সাদা পাহাড়ের দেশে

Author Topic: সাদা পাহাড়ের দেশে  (Read 1216 times)

Offline ehsan217

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 116
  • Test
    • View Profile
সাদা পাহাড়ের দেশে
« on: November 05, 2014, 06:19:31 PM »
ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে সবে। পুরান ঢাকার গলির মোড়ের বাতিটি তখনো জ্বলছে। দোতলার বারান্দা দিয়ে উঁকি দিই গলির ও প্রান্ত দেখার জন্য। সড়কবাতির আবছায়ায় একজনকে দেখা যায় হেঁটে আসছেন। আমি তৈরি হয়ে নিই আর একটু পরে বের হতে হবে। প্রথমে যাব মহাখালী বাস টার্মিনাল, তারপর বাসে চড়ে নেত্রকোনা, দুর্গাপুর উপজেলার বিরিশিরি-সোমেশ্বরী নদী আর সাদা পাহাড়ের দেশে।

মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে পাঁচজনের একটা দল যাত্রা করি বিরিশিরির উদ্দেশে। দলের বেশির ভাগই শৌখিন আলোকচিত্রী । দীর্ঘ সাত ঘণ্টার যাত্রার পর পৌঁছে যাই বিরিশিরি। আগে থেকেই থাকার ব্যবস্থা করে রেখেছিলাম। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির গেস্ট হাউসের দুটি ঘর আমাদের জন্য। খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা একাডেিমর পাশেই লাকী হোটেলে।
বিজয়পুরের সাদা মাটির পাহাড়...

সোমেশ্বরী নদীর ওপারে বিজয়পুরের সাদা মাটির পাহাড়, অনেকেই এটিকে চীনা মাটির পাহাড় বলে থাকে। যদিও এটি পুরোপুরি সাদা মাটির পাহাড় নয়, এর রং হালকাধূসর থেকে সাদাটে আকার কোথাও আবার লালচে—নানা রঙের খেলা এ পাহাড়ে। কোথাও মসৃণ, কোথাও খসখসে। পাহাড়ের ওপর-নিচে তাকালে দেখতে পাওয়া যায় দারুণ এক প্রকৃতি। পাহাড়ের নিচে যেখান থেকে মাটি তোলা হয়েছে সেখানে পানি। এই পানির রং অনেকটা সবুজ আর সেই সবুজের ওপর নীল আকাশ আর সাদা মেঘের ওড়াওড়ি। প্রকৃতির এই দৃশ্য দেখতে হলে সোমেশ্বরী নদী পার হয়ে যেতে হবে সেখানে। রিকশা বা মোটরসাইকেল একমাত্র বাহন। আমরা তিনটি মোটরসাইকেল নিয়েছিলাম। ওই পথ দিয়ে যেতে যেতে দেখা হলো ভারতের সঙ্গে সড়কপথে যোগাযোগের জন্য সড়ক নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। দেখা হলো, আদিবাসী নারীদের কৃষিকাজ। কথা হলো, টঙ্ক আন্দোলনে জড়িত কুমুদিনী হাজংয়ের সঙ্গে। তাঁর বয়স প্রায় এক শর কাছাকাছি।
বিজয়পুর সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবি ওয়াচ টাওয়ার থেকে আঁকাবাঁকা একটা রেখায় দেখা হলো । এ নদীর পানি স্বচ্ছ। নদীতে স্থানীয় জেলেরা মাছ ধরছেন। সেখানে দাঁড়িয়ে দেখা হলো বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের পাহাড়গুলো। এখানে পাহাড় আর মেঘেরা যেন এক হয়ে মিশে গেছে। বিজিবি ওয়াচ টাওয়ার থেকে নেমে আমরা চলে এলাম রানীখং মিশন। এখান থেকেও সোমেশ্বরী এবং পাহাড় দেখা যায়।

গোপালপুর পাহাড়ে
রানীখং থেকে আমাদের মোটরসাইকেল ছুটে চলছে গোপালপুর পাহাড়ের দিকে। খোঁজ নিয়ে জানলাম এই পাহাড়ে শতবর্ষী দুজন গাড়ো বৃদ্ধ এবং বৃদ্ধা আছেন। আমরা তাঁদের দেখতে ছুটলাম। কিছুটা পথ যেতেই মোটরসাইকেল থামাতে হলো। কারণ, সেই পথে আর মোটরসাইকেল নিয়ে এগোনো যাবে না। সবাই হাঁটতে শুরু করলাম। অনেকটা পথ হাঁটার পর পেয়ে গেলাম আমাদের সেই কাঙ্ক্ষিত পাহাড়। উঠতে লাগলাম সেই পাহাড়ে। জানতে পারলাম, গাড়ো বৃদ্ধ আর বেঁচে নেই। তবে বৃদ্ধা আছেন। ১০৫ বছর বয়সী সেই নারীর নাম ফলকি মারাক। গত বছর ১০০ বছর বয়সে মারা গেছেন তাঁর ভাই।
পাহাড় থেকেই দেখলাম আমাদের ঠিক সামনে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত কাঁটাতারের বেড়া ওপারে পাহাড়ে ভারতের সীমান্তচৌকি। এবার আমাদের ফেরার পালা। পাহাড়-নদীর অপরূপ সৌন্দর্যেভরা দুর্গাপুর পেছনে ফেলে আবার ছুটলাম ঢাকার দিকে।

Offline mustafiz

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 524
  • Test
    • View Profile
Re: সাদা পাহাড়ের দেশে
« Reply #1 on: November 08, 2014, 05:43:10 PM »
Nice post.