ও তাঁদের কাছ থেকে হাদিয়া গ্রহণ করা বর্তমানে প্রথায় পরিণত হয়েছে। এটা এখন কেবলই নামের জন্য বা চক্ষুলজ্জার কারণে দেওয়া হয়ে থাকে। তাই তা বর্জন করা উচিত।- আপকে মাসায়েল : ৪/১৬১